bv cvVK GwU ‡Kvb Kv‡jvRv`y ev Zš¿g‡š¿i eB bq | GB eB‡Z Avwg ‡`Lv‡Z
‡Póv K‡iwQ wKfv‡e nvRvi nvRvi eQi c~e© ‡_‡K ïiæ n‡q Av‡Rv Avgv‡`i gv‡S wfbœ
iƒ‡c GB weÁvb I c«hyw³i ¯^Y©hy‡M wU‡K Av‡Q Kv‡jvRv`y | ejv ‡h‡Z cv‡i nvRvi
nvRvi eQi a‡i P‡j Avmv AwggvswmZ inm¨¸‡jvi Z_¨c~Y© I ‡hŠw³K SECRET REVEALED UvB‡ci GK wbtk¦v‡m c‡o
‡djevi gZ eB | G‡j‡g‡jv , LvcQvov ,m~PxcÎwenxb
‡jLv g‡b n‡Z cv‡i , wKš‘ GB eB‡qi GKgvÎ g~j w_g n‡jv Avgv‡`i eZ©gvb
weÁvb Gi DrcwË ‡Kv_v ‡_‡K wKfv‡e Avi
Avm‡j AvR‡Ki weÁvbB wK hv`ywe`¨v GB in‡m¨i mÜv‡b c«K…Z mZ¨ m¤^‡Ü Rvb‡Z c«vmw½K
Ac«vmw½K D`vniYg~jK wKQyUv ev‡R eKv ?‡m
Rb¨ m~PxcÎ wb®ú«‡qvRb|cy‡ivUv bv co‡j w_g aiv ‡`‡ebv| ZvB cov ‡k‡l Avcbvi Kv‡Q cwi®‹vi n‡q hv‡e ,
wKfv‡e myc«vPxb gvbe mf¨Zvi ïiæ ‡_‡K Av‡Rv ch©šÍ GK inm¨gq kw³ , GK kw³kvjx
¸ßwe`¨v hy‡M hy‡M bvbv iƒ‡c gvbe mf¨Zv I c…w_ex‡K wbqš¿b Ki‡Q,hv me hy‡M wQ‡jv
,eZ©gv‡b Av‡Q ,fwel¨‡Z&I Avm‡e Av‡iK iƒ‡c | MZvbyMwZK eB‡qi evB‡i GK bZyb
mvm‡cÝ Gi mÜvb ‡c‡Z PvB‡j , Avcbvi cv‡k P‡j ‡eov‡bv ¸ßwe`¨vi aviK inm¨ gvbe
,mf¨Zv ,M‡elYv-M‡elK wPb‡Z PvB‡j ‡e÷ eyK
Kv‡jvRv`y THE BLACK MAGIC –SECRET BEHIND THE SCIENCE -2018
কালোজাদু
THE BLACK MAGIC
সৈয়দ মেহবুব রহমান
ইন্দ্রনীলা পাবলিশার্স
যশোর
কালোজাদু
THE BLACK MAGIC
সৈয়দ মেহবুব
রহমান
ইন্দ্রনীলা পাবলিশার্স
যশোর
প্রথম প্রকাশ সেপ্টেম্বর ২০১৮
কপিরাইট ও সর্বসত্ত্ব লেখক কতৃক সংরক্ষিত , এই বইয়ের কোন অংশ হুবহু নকল করা বা লেখকের অনুমতি ব্যাতীত
অন্য কোন ক্ষেত্রে ব্যবহার কপিরাইট আইন অনুযায়ী দন্ডনীয় অপরাধ ।
মূল্য
– 300/- UvKv gvÎ
ISBN- 978-984-34-5060-9
(2)
কবিতা-
জনম-জন্মান্তর
শুনতে কি পাও মহাকালের কান্না
শুনতে কি পাও মৃত্তিকাগর্ভে হারানো সুদুরের কান্না
ইচ্ছা হয় ঘুরে আসি সেই সূদুরের দিনগুলোতে
যেখাতে হয়তো আমি ছিলাম এক বীরযোদ্ধার বেশে
নয়তো কোন অপ্সরীর প্রিয়তম হয়ে
কোন এক স্নিগ্ধ গোধুলীবেলায়
বসেছিলাম চোখে চোখ রেখে
এই পদ্মা-মেঘনা , গঙ্গা-যমুনা-স্বরসতী
, ঝিলম বা ইরাবতীর তটে
সৈয়দ মেহবুব রহমান
12-12-2017 Bs
h‡kvi
(3)
উ ৎ স র্গ
মা-বাবা
ও
ভাইবোন (সুইট,জুয়েল,নাইস,শাওন,রাসেল,শোভন)
, নানা-নানী , ছোট মামv ¯^cb, রাকিব , রাফসান , সাদিয়া
‘‘বিশেষভাবে কৃতজ্ঞতা স্ত্রী শান্তা ও কন্যা নীলমের প্রতি বিরক্তিকর লেখা
স্বত্তেও যারা ছিল আমার পান্ডুলিপি রচনার নিঃসঙ্গ সময়ের একমাত্র শ্রোতা”।
উদ্ধৃতি-
‘‘একটা জিনিস খেয়াল করলাম পৃথিবীর সকল লেখক রাত জেগে, শত কর্মব্যস্ততার মাঝে
অনেক কষ্ট স্বীকার করে গ্রন্থ রচনা করেন , কিন্তু নিজের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান না,
ব্যাপারটা ভাবতেই লেখকদেরকে নিজেকে নিজের প্রতি বিরাট অকৃতজ্ঞ মনে হয় , তাই আমি এই
বই রচনার ক্ষেত্রে নিজের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলাম”
(4)
(5)
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
ভূমিকা
bv cvVK GwU ‡Kvb Kv‡jvRv`y ev Zš¿g‡š¿i eB bq | GB eB‡Z Avwg ‡`Lv‡Z
‡Póv K‡iwQ wKfv‡e nvRvi nvRvi eQi c~e© ‡_‡K ïiæ n‡q Av‡Rv Avgv‡`i gv‡S wfbœ
iƒ‡c GB weÁvb I c«hyw³i ¯^Y©hy‡M wU‡K Av‡Q Kv‡jvRv`y | ejv ‡h‡Z cv‡i nvRvi
nvRvi eQi a‡i P‡j Avmv AwggvswmZ inm¨¸‡jvi Z_¨c~Y© I ‡hŠw³K SECRET REVEALED UvB‡ci GK wbtk¦v‡m c‡o
‡djevi gZ eB | G‡j‡g‡jv , LvcQvov ,m~PxcÎwenxb
‡jLv g‡b n‡Z cv‡i , wKš‘ GB eB‡qi GKgvÎ g~j w_g n‡jv Avgv‡`i eZ©gvb
weÁvb Gi DrcwË ‡Kv_v ‡_‡K wKfv‡e Avi
Avm‡j AvR‡Ki weÁvbB wK hv`ywe`¨v GB in‡m¨i mÜv‡b c«K…Z mZ¨ m¤^‡Ü Rvb‡Z c«vmw½K
Ac«vmw½K D`vniYg~jK wKQyUv ev‡R eKv ?‡m
Rb¨ m~PxcÎ wb®ú«‡qvRb|cy‡ivUv bv co‡j w_g aiv ‡`‡ebv| ZvB cov ‡k‡l Avcbvi Kv‡Q cwi®‹vi n‡q hv‡e ,
wKfv‡e myc«vPxb gvbe mf¨Zvi ïiæ ‡_‡K Av‡Rv ch©šÍ GK inm¨gq kw³ , GK kw³kvjx
¸ßwe`¨v hy‡M hy‡M bvbv iƒ‡c gvbe mf¨Zv I c…w_ex‡K wbqš¿b Ki‡Q,hv me hy‡M wQ‡jv
,eZ©gv‡b Av‡Q ,fwel¨‡Z&I Avm‡e Av‡iK iƒ‡c | MZvbyMwZK eB‡qi evB‡i GK bZyb
mvm‡cÝ Gi mÜvb ‡c‡Z PvB‡j , Avcbvi cv‡k P‡j ‡eov‡bv ¸ßwe`¨vi aviK inm¨ gvbe
,mf¨Zv ,M‡elYv-M‡elK wPb‡Z PvB‡j ‡e÷ eyK
Kv‡jvRv`y THE BLACK MAGIC –SECRET BEHIND THE SCIENCE -2018
পৃথিবীতে আর
বিশ্বব্রক্ষ্মান্ডে যে বিষয়গুলো রহস্যাবৃত আর অমিমাংসীত সেগুলোর সন্তুষ্টিজনক
উত্তর পেতে আমাদের মনে একটা আলাদা অব্যক্ত কৌতুহল জাগে ।আসলে ভূত বলে কিছু কি আছে
? আমরা আধুনিক মানুষরাই কি শুধু উন্নত ? মানব সমাজ ক্রমশ বিবর্তনে উন্নত নাকি
মানুষ তার সৃষ্টি ও জন্মলগ্ন থেকেই উন্নত জ্ঞানের অধিকারী, মানুষের পৃথিবীতে
আগমনের শুরুটা ঠিক কত আগে থেকে ১০ লাখ বছর আগে থেকে নাকি ০৬ হাজার বছর আগে থেকে?
কালোজাদু বাণ টোনা, জ্যোতিষ বাণী এ এগুলো কি সত্যি নাকি স্রেফ ভন্ডামী? স্রষ্ঠা ও তার সৃষ্টি
সম্বন্ধে অবারিত কৌতুহল, স্রষ্ঠা কে, তাকে কেন অনাদি
অনন্ত বলা হয়? এসব রহস্যঘেরা প্রশ্ন আমাদর মনে কখনো কখনো কোন ঘটনার পরিপ্রক্ষিতে
মনে প্রবল দোলা দিয়ে যায় ।মন খোজে মন মানার মত প্রশ্নোত্তর । কিন্তু কোন উত্তরই
কেন জানি মনকে সন্তুষ্ট করতে পারেনা , জিজ্ঞাসু মনের তৃপ্তি বা পিপাসা মেটাতে পারেনা । এ সব অতি জটিল প্রশ্নের উত্তর
নিজ দৃষ্টিকোণ থেকে ও অতি স্বল্পজ্ঞানে দেবার চেষ্টা করেছি মাত্র, অকাট্য ও ১০০
ভাগ সত্য এবং প্রমাণিত কোন মতবাদ দিইনি বা বলছিনা এগুলো ১০০ ভাগ সত্য এবং প্রমাণিত
।শুধুমাত্র কিছু প্রচলিত প্রাচীন ও আধুনিক বই পত্র, উইকি, বিদেশী কিছু ওয়েবসাইট এর সামান্য সহায়তা, জনশ্রুতি ,সাধারণের ভিতর অসাধারণ যে বিষয়
আমাদের অজানা বা দৃষ্টির আড়ালে থেকে যায় এবং নিজ জ্ঞানে ও ভাবনাতে সকল জাতি ও ধর্মের প্রতি
সমান শ্রদ্ধা রেখে যেটুকু যৌক্তিক মনে হয়েছে সেটুকু লিখেছি ও ব্যাখা দাড় করানোর
চেষ্টা করেছি মাত্র। মনে রাখবেন সবকিছুর উপর স্রষ্ঠা একমাত্র সত্য আর আপনি যে ধর্মের হোননা কেন জানবেন যে মানবতা আপনার
ধর্মের কেন সকল ধর্মেরই মূলভিত্তি । লেখার কোথাও কোথাও ছন্দহীন ও খাপছাড়া মনে হতে
পারে, এটা এ কারণে হতে পারে যে বইটা লেখা শুরু করেছি প্রায় বছর তিনেক আগে থেকে ।সাথে অত্যাধিক
কর্মব্যস্ততা, পড়াশোনা, নানা কারণে মুড সুইং করার কারণে নিয়মিত লিখতে বসা হয়নি ।
(6)
পাঠক ও যে কোন
ধর্মাবলম্বী জ্ঞানী ও গুণী মানুষের প্রতি অনুরোধ রইলো লেখার কোন প্রকার ভুলে আমার
প্রতি রুষ্ট না হবার জন্য ।
আচ্ছা কোন কিছু কি
নেই বললেই নেই হয়ে যায় ? প্রবাদ আছে যা রটে তা কিছুটা বটে ।পুরাকাল –বর্তমান
কাল - ভবিষ্যত কাল এই তিনই ÔÔকালোজাদু ÕÕএর উপজীব্য ।বলতে
পারেন এটা ÔÔ পাস্ট ফিকশন ÕÕ টাইপের বই । সায়েন্স ফিকশন নামটির সাথে আপনারা বিজ্ঞান কল্পকাহিনী
ফ্যানরা পরিচিত ।তবে ÔÔ পাস্ট ফিকশন ÕÕ নামক আজগুবি নামটি হয়তো আমিই প্রথম
কোথাও ব্যবহার করলাম এ জন্য যে আমাদের ভবিষ্যত নিয়ে যতটা আগ্রহ আছে অতীত নিয়ে ততটা
আগ্রহ আমাদের নেই ।এর যৌক্তিক কারণ ও আছে কারণ দিনতো চলে যাচ্ছেই ।যা অতীত হয়ে
গেছে তাতো এক কায়দাতে গেছেই ।কিন্তু চিন্তা হলো ভবিষ্যত নিয়ে ।কারণ বেঁচে থাকলে
ভবিষ্যতকে ফেস করতে/মোকাবেলা করতে হবে আপনার ।বর্তমান আর ভবিষ্যত নিয়ে ভাবাটাই
বুদ্ধিমানের কাজ ।তবে অতীত নিয়ে যদি মানুষের আগ্রহ একেবারে না থাকতো তবে
ইতিহাস(HISTORY) নামে কোন বিষয় (SUBJECT) থাকতোনা ।প্রত্নতত্ববিদ, নৃতত্ববিদ,
ঐতিহাসিক এনারা থাকবার প্রশ্নই থাকতোনা ।আমি উচ্চমাধ্যমিক পর্য্যন্ত বিজ্ঞানের
ছাত্র ছিলাম ।পরবর্তী শিক্ষাজীবনটুকু মানবিক বিভাগের ছাত্র হিসেবে পড়াশোনা করেছি ।ইতিহাস
বিষয়টা আমার বরাবরই প্রিয় । স্নাতকোত্তর এ ইসলামের ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনা করতে গিয়ে
কেন জানি মনে হলো বিজ্ঞান আর ইতিহাসের(প্রাচীন হোক বা ইসঃ ইতিহাস হোক)মধ্যেও কেমন
একটা সুনিবিড় সংযোগ আছে ।মানুষের অতীতের কাহিনী বা সমাজ ব্যবস্থা যেমন ইতিহাসের আওতা বা অবদানের
বাইরে নয় তেমনি বিজ্ঞানের ও বাইরে নয় । অতীতের বা মহাকালের গর্ভে ডুব দেওয়ার ভিতর অদ্ভুত একটা রহস্যময়তা ও সাসপেন্স
আছে, হয়তো অতীত কে অতীত ভেবে বা “পাস্ট ইজ পাস্ট” ভেবে এসব আমরা ভাবনাতে ও নিয়ে আসতে চাইনা। আচ্ছা আজ আমরা যে খ্রিস্টাব্দ অতিবাহিত করছি, তার থেকে অনেক অনেক শতাব্দী আগে ধরুন আজ থেকে দশ বা বিশ হাজার বছর আগেও তো এই
পৃথিবীতে মানুষ বসবাস করতো। অনেকের হয়তো জানতে ইচ্ছা করে তারা কি করতো, কেমন ছিল তাদের
জীবন, আমরা যেমন পড়েছি আসলে কি তারা কতটা উন্নত বা অনুন্নত ছিলো এটা নিয়ে দন্দ -সন্দেহ - বিতর্ক চলে আসছে অনেক কাল
(7)
আগে থেকে। মানুষের জানার এই অপার আগ্রহ থেকেই বোধ হয় এইচ জি ওয়েলসের টাইম মেশিন, আর্থার সি
ক্লার্ক এর সায়েন্স ফিকশন কালজয়ী হয়ে যায় । অপার আগ্রহ, কৌতুহল, কল্পনা আছে বলেই
আধুনিক বিজ্ঞানের স্বর্ন যুগে আমরা বসবাস করছি ।কিছু জিনিসের ব্যাখ্যা না থাকলে ও অনর্থক অবাস্তব হলেও তা আমাদের কে এক প্রকার
আনন্দ দেয়। এই যেমন ধরুন বিজ্ঞান
বলে ভূত বলে কিছু নেই , কিন্তু তারপরেও ভূতের বই আমাদের অবসরে প্রিয়, সারা পৃথিবীর উন্নত সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি
গুলোতে, এফ এম রেডিও গুলো তে, গুগল প্লে স্টোরে ভুতের পিডিএফ বই, হরহামেশাই ভূত
এফ এম, আহট, এলিয়েনের কাহিনী, তুমুল দর্শকপ্রিয়তা নিয়ে প্রচারিত হচ্ছে ।মানুষের অজানাকে জানার দূর্বার ইচ্ছা, রহস্যের প্রতি দূর্নিবার আকর্ষন আছে বলেই তো এই প্রোগ্রামগুলোর দর্শকেরও অভাব
হয়না ,
হোকনা অবাস্তব, অযৌক্তিক আর
সামান্য বাস্তবের মিশেল, কিন্তু সিনেমা আর ভুতের গল্প মিথ্যা জেনেও অদ্ভুত
এক আকর্ষন কাজ করে আমাদের ভিতর !।
এই বইটি পড়বার সময় আপনার মনে হতে পারে অনেক
কথাই মন গড়া বা অযৌক্তিক অথবা স্রেফ আবহমান বাংলার গ্রাম ও শহরে চলে আসা জনশ্রুতি
বা কুসংস্কার অথবা স্থানে স্থানে স্রেফ
ভূতের গল্পের বই ।এটা এজন্য হতে পারে যে
বইয়ের নামের সাথে বিষয়বস্তু ও কাহিনীর মিল রাখার জন্য এগুলো উদাহরণ এবং সাথে আমার
লেখার মৌলিকত্ব ধরে রাখার প্রচেষ্টা ও কপি পেস্ট থেকে দুরে থাকা । স্রেফ পাঠক মনে
কৌতুহল ও চমক জাগানো বইটির উদ্দেশ্য নয় । যুক্তিযুক্ত উদাহরন, যুক্তি, ও ইতিহাস
দিয়ে আমরা ঘুরে আসবো অতীত –বর্তমান –ভবিষ্যত । সাথে সাথে দাড় করানোর চেষ্টা করবো
অনেক অমিমাংসীত প্রশ্নের যুক্তিপূর্ন উত্তর । তবে বলবোনা যা লিখছি যা বলছি সবই ১০০
% সত্য, এটা হলো যুক্তি – বিজ্ঞান - ইতিহাসের আলোকে অথবা শুধু আমার
ছোট মাথায় স্বল্পজ্ঞানে কৌতুহল নিবৃত্তির প্রচেষ্টা মাত্র । হতে পারে ভারতের আদালত
সিরিয়ালের সেই বিখ্যাত সংলাপের মত Òযেটা দেখা যায় সেটা
হয়না , আর যেটা হয় সেটা দেখা যায়না Ó। আমি যেহেতু অতি
সামান্য একজন মানুষ তার উপর আহামারি জ্ঞান বা সার্টিফিকেট এর অধিকারী নই এবং
যেহেতু মানুষ মাত্রই ভুল করে , সেহেতু আমার লেখার ভুল স্বাভাবিক ও ক্ষমাসুন্দর
দৃষ্টিতে দেখবেন আবারো এ অনুরোধ রইলো ।
বিনীত
সৈয়দ মেহবুব রহমান
(8)
শুরুতেই বলে রাখি প্রথম
দিকের কয়েকপাতার লেখাগুলো অকারন মনে হতে পারে । মূল বিষয়বস্তু ও পরবর্তী লেখাগুলো বোঝবার
সূবিধার্থে শুরুতে কয়েকপাতা সাধারণ ও গতানুগতিক জানা ইতিহাস টাইপের লেখা।কিছু
উল্লেখযোগ্য সভ্যতা ও তার পরিচিতি (সভ্যতাগুলোর নাম –সর্বপ্রাচীন থেকে শুরু, সেই
সভ্যতার উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ,শাসক , ঘটনা )
মেসোপটেমিয় সভ্যতা – বর্তমান ইরাকের
টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর মধ্যবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত ছিল এই সভ্যতা । বর্তমান
ইরাক, সিরিয়া , তুরস্কের উত্তরাংশ ও ইরানের খুযেস্তান প্রদেশ নিয়ে
ছিলো এই সভ্যতা । খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ থেকে ৩০০০ অব্দের মধ্যে উন্মেষ ঘটেছিলো এই
সভ্যতার ।রোমান, পারসিয়ানদের মাঝে হাতবদল হতে হতে ৭০০ খ্রিস্টাব্দে এসে এখানে
মুসলিম সভ্যতার উন্মেষ ঘটে । মুসলিম খিলাফতের শাসনামলে পরবর্তীতে এই অঞ্চল ইরাক
নামে পরিচিতি লাভ করে ।মেসোপটেমিয়া শব্দটি গ্রীক শব্দ । এর অর্থ হলো দুটি নদীর
মধ্যবর্তী অঞ্চল ।নলখাগড়ার জঙ্গল ও খেজুর গাছ ছিলো এই অঞ্চলের প্রধান বৃক্ষ ।
পরবর্তীতে টাইগ্রীস ও ইউফ্রেটিস নদীর পলি জমে ভরাট হয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৬০০০ অব্দ
থেকেই এখানে মানুষের সমবেত হবার মাধ্যমে এই সভ্যতা গড়ে ওঠে । দূর্বল প্রতিরক্ষার
মাধ্যমে বারবার বহিশত্রুর আক্রমনে বার বার আক্রান্ত হতে হতে এই সভ্যতা ভাগ হয়ে এর
ভিতর বেশ কটি সভ্যতার উন্মেষ ঘটে
।উত্তরাংশে আসিরীয় ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা । আর
ব্যবিলনের উত্তরে আক্কাদ ও দক্ষিনে সুমেরীয় সভ্যতা গড়ে ওঠে ।
সভ্যতায়
এদের অবদান t –
০১) এদের
সভ্যতায় ধর্ম পালন, মন্দিরের উল্লেখ ও দেবতার পুজার উল্লেখ রয়েছে ।
০২) মাটির
নিচে জল রয়েছে এবং ভূপৃষ্ঠ পানির উপর ভাসমান এটা তারা মনে করতো ।
(9)
০৩) এরা
মন্দিরে ফসল জমা দেয়ার জন্য ও কে কতটুকু ফসল জমা দিলো সেই হিসাব রাখার সুবিধার্থে
গণিত শাস্ত্রের উদ্ভাবন করে । এদের গণণার সীমা ছিলো ষাট পর্যন্ত । এখান থেকেই
ষাট মিনিটে এক ঘন্টা ও ষাট সেকেন্ডে এক মিনিটের হিসাব আসে । তারাই প্রথমে ১২ মাসে
০১ বছর ও ৩০ দিনে এক মাস এই হিসাবের প্রচলন করে ।
০৪) তামা
ও টিনের সংমিশ্রনে ব্রোঞ্জ ধাতুর আবিষ্কার তারা করেছিলো ।
০৫) তারা
পৃথিবীকে ৩৬০ ডিগ্রীতে ভাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, ১২ টি রাশিচক্র ও জলঘড়ির
আবিষ্কার তারাই করেছিলো ।
০৬) গিলগামেশ
নামে তাদের সেমেটিক ভাষায় সাহিত্য রচনা করেছিলো ।
০৭) সম্রাট নেবুচাদনেজারের
রহস্যময় ঝুলন্ত উদ্যান এখনো পৃথিবীর ০৭ টি প্রাচীন সপ্তাশ্চার্যের একটি ।
এখন আপনি দেখুন এই সভ্যতার আবিষ্কৃত সময়,
রাশিচক্র, পদক দিতে গিয়ে ব্রোঞ্জের ব্যবহার আমরা করছি না ?
মিশরীয় সভ্যতা - খ্রিস্টপূর্ব ৫০০০ অব্দে মিশরে এ সভ্যতার
সুচনা হয় ।ফারাও সাম্রাজ্যের সুচনা হয় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ অব্দে ।এই রাজবংশের
উত্তরাধিকারীরা বংশানুক্রমে ফারাও হিসেবে পরিচিতি লাভ করে ।খ্রিস্টপূর্ব ১০ম শতকে
লিবিয়ার এক বর্বর জাতির হাতে পতন হয় ৩০০০ হাজার বছরের প্রাচীন ফারাও রাজবংশের ।
সভ্যতায় মিশরীয়দের উল্লেখযোগ্য অবদান –
১) মিশরের পিরামিড
২) মমি
৩) হায়ারোগ্লিফিকস
৪) জ্যোতির্বিদ্যা
(10)
৫) বিভিন্ন অজ্ঞাত
রাসায়নিকের গুণ আবিষ্কার ।
৬) চিকিৎসা শাস্ত্রের
অস্ত্রোপচার,হাড় জোড়া লাগানো এ গুলো সম্বন্ধে তারা জানতো
যদিও যুক্তির বাইরে হয়তো বা অবিশ্বাস্য বা
সুপার ন্যাচারাল বলিনা কেন কিছু গুপ্তবিদ্যা বা ব্যাখাতীত কিছু বিষয় এ সভ্যতায় ছিল
(শুধুমাত্র এ সভ্যতাতে নয় , সমস্ত গুপ্তবিদ্যা পুরাকালে বিভিন্ন সভ্যতাতে পূর্ণ শক্তিতে বিদ্যমান ছিল , কিন্তু পরবর্তীতে উপযুক্ত রক্ষনাবেক্ষন ,উপযুক্ত উত্তরাধিকার ,নির্দিষ্ট
স্থানে চর্চার সীমাবদ্ধতা এবং গোপনীয়তা , যে কোন কারণে চর্চার বা গুপ্তবিদ্যা
উদ্ভাবনের সেই নগরী ধ্বংস হয়ে যাওয়া , নতুন সহজতর বিদ্যার বা যন্ত্রের উদ্ভাবন ,এসব
কারণে কথিত সব অতি ক্ষমতা বা গুপ্তবিদ্যা
হারিয়ে গেছে , বা হয়তো আপনার আমার এ সভ্যতাতে অন্য কায়দাতে বা অন্য রুপে
বিরাজমান থাকতেও পারে)যেটার ঐতিহাসিক বা বৈজ্ঞানিক
ভাবে তেমন স্বীকৃত সত্যতা না থাকলেও , বা সামান্য
কিছুর উল্লেখ থাকলেও ; সেগুলোর ভাসা ভাসা
কিছু রেফারেন্স দিয়ে এই গ্রন্থের নামের স্বার্থকতা বোঝাতে সক্ষম হবো বলে
মনে করি ।
ভারতীয় সভ্যতা –
বলতে গেলে যত সভ্যতা
আছে তার ভিতর জ্ঞানে বিজ্ঞানে বৈচিত্রে ভারতীয় সভ্যতার মত সভ্যতা বোধ হয় আর নেই ।
গণিত , জ্যোতিষবিদ্যা , শিল্প-সংস্কৃতি , আয়ুর্বেদ এর চরম উৎকর্ষ কি নেই এই
সভ্যতায়। বলা যেতে পারে পৃথিবীর যত গুলো আবিষ্কৃত সভ্যতা পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে
ভারতীয় সভ্যতার মত ভেরিয়েশন কোন কিছুতেই নেই । আমাদের বাংলাদেশ থেকে শুরু করে
ভারতকে কেন্দ্র করে শ্রীলঙ্কা , আফগানিস্তান , পকিস্তান , নেপাল , ভুটান , এ রকম
বিশাল এলাকা ছিলো এ সভ্যতার অন্তর্গত । চমক হিসেবে ছড়িয়ে আছে ভারতীয় সভ্যতায় ছড়িয়ে
থাকা নানা উপকথা , মিথ ।
(11)
এ ছাড়াও চীনা সভ্যতা , অ্যাজটেক
, মায়ান সভ্যতা অনেক সভ্যতাই ছিলো পৃথিবীতে ।
এবার আসবো আমাদের মূল ব্যাখ্যা বিশ্লেষন ও
তর্কের বিপরতে বিতর্ক ও আলোচনায় ।
প্রসঙ্গ , আপেক্ষিকতা t -
প্রাচীনকালের মানুষ
ছিলো গুহাবাসী। তারা ঘর বাড়ি নির্মান করতে জানতো না , আগুনের ব্যবহার জানতোনা,
স্থায়ী ভাবে চাষ করতে জানতোনা, খাদ্যের জন্য ছিলো শিকার ও যাযাবর জীবনের উপর নির্ভরশীল
। পরিধানের জন্য কাপড় ছিলোনা ।গাছের পাতা, ছাল বাকল ও পশুর চামড়া পরিধান করে লজ্জা
নিবারন করতো ।টোটালি এটা বোঝানো হচ্ছে বা চিরকালই
আমরা জেনে বুঝে এসেছি যে প্রাচীন
বা প্রাগৈতিহাসিক যুগের মানুষ এ রকম ভাবনার অতীত অনুন্নত জীবন যাপন করতো । ছিলো
খাদ্যের ও ফসলের জন্য শিকার করা ও প্রকৃতির উপর নির্ভরতা, যেখানে ছিলো গ্রীষ্মের
দুর্বিষহ গরম, প্রতিকারে ছিলোনা এখনকার বৈদ্যুতিক ফ্যান বা এ.সি, ছিলো গন্তব্য
স্থলের দুরত্ব, ছিলোনা এখনকার মত বিমান , ট্রেন, ইন্জিন
চালিত যান বাহন, পানিতে চলমান স্পিড বোট । এ রকমই যদি হয় তবে তা ছিলো আমাদেরও চরম অনুন্নত ভাবনারও অতীত অন্ধকার জীবন ।
আসলে অনুন্নত বা
প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলতে কি বুঝি । যীশু খ্রীষ্টের জন্মের পূর্ববর্তী পাঁচ-ছয় হাজার বছর বা আজ থেকে সাত –আট হাজার
বছর পূর্ব পর্যন্ত সময় কালকে প্রাগৈতিহাসিক যুগ বলা হয়। অর্থাৎ এই সময়ের আগের কোন
ইতিহাস মানুষের কাছে নেই, তাই এটি প্রাগৈতিহাসিক যুগ , অর্থাৎ ইতিহাসের আগের যুগ।
মানব ইতিহাসে ওই সময়ের সুনির্দিষ্ট কোন ইতিহাস নেই । তবে বিজ্ঞানীরা এই প্রাগৈতিহাসিক যুগকে ভাগ
করেছেন প্রস্তর যুগ , ব্রোঞ্জ যুগ ও লৌহ
যুগ এই কয়েকটা ভাগে। পৃথিবীর যত ইতিহাস পাই তার আবির্ভাব বা শুরু যুগ হলো লৌহ
যুগের শেষে ।
(12)
প্রকৃষ্ট উদাহরন হিসেবে বলা যেতে পারে ব্রিটেন
এর লৌহযুগ শেষ হয় রোমান বিজয় এর মাধ্যমে , এর পর হতে ব্রিটেন এর লিখিত ইতিহাস এর
শুরু । এক লাখ (১,০০,০০০) খ্রিষ্ট পূর্বাব্দ থেকে শুরু করে চল্লিশ হাজার(৪০,০০০)
বছর পূর্ব পর্যন্ত সময়কাল এই প্রস্তর যুগ ।এই যুগের উল্লেখযোগ্য কাজ হলো কৃষির
উদ্ভাবন, বন্যপ্রানীকে গৃহপালিত পশুতে রূপান্তর ও তামার আকরিক গলিয়ে তামার
ব্যবহারের মাধ্যমে ধাতুর ব্যবহার শুরু । কথাটা এখানেই কপার বা তামার গলনাংক ১০৮৫
ডিগ্রী সেলসিয়াস । কাঠের চুলার আগুনের তাপমাত্রা ৩০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস থেকে ৫৯৩
ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্য্যন্ত উন্নীত করা সম্ভব ।তো সেই সময়ে (আমাদের ভাষাতে অনুন্নত
যুগ) তামা আকরিক সংগ্রহ থেকে শুরু করে তামার ১০৮৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস গলনাংকে পৌছে
তামার ধাতব বস্তু বা তৈজস তৈরি করাটা যে গল্প কথা নয় সেটা নবম শ্রেনীর একজন
সায়েন্স স্টুডেন্ট মাত্র খুব ভালোভাবে বুঝতে পারবে
কিন্তু একটা জিনিস
কি জানেন , আমার কিন্তু মনে হয় মানুষ তার আদিমতম পর্যায় থেকেই চির উন্নত । মানুষের
সমাজ ব্যবস্থা , খাদ্য , বাসস্থান চিরকালই এমন । যুগে যুগে তার জীবনযাত্রা ও
সুযোগের রূপ পরিবর্তন হয়েছে মাত্র । যুগে যুগে
ভিন্ন রুপে ভিন্ন মাত্রাতে বিজ্ঞান ফিরে এসেছে তার কাছে । বিজ্ঞান ছাড়া কোন
যুগেই চলতে পারেনি মানুষ । মানুষ তার সৃষ্টির শুরু হতে যত শতাব্দী অতিক্রম করেছে
তার সাথে ছিলো বিজ্ঞান অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী হিসেবে ।
তাহলে প্রশ্ন এসে যায়
তাই যদি হবে তাহলে আমরা অনুন্নত বিজ্ঞান বিহীন মানুষের ইতিহাস পাই কি করে ? আসলে
পৃথিবীর সব অংশে মানব সভ্যতার সমান পত্তন হয়নি সকল কালে, সকল যুগে । প্রাচীন
সভ্যতায় উল্লেখযোগ্য হিসেবে গ্রীক, রোমান, মিশরীয়, ভারতীয়, ইনকা সভ্যতার উল্লেখ
আমরা পাই । এই সভ্যতা গুলোর অবদান হিসেবে ইউনানী ঔষধ, আয়ুর্বেদিক ঔষধ, মিসরের
পিরামিড, অ্যাস্ট্রোলজি উল্লেখযোগ্য । এ
ছাড়া এই সভ্যতাগুলোর থেকে আমরা বিভিন্ন মহা কাহিনী আখ্যান নির্ভর গ্রন্থ পাই ।
(13)
মহাভারত, হোমারের ইলিয়ড ও ওডিসি উল্লেখযোগ্য
(ইলিয়ড ও ওডিসির ট্রয় প্রসঙ্গে পরে আসছি ) | আসলে একটা সভ্যতা
উন্নত না অনুন্নত ছিলো সেটার রায় দিতে
গেলে শুধু মাত্র বর্তমান যুগের মত আবিষ্কার গুলো ছিলো কিনা বা এখনকার যুগের মত
সুযোগ সুবিধা ছিলো কিনা এটা দিয়ে সেই যুগকে বিবেচনা করা চলেনা । উন্নত এবং জীবনের
সঙ্গা যায়গা এবং আবিষ্কার এবং আপেক্ষিকতা ÔÔ(আপেক্ষিকতা ZZ¡ g‡Z mve©Rbxb mZ¨ e‡j wKQz ‡bB , mZ¨ `„wó, ¯’vb,
cwi‡ek , ক্ষমতা †f‡` wfbœ n‡Z cv‡i ) ভেদে ভিন্ন হতে পারে । ধরুন আপনি একটা যায়গাতে স্থির ভাবে
দাড়িয়ে আছেন, আপনার সামনে দিয়ে একটি ১৫০ কি.মি/ঘন্টা গতিবেগে একটি ট্রেন চলে
যাচ্ছে । আপনি তখন ট্রেনটিকে আপনার সামনে দিয়ে আধা দৃশ্যমান ও দ্রুত ধাবমান একটি
অবজেক্ট হিসাবে দেখছেন । ধরুন পাশাপাশি দুটি ট্রেন –ÔকÕ
ও ট্রেন – ÔখÕ রাখা আছে
। এই দুইটি ট্রেন কে রাখা হলো নির্দিষ্ট একটা দুরত্ত্বে । এই দুইটি ট্রেনের স্টার্টিং পয়েন্ট একেবারে
এক দাগে রাখা হলো, এই দুইটি ট্রেনের গতি একই সেকেন্ড রাখা হলো । তখন আপনি ক অথবা খ
যে ট্রেনের যাত্রীই হোন না কেন উভয় ট্রেনের যাত্রীরা পরষ্পরকে স্থির ও একই স্থানে
স্থির দেখবে । শুধু মাত্র যদি কোন যাত্রী
ট্রেনের চাকার দিকে তাকান তবে তিনি দেখবেন চাকা গতিশীল ।এটাই আপেক্ষিকতা ।
জীব হতে হলেই যে আমাদের মানুষের বসবাসের মত উপযুক্ত পরিবেশ থাকতে হবে এমন কথা নেই
। কারন মানুষই একমাত্র জীব নয় । প্রত্যেকটি জীব এর ভিতর ভাষাগত ও জীবনযাত্রাতে
রয়েছে বিস্তর ফারাক , একটা দুর্বোধ্য
দুরত্ব রয়েছে প্রাণীকুলের ভিতর । আমরা মানুষ হয়ে সকল প্রাণী জগতের ভাষা ও জীবনাচরন
কি বুঝি ? । প্রাণীর কথা না হয় বাদ দিলাম । শুধুমাত্র আমরা মানব জাতির ভিতর কত
বৈচিত্র , কত প্রকারভেদ প্রকরণ । মানব জাতির রয়েছে কত প্রকার ভাষা, এক জনের
চেহারার সাথে আরেকজনের চেহারার মিল নেই । দু জন চাইনিজ বা তামিল যদি তাদের নিজস্ব
ভাষাতে কথা বলে আর তার পাশে একজন বাঙালী যদি দাড়ানো থাকে তবে তখন কি কিছু বুঝতে
পারবে ? চাইনিজ ও তামিল ভাষায় কথা বলা মানুষ দুটোর ভাষা বাঙালীর কাছে দুর্বোধ্য বা
পাখির কিচিরমিচির ছাড়া আর কিছু মনে হবেনা ।
(14)
ঠিক পশু পাখিদের ভাষা বা ডাক আমাদের কাছে শুধুই
ডাক বা কিচিরমিচিরমনে হয় । কিন্তু না তাদের এই ধ্বনি (যেটা শুধু আমাদের কাছে পাখির
কিচিরমিচির ,কুকুরের ঘেউ , গরুর হাম্বা) শুধু অর্থহীন ধ্বনি নয় । এর মাঝেই লুকিয়ে
আছে মানব জাতির জ্ঞানের বাইরে প্রাণী
জগতের এক অজানা – দূর্বোধ্য জগৎ । হতে
পারে পশু পাখির সেই জগতে সেই দূর্বোধ্য ভাষাতে লুকিয়ে আছে মানবজাতির অজানা
বিষ্ময়কর জ্ঞানের এক জগৎ ।প্রাণী জগতের এই সব জ্ঞানগুলো যদি মানবজাতির আয়ত্বে আসতো
তবে নিঃসন্দেহে মানবজাতির বিজ্ঞান কয়েকধাপ এগিয়ে যেতো। এই কথাটার অর্থ বোঝার আগে
চলুন জেনে নেই এ পর্য্যন্ত যে যে
প্রাণীদের অত্যাশ্চর্য্য ক্ষমতা মানব চোখে আবিষ্কৃত হয়েছে এবং বিভিন্ন বিষয়ের বিস্ময়কর কিছু তথ্য -
০১) মাছিরা খুব কম সময়
বাঁচে ,এদের জীবনকাল মাত্র ১৪ দিন ।
০২) বিড়ালের প্রতি কানে রয়েছে ৩২ টি মাংশ
পেশী । এদের শ্রবন ক্ষমতা প্রবল ।
০৩) প্রতিটি মানুষের বিপরীতে রয়েছে এক মিলিয়ন
পিপিলিকা । এরা কখনো ঘুমায়না এদের কোন ফুসফুস নেই ।
০৪) প্রজাপতির দুই চোখে এক হাজারের ও বেশি
লেন্স রয়েছে ।
০৫) শামুক এমন এক প্রvণী যার চোখ নষ্ট হয়ে গেলে আবার নতুন চোখ গজায় ।
০৬) কুকুরের নাকের প্রিন্ট ইউনিক, এই প্রিন্ট
দিয়ে এক কুকুর থেকে আরেক কুকুর কে আলাদা করা যায় ।
০৭) পেঁচা নিজের ঘাড়কে ২৭০ ডিগ্রি পর্যন্ত
ঘোরাতে পারে ।
০৮) নিশাচর প্রাণীরা রাতের অন্ধকারে বা অতি
স্বল্প আলোতে দেখতে পাই, এটা আমরা সবাই জানি । কিন্তু তারা এটা কিসের ভিত্তিতে
দেখে জানেন ? আচ্ছা আপনি কোন বস্তুতে যদি তাপ থাকে তা কি দেখতে পান ?
(15)
দেখতে পাননা , কারন তাপকে দেখা যায়না ছুয়ে অনুভব করা যায় । কিন্তু নিশাচর প্রানীরা
এই তাপকে দেখতে পাই ! সকল প্রাণীদের দেহে প্রচন্ড তাপ উৎপন্ন হয়, কারন আমরা বা
প্রাণীরা যে খাদ্য গ্রহন করে তা oxygen এর সাথে জারিত হয়ে শর্করা জাতীয় খাদ্য
উৎপন্ন করে এবং সেই শর্করা রক্তে মিশে কোষে পৌছায় ।
তখন দেহের প্রয়োজনীয় শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজনে
কোষের ভিতর শর্করা পুড়ে তাপ উৎপন্ন করে ।অর্থাৎ তাপ বিকিরন করতে থাকে । এসব তাপ
ultra-violet(অতি বেগুনী রশ্মি ) সংবেদী চোখে ধরা পড়ে । এর ফলে দুর থেকে প্রাণী
অথবা মানুষের দেহ অবয়ব খুব সহজে নিশাচরী প্রাণীরা দেখতে পায় । এর কারন নিশাচরদের
আছে Tapetum Lucidum । আর এর উপর ভিত্তি করে আবিষ্কৃত হয়েছে Infrared
Technology ।
০৯) মিলানোফীলা(MILANOPHILA) নামক এক জাতের গূবড়ে
পোকা আছে যারা ১২ কিলোমিটার দূর থেকে বনের আগুণ লাগা বুঝতে পারে ।
১০)
অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের মধ্যে ২০০ এর বেশি ভাষা আছে কিন্তু লিখিত কোন রূপ
নেই ।
১১) অক্টোপাসের
কোন মস্তিষ্ক নেই কিন্তু একাধিক হৃদপিণ্ড আছে ।
১২) রেড ফ্লাট
বার্ক বিটেল নামক লাল রঙের সুন্দর একটি পোকা মাইনাস ১০০ ডিগ্রি তাপমাত্রাতেও মারা
যায়না ।
১৩) উটের দুধ
থেকে দই তৈরি করা যায়না ।
১৪) সাপের ছোবলে
ঘোড়া এবং বেজি মরেনা ।ঘোড়ার রক্তে সাপের বিষ ঢুকিয়ে তৈরি হয় সাপে
কাটা মানুষ কে বাঁচানোর ইনজেকশন এন্টিভেনম ।ঘোড়া না থাকলে
তাহলে কিভাবে সর্প বিষ প্রতিরোধী ইনজেকশন বানাতাম আমরা ।
১৫)লেজ কাটলে
ঘোড়া মারা যায় ।
(16)
১৬)হাতি ০৩ থেকে
১২ মাইল দূর থেকে পানি কোথায় আছে জেনে ফেলে । কিভাবে পানির
সন্ধান এত দূর থেকে পায় জানেন ? এর রহস্য লুকিয়ে আছে বিস্ময়কর ভাবে হাতির শুঁড়ে । হাতি তার শুঁড় দিয়ে একপ্রকার তরঙ্গ সৃষ্টি করে । যে পানি শনাক্তকারী তরঙ্গ পানিতে গিয়ে ফিরে এসে জানান দেয় পানির উপস্থিতি ।
১৭)মশার ৪৭ টি
দাঁত আছে ।মিলিপডের plenipes প্রজাতির ৭৫০ টি পা থাকতে পারে ।
১৮)একটি মশা মাত্র
এক সেকেন্ডে ৩০০-৬০০ বার ডানা ঝাপটাতে পারে ।আর এই এক
সেকেন্ড এ যখন ৩০০-৬০০ বার ডানা ঝাপটাতে শুরু করে তখনি আমরা শুনতে পায় মশা কানের
গোঁড়ায় ভন ভন করছে ।মশা কামড়ায় রক্তের গ্রুপ দেখে ।ব্লাড গ্রুপ O রা কে সবথেকে বেশি মশার কামড় খায় । ব্লাড গ্রুপ
A সবথেকে কম কামড় খায় । তাহলে মশা কোন বিজ্ঞান বা বুদ্ধির উপর নির্ভর করে রক্তের
গ্রুপ চেনে সেটা আমাদের অজ্ঞাত ।
১৯) আমাদের
পৃথিবী ঘন্টায় প্রায় ৬৭০০০ মাইল বেগে সামনের দিকে ছুটে চলেছে
২০) ইলেক্ট্রিক
ইল মাছ ৬৫০ ভোল্ট এর বৈদ্যুতিক শক দিতে পারে ।
২১)প্রতি
ঘন্টাতে আমাদের বিশ্বজগত চতুর্দিকে ১০০ কোটি মাইল বিস্তৃত হচ্ছে মানে আমাদের বিশ্বজগতের আয়তন প্রতিদিন চারদিকে ১০০
কোটি মাইল বাড়ছে ।
২২)মানুষের
চাইতে কুকুরের নাসিকা দিয়ে গন্ধ নেবার
ক্ষমতা ১০০০ থেকে ২৮০০০ গুন বেশি ।
২৩) আপনি যদি
আকশে উড়তে চান কোন কিছুর সাহায্য ছাড়াই তাহলে আপনাকে সেকেন্ডে ০৭ মাইল দৌড়ে যাবার
মত শক্তি থাকতে হবে ।
২৪)আমাদের
হৃদপিণ্ড দিনে এক লক্ষ বার স্পন্দন বা বিট তৈরি করে ।
(17)
২৫)পৃথিবীর সবচেয়ে
দামি কফি কফি লুয়াক হল সিভেট বিড়ালের কফি বিজ খেয়ে ত্যাগ করা মল , কফি বীজ খেয়ে যে
মল ত্যাগ করে সিভেট বিড়াল সেই মলই হলো সব থেকে দামি কফি কফি লুয়াক ।
২৬) মরুভুমির
তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৭৭ ডিগ্রী সেলসিয়াস উঠতে পারে ।
২৭) একটা
বজ্রপাতে ১০ মিলিয়ন ভোল্ট বিদ্যুৎ সৃষ্টি হতে পারে ।
২৮) আপনার ঘরে
আলো দেওয়া বাতিটি সেকেন্ডে ৫০ বার জলছে আর নিভছে কিন্তু আপনি সেটা দেখতে পাচ্ছেননা
।
২৯)মানুষ শুনতে
পায় ২০ হাজার হার্জ এর শব্দ ,কুকুর ৪০ হাজার , ডলফিন দেড় লাখ ,বাদুড় ০২ লাখ হার্জ কম্পনের সব্দ শুনতে পায় । তাহলে অনেক
অজানা শব্দ আমরা শুনতে পায়না ।কি জানি কত অজানা কথা লুকিয়ে আছে সেই মানুষের শোনার
সামর্থ্যের বাইরের শব্দে ।
৩০)যে প্রানীর
আকার যত ছোট সে আশে পাশের গতিশীল বস্তুকে তত ধীরে দেখে । এজন্য মাছির দিকে আপনি যত
জোরে হাত নিয়ে যান না কেন সে দেখে ফেলে ,আপনার হাতের গতির কারনেও আপনার হাতটা সে
দেখতে পায় , সাধারনত আমরা গতিশীল বস্তু আবছা দেখতে পাই । কিন্তু সে সব পরিষ্কার
দেখে ।
৩১) সকল পোকামাকড়
থেকে পিপড়ার মস্তিষ্কে আড়াই লাখ বেশি কোষ
আছে ।
৩২) পৃথিবীর সকল
নদী নালা খাল বিল সাগর মহাসাগর এ যত পানি
আছে তার তিন গুন বেশি পানি আছে পৃথিবীর ভিতরে ।
৩৩) পৃথিবীর
মাটির নিচে এত স্বর্ন রয়েছে যে তা দিয়ে পুরো পৃথিবী কে ১.৫ ফুট পুরু স্বর্নের আস্তরন
দিয়ে মুড়ে দেওয়া যাবে ।
(18)
৩৪)চাঁদ না
থাকলে পৃথিবীতে ২৪ ঘন্টার বদলে দিন হত মাত্র ০৬ ঘণ্টায় ।
৩৫)আমরা যতবার
হাচি দিই ততবার আমাদের মস্তিস্কের বেশ কিছু কোষ মারা যায় , যদিও সেই কোষ গুলো দ্রুত
তৈরি হয়ে আবার আমাদের মস্তিষ্ক এর ক্ষয় কে পুরন করে ফেলে ।
৩৬) মধু হল মৌমাছির
বমি ।
৩৭) আমাদের চোখের
কর্নিয়া হল এমন একটা অঙ্গ যেটাতে শরীরের রক্ত মোটেই পৌছায়না ।রক্ত বাদেই এই অঙ্গটি
তার কাজ করে যাচ্ছে , তাহলে এটা কি করে চলে ,আর বিষ্ময়কর বাপার হল এটি বাতাস থেকে
সরাসরি অক্সিজেন নেয় ।
৩৮) আমাদের
হৃদপিন্ডের রক্ত পাম্প করার যে শক্তি তা দিয়ে অনায়াসে তিনতলা বাড়ির ছাদে পানি তোলা
যাবে ।
৩৯)প্রজাপতি তার
পা দিয়ে খাবারের স্বাদ গ্রহন করে ।
৪০)আমেরিকার
ক্যালিফোর্নিয়া এর হোয়াইট পাহাড়ের একটি পাঈন গাছ(বিরিষ্টলকন পাইন –PINUS LONGAEVA) আজ পর্যন্ত দীর্ঘতম জীবিত গাছ , গাছটির বয়স
৫০০০ বছর প্রায় ।
৪২)আমাদের মস্তিষ্কের
প্রায় ২৫ ওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে ।
৪৩)প্রতি বছর চাঁদ পৃথিবী থেকে দেড় ইঞ্চি দূরে সরে যাচ্ছে ।
৪৪) মানুষের শরীরে
নার্ভ বা স্নায়ুর পরিমান ১০০ বিলিয়ন ।
(19)
৪৫) ম্যামথ নামে হাতির পূর্ব পুরুষ যেটি সেই প্রানি টি
কিন্তু মিসরের পিরামিড তৈরির সময়ে পৃথিবীতে বিদ্যমান ছিল ।
৪৫) মধু সহজে নষ্ট হয়না । তিন হাজার বছরের পুরনো মধুও খাবার উপযোগী থাকে
।
৪৬) টিভিতে সিগন্যাল না থাকলে আমরা যে ঝিরিঝিরি বা জোনাকি পোকার
মত দাপাদাপি দেখি সেটা কিন্তু বিগ ব্যাঙ বা যে
মহাবিস্ফোরনের মাধ্যমে মহাবিশ্বের সৃষ্টি তার তেজস্ক্রিয়তা , বর্তমানের এল
ই ডি টিভিতে এগুলো দেখা যায়না বললেই চলে , আগের ক্যাথোড রে টিভিতে দেখা যেতো বেশি
।
৪৭) গোল্ড ফিশ তার
স্মৃতি ০৩ সেকেন্ড আগের স্মৃতি ধরে রাখতে পারে ,তার দেখা কোন কিছু ০৪ সেকেন্ড হয়ে
গেলেই সে ভুলে যায় ।
৪৮) আন্তর্জাতিক
মহাকাশ স্টেশনের মহাকাশচারীরা দিনে প্রায় ১৫ বার সূর্যোদয় ও সুর্যাস্ত দেখেন ।
৪৯) একটা
প্রজাপতির ১২ হাজার চোখ থাকে ।
৫০)পাখিদের
মধ্যে একমাত্র নিশাচর পেঁচা নীল রঙ দেখতে পায় ।
৫১) উট পাখির
মগজ তার চোখের থেকে ছোট ।
৫২) মাছ চোখ
খুলে ঘুমায় ।
৫৩) তেলাপোকা
তার মাথা ছাড়া ০৯ দিন পর্যন্ত বেঁচে থাকে ।
(20)
৫৪) এক ধরনের আর্টিফিশিয়াল
ইন্টেলিজেন্স সফটওয়্যার আবিষ্কার এর চেষ্টা করছেন আমেরিকান করনেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গবেষকরা ।এটা দিয়ে ধরা যাবে যে ব্যাপারটা তাহলো আপনি যদি বাঙালি হয়ে চাইনিজ ভাষা লেখেন
তবে আপনি যে বাঙালি সেটা ধরা যাবে ।
৫৫) একটা অভিযোগ
বা কথা প্রায়ই শোনা যায় দাদা নানাদের মুখে যে , আগের মত খাবারে আর স্বাদ নেই , আমাদের সময়ের খাবারে
ব্যাপক স্বাদ ছিল ।কথাটা আসলে বলা ভুল । কারন হল মানুষ জন্ম গ্রহন করে ০৯ থেকে ১০ হাজার স্বাদ কোরক নিয়ে ।এটা হলও একেবারে ছোটবেলার কথা ।আপনি এই যে ৪০
বা ৫০ বছর বয়ষে এসে অভিযোগ করছেন কোন কিছুতে আগের মত স্বাদ নেই , এখনকার জিনিষ
ভেজাল এটার কারন হল আপনার স্বাদ কোরক গুলো বয়সের সাথে
সাথে জিহ্ববা থেকে কমতে থাকে ।এ কারনে ছোটবেলাতে
থেকে তরুন বয়ষ পর্যন্ত স্বাদ কোরক গুলো সম্পুর্ণ
থাকা এবং কার্যকরী তরতাজা থাকাতে যে কোন খাবারের স্বাদ আমরা ভালভাবে পাই । কিন্তু দেখা যায় একটা বয়সে এসে আমাদের জিহ্ববার
এই স্বাদ কোরকগুলো কমে যেতে থাকে এবং কার্যকরীতা হারাতে থাকে
, সে জন্য দাদা নানারা যখন যুবক থেকে বার্ধক্যে পৌছান তখন তারা এই অভিযোগ করেনে যে
খাবারে আগের মত স্বাদ নেই ,আসলে খাবারের স্বাদ ঠিক আছে কিন্তু ওনাদের যে জিহ্ববার
কোরক ক্ষতিগ্রস্ত বা বয়সের সাথে সাথে কমে গেছে সেটা ওনারা বা আমরা কেউ বুঝতে
পারেননা ।
৫৬) আচ্ছা
প্রায়শই আমরা শুনে থাকি জ্যোতিষ বিদ্যা , ভুত প্রেত , যাদু এগুলো একেবারে ডাহা
ভুয়া ।কিন্তু ভুয়া বলুন আর যাই বলুন ঐতিহাসিক ভাবে এগুলো ০২-০৪ হাজার বছর ধরে
মানুষের সাথে ব্যাপক ভাবে জড়িয়ে আছে ।এবং আপনি যত
যুক্তিই দিননা কেন জ্যোতিষ বিদ্যার উপকার ভোগী আর আর ভূতের দর্শনধারী লোকের অভাব তো
নেই বরং শতকরা হিসেবে বেশ ভাল সংখ্যাতে পাবেন আপনি এদের ।
(21)
- পৃথিবীতে আপনি ভৌতিক যেমন অনেক বাস্তব উদাহরন পাবেন তেমনি জ্যোতিষ বানী অনেকের
জীবনে ফলেছে এমন লোক আপনি সমাজের খেটে খাওয়া মানুষ থেকে শুরু করে সমাজের ধনী ও উচ্চ
পর্যায়ের মানুষেও পাবেন ।এর পিছনে বৈজ্ঞানিক কোন
যুক্তি থাকুক আর নাই থাকুক ।বৈজ্ঞানিক যুক্তি না থাকলেও ভাগ্য বিশ্বাস মানুষের মাঝে
থাকবে ।পৃথিবীতে কিছু জিনিষ চিরকালই বিজ্ঞানের ব্যাখ্যার বাইরে থাকবে ।
৫৭) এই মহাবিশ্বের বয়স যতদিন আপনার বয়স ও ততদিন
,মানে মহাবিশ্ব যদি ১০০০ কোটি বছর বয়সের হয়ে থাকে তো আপনার বয়স ও তাই ।এটা কোন যুক্তিতে বলা হয় জানেন ? এটা বলা হয় এই যুক্তিতে যে আপনি বা আমি তো পৃথিবী বা মহাবিশ্বে বিদ্যমান ধাতু বা বস্তু দিয়ে তৈরি ,
আমাদের শরীর যেসব পদার্থ বা ধাতু দিয়ে তৈরি সেই সব পদার্থ , বা ব্যাকটেরিয়া ,বা
ধাতু গুলো আমাদের শরীরে আসার আগে মহাবিশ্ব সৃষ্টি শুরু থেকেই তৈরি হয়েছে ।সে জন্য আপনি বা
আমি হলাম পদার্থের ভিন্ন অবস্থার রুপান্তর মাত্র , কিন্তু আমাদের দেহ তৈরির কাঁচামাল ঠিকই মহাবিশ্ব সৃষ্টির সম পুরাতন , সেই
হিসেবে আমাদের বয়স কম নয় !!! ।
৫৮) কালোজাদু আর বিজ্ঞান একই জিনিষ , বিজ্ঞান
যদি অশিক্ষিত , বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিবিহীন মুনি ঋষিদের
হাতে গিয়ে পড়ে আর তাদের ভিতর সীমাবদ্ধ থাকে তবে সেটা হয়ে যায় তন্ত্র ,মন্ত্র ,কাল
যাদু । আর যদি বিজ্ঞান এর আবিষ্কার ল্যাব এ বসা উচ্চশিক্ষিত ডিগ্রিধারী ব্যাক্তির
দ্বারা আবিষ্কার হয়ে মানুষের কল্যানে ছড়িয়ে যায় তবে সেটা হয় বিজ্ঞানের আশীর্বাদ বা
বিজ্ঞানের আবিষ্কার ।মুলত বিজ্ঞান আর
কালজাদু তন্ত্র মন্ত্র সবই বিজ্ঞানের ভেরিয়েসন বা রুপ , যদি
সত্যিকারের কার্যকরী তন্ত্র মন্ত্র থাকে ।এই মূহূর্তে খেয়াল আসছেনা কিন্তু কোথায় যেন পড়েছিলাম ভারতের কোন এক উপজাতিরা
কোন রকম শিক্ষাজ্ঞান ছাড়াই বংশপরষ্পরাতে প্রাপ্ত জ্ঞান দ্বারা নিখুতভাবে কাটা নাক
জোড় লাগাতে পারতো । ধরুন আপনি এমন একটা শক্তির সন্ধান পেলেন যেটা পৃথিবীতে সবার
অজানা , আপনি এটা যদি নিজের নামে পেটেন্ট করে বাণিজ্যিক উদ্দ্যেশ্যে ব্যবহার করেন
তবে মোবাইল , কম্পিউটার , টেলিভিশন এর মত সারা পৃথিবীর মানুষ ব্যবহার করে উপকৃত
হবে , সাথে আপনি হয়ে উঠবেন মানব ইতিহাসে অমর এবং আর্থিক ভাবে সম্পদশালী।
(22)
কিন্তু যদি এমনটা হয়
আপনি অজানা যে শক্তির সন্ধান পেয়েছেন সেটা গোপন রাখলেন আর সেটার ব্যবহার
একমাত্র আপনি জানলেন তাহলে আপনি অতিমানব বা সুপার ম্যান হয়ে থাকবেন , বা
বংশানুক্রমে বা বিশেষ কোন গোষ্ঠী গঠন করলেন , বিষয়টা এমন যে শুধুমাত্র গোপন সেই
গোষ্ঠীর সদস্যরা আপনার সেই বিদ্যার ব্যাপারে জানলো এবং বংশানুক্রমে সেই গুলো তাদের
ভিতরেই সীমাবদ্ধ থাকলো বা উপযুক্ত উত্তরাধিকার বা সংরক্ষন অভাবে আবিষ্কৃত বিদ্যা
হারিয়ে গেল এরকমটা হতে পারে । অবিশ্বাস্য
হলেও এরকম কেউ বা কিছু আপনার চারপাশে বা আধুনিক পৃথিবীতে ঘুরে বেড়াচ্ছে ।বাংলাদেশ
ও ভারতের কিছু যায়গা , কিছু মন্দির , চীনের সাওলিন টেম্পল ও মার্শাল আর্ট , ইলুমিনাতি
, মায়া সভ্যতা , ফ্রী মেসন , রথসচাইল্ড পরিবার , ভ্যাটিকান এর গোপন লাইব্রেরী , ফারাও
রাজবংশ ও পিরামিড ,ব্যাবিলনীয়,চৈনিক সুমেরীয় সভ্যতা ,ষোড়শ শতকের অজ্ঞাত ভাষাতে লেখা ভয়নেচ পান্ডুলিপি (কি কারনে , কি বিষয়ে বা কেন
লেখা হয়েছিল কেউ জানেনা , তবে ধারনা করা হয় রসায়ন শাস্ত্রের বর্তমান বিজ্ঞানেও নেই
এমন কিছু বিশেষ বিদ্যা এতে বিশেষ কোন ভাষায় লেখা , যেটা প্রচলিত কোন ভাষা নয় ,
কারো বানানো বাক্তিগত ভাষা ), সম্রাট অশোকের
দি নাইন , তিব্বতের(তিব্বত তো এ যুগেও মানুষের কাছে খুব বেশি কিছু না জানা
একটা যায়গা ) ভিক্ষুরা এসবই কালযাদু বা
রহস্যময় সেই ভয়নেচ পান্ডুলিপি
(23)
- গুপ্তবিদ্যার উদাহরন , কলিঙ্গ যুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে সম্রাট অশোক
চিন্তা করলেন তিনি আর যুদ্ধ বিগ্রহ করবেননা ।যতদিন বেঁচে থাকবেন মানব কল্যান ,
জ্ঞান সাধনা আর ধর্ম নিয়ে পড়ে থাকবেন ।দেশের সকল জ্ঞানীদের থেকে বেছে শ্রেষ্ঠ নয়জন
কে তিনি নির্বাচন করলেন ।এইচ জি ওয়েলস বলেছিলেন তার ‘’Outline Of World
History’’ গ্রন্থে যে সকল ভারতবর্ষের ইতিহাসে হাজার সম্রাট থাকতে
পারেন কিন্তু , অশোক এক আকাশে এক তাঁরা হিসেবে আলাদা ভাবে জ্বলবেন ।রক্তপিপাসু
চণ্ডাশোক যিনি কিনা কলিঙ্গ যুদ্ধ দেখে রক্তপাত ছেড়ে দেন। ১৯২৩ সালে আমেরিকান লেখক Talbot
mundy এর the nine unknown
নামে একটা উপন্যাস লেখেন যেটা মুলত এই মিথ নিয়ে লেখা প্রথম
কোন উপন্যাস। এবার আসুন দেখে নিই সম্রাট অশোকের দি নাইন বা নয়জন মহাজ্ঞানী
ব্যক্তিরা কতটুকু জ্ঞানী ছিলেন সে বিষয়ে, এই নয়জনের কাজ ছিল নয়রকম , নয়টি বিষয়ে
তাদের যে জ্ঞান সেটা শুনলে এই আধুনিক যুগেও আপনি শিউরে উঠবেন , বলা হয় আধুনিক
যুগের এত আবিষ্কার এ এই নয়টি বইয়ের অবদান অবশ্যই স্বীকার করতে হবে –
(24)
১। প্রথম বইটিতে
আলোচনা করা হয়েছিল , প্রোপাগান্ডার(প্রচার – হোক সত্য বা মিথ্যা , সেটাকে বিশ্বাসযোগ্য করা ) কলাকৌশল ও মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ
সম্পর্কে। মান্ডি নামক একজন
মনিষীর মতে, ‘বিজ্ঞানের সবচেয়ে ভয়ংকর ট্রিকস
হলো জনগনের অভিমত কে নিয়ন্ত্রণ করা। কেননা
এর সাহায্যে যে কারো পক্ষে সম্ভব সমগ্র বিশ্বকে নিজের মত করে শাসন
করা যুদ্ধ বা চাপ প্রয়োগ না করেই মানুষ কে নিজের
করে নেওয়া ।’
২। দ্বিতীয় বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল শারীরবিদ্যা(ANATOMY) সম্পর্কে , মানুষের
শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের কার্যক্রম এবং বর্তমান শারীরবিদ্যা(ANATOMY) থেকে বাতিক্রম অনেক কিছু ছিল, একটি উদাহরণ হল, সেখানে
ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছিল যে কীভাবে স্রেফ স্পর্শের মাধ্যমে একজন মানুষের প্রাণ কেড়ে
নেয়া সম্ভব । নির্দিষ্ট
কিছু স্নায়ুর কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধ বা পরিবর্তন করে দেয়ার মাধ্যমে মানবহত্যার
এই বিরল পন্থাকে বলা হতো স্পর্শমৃত্যু।মার্শাল
আর্ট কিংবদন্তী ব্রুসলীর মৃত্যূ ও নাকি এই একই কায়দায় হয়েছিলো ।যদিও মৃত্যূর জন্য
কারন বলা হয়েছিল ঔষধের প্বার্শ প্রতিক্রিয়া ও মস্তিষ্কের একটি বিশেষ অংশে ফোলাভাব।
আপনারা হয়তো প্রাচীন চীনে আজ থেকে কমপক্ষে ২৫০০ বছর আগে আবিষ্কৃত আকুপাংচার
পদ্ধতির কথা জানেন নিশ্চয়। এটা হল
এমন এক পদ্ধতি যেটার মাধ্যমে শরীরের নির্দিষ্ট কিছু স্থানে চাপ দিয়ে শরীরের
বিভিন্ন গ্রন্থি গুলোর কার্যক্রম গুলো সঠিক ও পূর্ণ ভাবে পরিচালনা করে , এই
প্রেশার গুলো দিয়ে মানুষের ভালো করাও যায় , ক্ষতিও করা যায়। ধরুন
আকুপ্রেসার মতে আপনার পায়ের তলায় নির্দিষ্ট কয়েকটি পয়েন্টে নির্দিষ্ট মাত্রার চাপ
দিয়ে আপনার লিভার, চোখ, কিডনি এই অঙ্গগুলোর কার্যক্রম এর উন্নতি ঘটানো সম্ভব ,
আবার যদি আপনি পায়ের তলাতে জোরে যদি আঘাত করেন তাহলে , সেটা আবার উপরোক্ত
অঙ্গগুলোর ক্ষতি সাধন করবে এটা নিশ্চিত । তাহলে
আকুপ্রেসার এর এমন কোন বিন্দু আছে যেটা বর্তমান আকুপ্রেসার এর বইগুলোতে নেই , সেই
পয়েন্ট টা এমন হল যে আপনার সাথে কেউ সৌজন্য সাক্ষাতের সময় করমর্দন করলো আর আপনার
হাতে হোক বা কোলাকুলির সময়ে পিঠেই হোক এমন কোন একটা ডেডলি আকুপ্রসার অ্যাপ্লাই
(25)
করলো যে আপনার গুরুত্বপূর্ণ নির্দিষ্ট কিছু
অঙ্গ বা স্নায়ুর কার্যক্রম সেদিন থেকে বন্ধ হয়ে আপনি দু মাস পর মারা গেলেন । একপ্রকার
স্লো পয়জন এর কাজ করলো
আকুপ্রেসার এর সেই গুপ্ত বা হারানো মুদ্রাটি । এরকম কি কোন কিছুর স্বীকার হয়েছিলেন ব্রুস লি ?!!।
inm¨gq- w` bvBb
৩। তৃতীয় বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল অণুজীব বিজ্ঞান(microbiology) ও জৈব প্রযুক্তি(biotechnology) নিয়ে । অণুজীব
বিজ্ঞান(microbiology) কাজে লাগে বর্তমান এর ব্যাকটেরিয়া , ভাইরাস এর গবেষণাতে । এখনকার যত
এন্টিবায়োটিক , বিভিন্ন রোগের ভ্যাকসিন সবই এন্টিবায়োটিক অণুজীব
বিজ্ঞান(microbiology) কল্যানে । আর জৈব প্রযুক্তি (biotechnology) দিয়ে
আধুনিক যুগের যে সব কাজ হচ্ছে টা হল বেকারির কিছু কাজ , brewery(মদ তৈরির কারখানা ) শিল্পে মদ ও বিয়ার তৈরি ,
পেনিসিলিন এর আবিষ্কার এর কাজে ।
(26)
জৈব প্রযুক্তি(biotechnology) এর যাদুকরী দিক টা না
বললেই নয় সেগুলো হল ধরুন শুধুমাত্র একটা গাছের সামান্য কিছু কোষ বা টিস্যু কলা
সংগ্রহ করে একটা পাত্রে রেখে দেওয়া হল আর সেখানে ওই গাছের প্রতিরুপ একটি গাছ তৈরি
হতে পারে , হুবহু একজন মানুষ বা প্রাণীর প্রতিরুপ সৃষ্টি বা ক্লোনিং সবই এই জৈব
প্রযুক্তি(biotechnology) এর অবদান । দূর ভবিষ্যতে
হয়তো এই জৈব প্রযুক্তি(biotechnology) এর কল্যাণে আমাদের কে গরু
বা ছাগলের মাংস খেতে আর পশু জবাই করা লাগবেনা ল্যাব এ একটুকরো গরুর মাংস বা গরুর
মাংশের কোষ থেকে কয়েক মন মাংস তৈরি সম্ভব হবে
।
৪। চতুর্থ বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল রসায়ন ও ধাতুর রূপান্তর বিষয়ে। এক ভারতীয়
কিংবদন্তী মতে , ভারতবর্ষের বিভিন্ন অঞ্চলে
যখন ভয়াবহ রকমের খরা দেখা দিয়েছিল, তখনকার মন্দির গুলো ও
ধর্মীয় ত্রান কার্যক্রমের সাথে জড়িত সংগঠনগুলো কোন এক গোপন উৎস থেকে বিপুল পরিমাণে
সোনা পেয়েছিল। কারন তখন স্বর্ণ দিয়ে
মুদ্রা তৈরি হতো এবং সর্বোচ্চ মানের মুদ্রা ছিল স্বর্ণমুদ্রা । তাহলে কি তথাকথিত
পরশপাথর আবিষ্কারের সুত্র তাদের কাছে ছিল ?
কলিঙ্গ যুদ্ধের প্রান্তর বর্তমান
ছবি ভুবনেশ্বর উড়িষ্যা , দয়া নদীর তীর
(27)
৫। পঞ্চম
বইতে ছিল টেরেস্ট্রিয়াল কিংবা
এক্সট্রা-টেরেস্ট্রিয়াল, যোগাযোগের সব ধরণের উপায় সম্পর্কে বিশদ বিবরণ
দেয়া ছিল । হয়তো
বর্তমানের প্রচলিত সব জ্বীন হাজির করার ব্যাপারটা ছিল এই সবের অন্তর্ভুক্ত । সেটা তখন বাস্তবে হতো , আর
এখন হয়তো শুধুমাত্র তন্ত্র মন্ত্র নামে টিকে আছে । মুল কোন গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়তো
হারিয়ে গেছে । এ থেকে ধারণা করা হয়, Òনয়
Ó নামক রহস্যময় নয়জন মহাজ্ঞানী
বাক্তি এলিয়েন তথা ভিনগ্রহবাসীর অস্তিত্ব
সম্পর্কেও অবগত ছিল । হতে পারে
এলিয়েন হল প্রাচীন গুহাচিত্রের রহস্যময় মানব বা জ্বীন যাই হোক একটা কিছু।
৬।ষষ্ঠ বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল অভিকর্ষ বলের গোপন রহস্য নিয়ে, এবং প্রাচীন
বৈদিক বিমান তৈরীর নিয়মকানুন সম্পর্কে । মানে
কিভাবে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ ভেদ করে বাতাসে ভেসে থাকা সম্ভব এবং কোন উড়ে বেড়ানোর
যন্ত্র আবিষ্কার সম্ভব সেটা বলা হয়েছিল ।
৭। সপ্তম বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল সৃষ্টিরহস্য ও মহাজাগতিক নানা বিষয় বস্তু
নিয়ে। জীবের প্রান , ইচ্ছামত
আয়ু লাভ বা আয়ু দীর্ঘায়িত করা , পৃথিবীর ও প্রানের সৃষ্টি , ঈশ্বরতত্ব অনেক
আধ্যাত্মিক গুঢ় বিষয়ের আলোচনা ছিল এখানে ।
৮। অষ্টম বইতে
আলোচনা করা হয়েছিল আলোর গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে এবং
কীভাবে আলোকে ব্যবহার করা যায় একটি কার্যকরী অস্ত্র হিসেবে । লেসার রশ্মি টাইপের কিছু
একটা না হোক অন্তত আলোর বহুমাত্রিক ব্যবহার সম্বন্ধে এতে বর্ণনা ছিল ।
৯। নবম বইটির
বিষয়বস্তু ছিল সমাজবিজ্ঞান (social
science)। এতে
আলোচনা করা হয়েছিল কীভাবে সমাজের ক্রমবিকাশ ঘটে , এবং কীভাবেই
বা এটি ক্রমান্বয়ে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যেতে পারে বা ধ্বংস হতে পারে । মানে মানব সভ্যতা কিভাবে উৎকর্ষে পৌছায় আবার
ধ্বংস হয়ে , ধ্বংস থেকে শুরু করে আবার উন্নতির শিখরের চক্রে বন্দি সেটাই আলোচনা
করা হয়েছিল ।
(28)
দি নাইন নামক এই সংগঠনের বৈশিষ্ট্য হলো এই রহস্যময় মিথ সংগঠনের সদস্য
সংখ্যা নয়(০৯) জনের বেশি হবেনা । কোন
একজনের মৃত্যু ঘটলেই তবে তার জায়গা নেয় নতুন আরেকজন ।এবং এই নয়জনই ওই পূর্ব
নয়জনের দ্বারা পূর্ব থেকে পর্যবেক্ষন ও পরীক্ষার মাধ্যমে গোপনে মনোনিত । এভাবে
চিরকাল এই নয় রহস্যময়ের
সদস্য সংখ্যা নয়জনই থাকে এবং এই নয়জনের বাইরে তাদের অস্তিত্ব সম্পর্কে
কখনোই কোন মানুষ অবগত ছিল না , বর্তমানে ও নেই আর ভবিষ্যতেও থাকবে না এটাই স্বাভাবিক
, এবং লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকাটা এই সংগঠনের সদস্যদের প্রধান শর্ত । এবং
অবশ্যই গোপন এই সংগঠনের সদস্যদের মানসিক ভাবে সৎ , নির্লোভী , মানবতাবাদী , সংযমী
, এসব মহৎ গুনে ভরা পূর্ব জীবনের রেকর্ড থাকা লাগবে ।কারন এরকম সুপার ন্যাচারাল
ক্ষমতা যদি কোন সামান্যতম দুনিয়ার প্রতি মোহ আছে এমন লোকের হাতে পড়ে তবে মানবজাতির
ক্ষতি মুহূর্তের ব্যাপার মাত্র ।
যদিও কারা এই গুপ্ত সংগঠনের সদস্য সে সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে বলার কোন
উপায় নেই , নিশ্চিত ভাবে আঙ্গুল তোলা
যায় কারো দিকে এমন কোন প্রমান পত্র ও নেই । তারপরও যুগ যুগ ধরে এর অতীত ও
বর্তমান সদস্যদের ব্যাপারে নানা গুজব প্রচলিত রয়েছে। ধারণা
করা হয় , দি নাইন এর সদস্যরা
বর্তমানে সমগ্র বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে , এবং তাদের
মধ্যে অনেকেই বিশ্ব ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণ এবং বিজ্ঞান প্রযুক্তি
মানুষের জন্য কতটুকু নিরাপদ এরকম নিয়ন্ত্রণ এর খুবই উঁচু পদে আসীন রয়েছে ।
আজ পর্যন্ত অসাবধানতা বা অসতর্কতা বশত নয়
রহস্যময়ের সম্ভাব্য সদস্য হিসেবে এখন পর্যন্ত যাদের নাম উঠে এসেছে বা ফাস
হয়েছে , তাদের মধ্যে দশম শতকের
প্রভাবশালী পোপ দ্বিতীয় সিলভেস্টার ও উপমহাদেশে রকেট
বিজ্ঞানের জনক বিক্রম সারাভাই বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। GQvov
w` bvB‡bi M‡elYvq ev AbymÜv‡b divmx AwZc«vK…Z M‡elK jyBm R¨vKwjqU Ges divmx physician
Ges e¨vK‡Uwiqv M‡elK Av‡jKRvÛvi B‡qiwm‡bi
bvg we‡klfv‡e D‡jøL‡hvM¨
তবে নিশ্চিত ভাবে বলা যায়না , এনাদেরকে সন্দেহভাজন
এর তালিকাতে রাখা হয় । আমি আপনি চিরকাল দেখে
(29)
আসছি এমন গোবেচারা মানুষদের ভিতরও লুকিয়ে থাকতে পারে অনেক
আশ্চর্য ক্ষমতা ।হয়তো আমরা বুঝতে পারিনা । কিন্তু আপনার দেখা দিনের গোবেচারা
মানুষটি তো হতে পারে রাতের অন্ধকারে এক অপরাধজগতের সম্রাট ।একটা ঈদের নাটকে ১০ বছর
আগে এ রকম একটা অভিনয় দেখেছিলাম সেজন্য বললাম প্রাচীন বিশ্ব ইতিহাস এর একটু
গভীরে বা মিথ পর্যায়ে পড়াশোনাতে গেলে আপনারা একটা জিনিষ
দেখতে পারবেন যে নিজস্ব জ্ঞানকে কুক্ষীগত করে
রাখাই হলো গুপ্ত সংগঠনগুলোর বা অতি ক্ষমতার মানুষদের
প্রধান কাজ বা অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য । এমনটি আমরা শুধু দি নাইন বা
ইলুমিনাতির ক্ষেত্রেই দেখিনি, দেখেছি প্রাচীন মিশরীয় ফারাউ , তিব্বতীয় মংক বা
সন্ন্যাসী গোষ্ঠী , মায়ান পুরোহিত , মুক্ত ম্যাসন , রোসিক্রুসিয়ান ও আরো
অনেকের ক্ষেত্রেই। তারা তাদের অর্জিত জ্ঞান অন্য
কারও সামনে প্রকাশ করত না বা জনসাধারনের জন্য
উন্মুক্ত করতনা বলেই হয়ে উঠেছিল অদম্য শক্তি বা সুপার
ন্যাচারাল ক্ষমতার অধিকারী। এবং এরকমটিই আমরা দেখতে পাই দি নাইন এর ক্ষেত্রেও। এখন
তাদের কী অবস্থা সে সম্পর্কে আমরা হয়ত অবগত নই , কিন্তু এতটুকু
অনুমান আমরা করতেই পারি যে, যতই
দিন যাচ্ছে, তাদের জ্ঞানের পরিধি ততই আকাশ ছোঁয়া
হচ্ছে বা বেড়েই চলেছে আপনার আমার চোখের
আড়ালে থেকে । একটা ছোট উদাহরণ আপনাদের কে দিই , এখনকার
যুগে এই যে কোকা কোলা কোম্পানি যে কোক তৈরি করে , বা সেভেন আপ তৈরি করে , বা
মিরিন্ডা তৈরি করে এদের স্বাদ দেখবেন পুরো পৃথিবীর অন্যান্য সকল সফ্ট ড্রিংকস থেকে
ভিন্ন , অন্যরা তৈরি করলে এদের কাছাকাছি হয় কিন্তু এদের সমান হয়না ।এ রকম
বিখ্যাত অনেক খাবার পণ্য , ইলেকট্রনিক্স পণ্য , মোবাইল অনেক কিছুই
আপনি পাবেন যেগুলো ফর্মুলা জানা স্বত্তেও এবং একই পার্টস দিয়ে তৈরি পণ্য
কোম্পানীভেদে দীর্ঘস্থায়িত্ব ও সার্ভিস কম বেশি হয়ে থাকে । ঔষধ ও কসমেটিক্স এর
উপাদান বা ফর্মুলা সব কোম্পানীরই একরকম , কিন্তু কোন কোম্পানীর ঔষধ বা কসমেটিক্স এ
মানুষ উপকার একটু বেশি পায় কেন ? সার্বজনীন সুত্রের বাইরে গিয়ে তারা কিন্তু
আলাদাভাবে তাদের গবেষকদের দিয়ে চিরকাল সুত্র অতি গোপনীয় রেখে কোম্পানীকে শীর্ষ অবস্থানে
রাখে । তেল মসলা
(30)
তো সব রাধুনীই তরকারিতে ব্যবহার করে থাকে
,কিন্তু সবার রান্না কি স্বাদের হয়ে থাকে
? ফ্রাইড চিকেন তো এখন প্রায় প্রতি মোড় এ পাওয়া যায় |কিন্তু কেএফসি
কেন অনন্য ? একটা কথা শুনেছিলাম যে কোকা কোলা কোম্পানির
পানীয় তৈরির সুত্র জানতো মাত্র দুজন , এবং তাদের দুজনের এক বিমানে চড়া থেকে শুরু
করে একসাথে কোন স্থানে যাওয়া বা মিলিত হওয়া পর্যন্ত নিষিদ্ধ । এ সবই এক কায়দার
গুপ্তবিদ্যার উদাহরণ।আচ্ছা প্রতিভাবান যে সব লোকেরা আছেন তারাও কিন্তু এক
প্রকার গুপ্তবিদ্যার উদাহরণ তারা নিজেরাও কিন্তু তা বুঝতে পারেননা ।যদি বলেন কেমন
, তাহলে বুঝিয়ে বলি ধরুন আপনি শত চেষ্টা করে গলাতে নতুন সুর বা ভালো সুর আনতে
পারেননা ।কিন্তু যিনি একজন ভালো সুরকার বা ভালো কন্ঠশিল্পী তার ছোয়াতে কিন্তু সাথে
সাথেই সেটা সুমধুর হয়ে ওঠে , কিন্তু তিনি নিজেও অ্যাকচুয়ালি কিভাবে তার কন্ঠে
সুন্দর সুর আসে সেটা আপনাকে শেখাতে পারবেননা বা নিজেও বুঝতে পারবেনা।আবার টিভিতে
দেখেন কোন খেলোয়াড় প্রচন্ড গতিতে বল করছে , আপনি কিন্তু চাইলেই বা ০৫ বছর প্রাকটিস
করলেও ওরকম হতে পারবেন এটা মোটেই বলা যাবেনা।কারণ ওই বোলার এর এমন একটা পেশী বলটা
ছোড়বার জন্য প্রচন্ড ফোর্স তৈরি করছে যেটা বোলার নিজে বোঝাতো দুরে থাক বিজ্ঞান ও ধরতে পারবেনা । আচ্ছা এখনকার বিজ্ঞানীরা কি সব
আবিষ্কার আমাদের হাতে ব্যাবহারের জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছেন , রসায়নের সব
সুত্র কি স্নাতোকোত্তর পর্য্যন্তর বইয়েও আছে ? এই প্রশ্নটার উত্তর একটু ভেবে বলুন তো । আমার
মনে হয় যতটুকু মানবজাতির জন্য জানা নিরাপদ ততটুকুই আমরা পাঠ্যবইয়ে পাই ।
৫৯)
পুনর্জন্ম বলে কি কিছু থাকে ? আচ্ছা যদি থাকে তবে পুর্বের জন্ম ভুলে যাই কেন ,
আচ্ছা আপনি কি বলতে পারবেন আজ থেকে ০৫ বছর
আগের অমুক তারিখে সকালে কি খেয়েছিলেন ? দুপুরে কি খেয়েছিলেন এগুলো কেও হঠাৎ করে
জিজ্ঞাসা করলে কি বলতে পারবেন ? অথচ আপনি
তো ওই দিনে খেয়েছেন , ওই দিন ফেলে এসেছেন, তাহলে মনে নেই কেন ? তবে বিশেষ বিশেষ
কিছু জিনিস,
(31)
বিশেষ কিছু দিন
আমাদের মনে থাকে, তেমন ভাবে আমরা স্বপ্নে
মাঝে মাঝে অপরিচিত মানুষের মাঝে নিজেকে দেখি, অপরিচিত সাজে নিজেকে, অপরিচিত মানুষ,
অপরিচিত পরিবেশ, অপরিচিত স্থানে দেখি এগুলো কি কোন জনমের ভুলে যাওয়া বা হারিয়ে
যাওয়া কোন দিন ? সুদুর অতীতে হারিয়ে
যাওয়া ফেলে আসা সেই দিন ? কে জানে,শুধু বাজে যুক্তি
দেখালাম আর বিনোদন দিলাম মাত্র ,
বিনোদন নিন পড়ে, বাস্তব না ভাবাই ভালো, কারন একটা কথা আছে যত মত তত পথ, সবার সাথে
সবার চিন্তা মিলতে হবে এমন কথা নেই, টিভি, সিনেমা, নাটক, ইন্টারনেট ফেসবুক ,বই পত্র সবই হলো
বিনোদনের জন্য, এগুলোর সব সত্যি হতে হবে এমন কথা নেই। শুনেছি পৃথিবীতে একটা
মানুষের মত দেখতে ০৭ টা মানুষ থাকে যাদেরকে বলে Doppelgangers বলে, এই Doppelgangers বা চেহারার মিল আপনার
সমসাময়িক সময়ের মানুষ হতে পারে, বা আপনার
সেই Doppelgangers টি হতে পারে আপনার থেকে কয়েক হাজার
বছর আগের বা আপনার মত দেখতে মানুষ টি আসতে পারে আরো ৫০০ বা হাজার বছর পর , তো আসুন
Doppelgangers দের কয়েকটি ছবি দেখা যাক –
কে বিজয় প্রকাশ আর কে শান আলাদা করুন দেখি
(32)
দক্ষিন আফ্রিকান পেসার ডেল স্টেইন জেমস বন্ড তারকা ড্যানিয়েল ক্রেইগ
দুজনই বিখ্যাত মার্কিন অভিনেত্রী,
(33)
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটার নাসের হুসেইন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
১ম বিশ্বযুদ্ধের একজন সৈনিক , ২য় বিশ্বযুদ্ধের একজন সৈনিক , এবং বর্তমানের রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন
(34)
(35)
বামের জন ১৯৬০ এর দশকের মহিলা জুডি জিপার আর ডানের জন লিওনার্দো ডি ক্যাপ্রিও
বামের জন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা , আর ডানের জন ইন্দোনেশিয়ার ইলহাম আনাস
(36)
বামের জন বেস্ট অ্যাকশন হিরো
সিল্ভেস্টার স্ট্যালোন , ডানের জন এর ছবি ইটালিয়ান চিত্রশিল্পী রাফায়েলের ১৫০০
সালের একটি চিত্রকর্ম থেকে নেওয়া
এই চিত্রকর্মটি পোপ ৯ম গ্রেগরি এর
একটি ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জগৎবিখ্যাত ইটালিয়ান চিত্রকর রাফায়েল(১৪৮৩-১৫২০ ইং ) এর
হাতে ১৫১১ সালে অংকিত , এই চিত্রের সর্ববামের লোকটি কে সিলভেস্টার স্ট্যালোন এর মত
লাগছে কি ? রাফায়েল এবং সিলভেস্টার স্ট্যালোন দুজনই ইটালিয়ান
(37)
রেসলার শন মাইকেল ও বলিউড
লিজেন্ড অক্ষয় কুমার
বিশ্বাস করুন আর
নাই করুন আমি কিন্তু বলিউড হিরো ঋত্বিক রোশনের একজন DOPPELGANGER কে আমাদের যশোর এর ঘোপ নওয়াপাড়া রোড এ দেখেছি বেশ
একটু বড় হয়ে, ২০০৩ থেকে ২০০৫ সালের ভিতর প্রায়ই স্কুলে আসা যাওয়ার পথে অবাক
হয়ে ওনাকে দেখতাম , বেশ স্মার্ট আর ধনী
পরিবারের ছেলে বলে মনে হতো ওনাকে ।আবারও বলছি, ৯০% মিল বলিউড হিরো ঋত্বিকের ফেস
এর সাথে, এখনো উনি আছেন কিন্তু এখন হয়তো বয়সের
কিছুটা ছাপ পড়তে পারে ওনার চেহারাতে। পরিচয় না থাকাতে ওনার ছবিটা দিতে পারলাম না ।
তো এখন কি আর বলবো বলুন, কাকতালীয় ব্যাপার, DOPPELGANGER,
পূর্বজন্ম পরজন্ম যাই বলিনা কেন, সাধারন ব্যাপার হলেই বা কি আর পূনর্জন্ম হলেই বা
কি ? পূর্বের কিছু যেহেতু আমাদের মনে থাকেনা, সেহেতু পূনর্জন্ম হলেই বা কি লাভ
। আমাদের বর্তমান জীবনের স্মৃতি তিলে
তিলে ক্ষয়ে যায়, এক সপ্তাহ আগের অনেক কিছুই আমরা ভুলে যাই, অতীত জীবনের কিছুই তো
আমাদের মনে থাকছেনা, তার থেকে একটাই মানুষ, একটাই জীবন, একটাই জন্ম, জীবন টা
সূন্দর লাইফ ইজ বিউটিফুল, এটাই মেনে নেওয়া ভালো ।
(38)
৬০)একটা তর্ক প্রায়ই লেগে আছে যে মহাবিশ্বে মানুষ ছাড়া আর কোন বুদ্ধিমান প্রানী বা জীব
আছে কিনা ।অবশ্যই আছে, কারন কি জানেন, কারন জীব হতে হলেই
যে মানুষের মত খাওন,চলন এবং বেঁচে থাকার পরিবেশ হতে হবে এমন কারন নেই । সেটা মানুষ তার জ্ঞান সীমাবদ্ধতা বা মাত্রার সীমাবদ্ধতার কারনে বুঝুক আর না
বুঝুক । আর ২য় যুক্তি হলো আমাদের গালাক্সী তে ৩০০ বিলিয়ন
এর মত তাঁরা বা গ্রহ নক্ষত্র আছে । এই গ্রহ
নক্ষত্রের ০৫ টি গ্রহ বা নক্ষত্রের যদি প্রতি একটি তেও পানি থাকে তবুও সম্ভাবনার
গ্রহ হয় ৬০ বিলিয়ন ।আমাদের গ্যালাক্সী ছোট তাই এই অবস্থা। এমন এমন গালাক্সী আছে যাদের তাঁরা ০১
ট্রিলিয়ন ।আমাদের এই মহাবিশ্বে ১৭০ বিলিয়ন (০১
বিলিয়ন =১০০,০০,০০,০০০) গালাক্সী আছে।
প্রত্যেক গালাক্সী যদি এক ট্রিলিয়ন গ্রহ নক্ষত্র ধারন করে
তবে ২৩৮,০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০,০০০ টির মত গ্রহ তাঁরা নক্ষত্র আছে ।এর একটিতে ও কি থাকবেনা কেউ ? ।আর আপনি আমি কোন কিছুর সন্ধান পেতে পেতে অনেক সভ্যতা ধংশ হয়ে যাবে ।কারন আমাদের অনুসন্ধানী যান দিয়ে পৌছাতে পৌছাতে দেখা গেল এমন এক গ্রহে জীবন
আছে সেখানে পৌছান আমাদের হিসাবে এবং যন্ত্রের ক্ষমতাতে ০৫ বিলিয়ন বছর লাগবে
। সেই সভ্যতার আপনি কিভাবে সন্ধান পাবেন , কেউ যদি থেকে থাকে পৃথিবীর মানুষের
মত, অনেক সময় ভিনগ্রহে প্রান খুজতে বা রেসপন্স পেতে নানা রকম তরঙ্গ ব্যবহার করেন
বিজ্ঞানীর, কিন্তু এটা যে ভিনগ্রহীরা বুঝবে এমন কথা আছে না কি ? ধরুন সুর্যের তাপ দিন কে দিন বাড়ছে ।একসময় দেখা গেল পৃথিবীর তাপ বসবাসের উপযুক্ততা ছাড়িয়ে গেছে , তখন আমাদের কে
অন্য গ্রহ দেখতে হবে । অনেক বিজ্ঞানী বলেন আমাদের মানব সভ্যতা পুরনো
কোন গ্রহের উপনিবেশ মাত্র । আর একটা জিনিস
মাত্রা বলে একটা জিনিস আছে সেটা যদি আমরা আয়ত্ত করতে পারি
তবেই আমরা অনেক রহস্য ভেদ করতে পারব,নচেৎ এই সুবিশাল ভাবনার
অতীত মহাবিশ্বের কিঞ্চিত পরিমান রহস্য আমরা ভেদ করতে পারবনা । পরিষ্কার ভাবে আপনাদের সাথে বিভিন্ন মাত্রা নিয়ে আলোচনা করি, আমরা তৃতীয়
মাত্রার আর আমরা তৃতীয় মাত্রার পর্যন্ত দেখতে পাই, কিন্তু যদি মাত্রা হয়ে যায় ১০টি মানে ১০ম মাত্রা
পর্যন্ত যদি মানুষ ধরতে পারে তবে কি হতে পারে ? আসুন দেখে আসি –
(39)
প্রথম মাত্রাঃ প্রথম
মাত্রার প্রাণী হলে আপনি শুধু কোন একটি সরলরেখা বরাবর দেখতে ও চলতে পারবেন। আপনার জগত হয়ে যাবে ওই সরলরেখার মধ্যে। আপনার জগতের বিজ্ঞানীরা তত্ত্ব দিবে যে, আমাদের
এই মহাবিশ্ব সরলরৈখিক। বিগব্যাং
এর পর কোন এক কারনে মহাবিশ্বের সকল পদার্থ সরল রেখাকেই বেছে নিয়েছে। আপনিও কিন্তু হুট হাট করে বিভিন্ন বস্তুকে আপনার জগতে আসতে এবং উধাও
হয়ে যেতে দেখতেন।
দ্বিতীয় মাত্রাঃ অসীম সংখ্যক একমাত্রিক সরলরেখা পাশাপাশি
স্থাপিত হয়ে একটি দ্বিমাত্রিক সমতল তৈরী হয়। দ্বিমাত্রার
প্রাণী হলে আপনার কাছে মহাবিশ্ব হবে দ্বিমাত্রিক। আর মজার ব্যাপার হলো, আপনি তখন চাইলেই শূণ্য ও
প্রথম মাত্রার প্রাণীকে ভয় দেখাতে পারবেন।
আপনি যখন প্রথম
মাত্রার প্রাণীর অবস্থিত রেখা বা শূণ্য মাত্রার প্রাণীর অবস্থিত বিন্দুর উপর দাঁড়াবেন, তখন
তারা আপনাকে দেখতে পারবে। কিন্তু
যদি একটু সরে যান তখন আর আপনাকে দেখতে পারবেনা তারা।
তৃতীয় মাত্রাঃ
ত্রিমাত্রিক প্রাণী সম্পর্কে শুধু একটি কথা বলাই যথেষ্ট। মানুষ ত্রিমাত্রিক প্রাণী। আমরা
ত্রিমাত্রিক প্রাণী বলেই আমরা কোয়ান্টাম মেকানিক্সকে বুঝতে পারিনা। কারন কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কাজকর্ম আরও বেশী মাত্রায় ঘটে থাকে। নোবেলবিজয়ী বিখ্যাত মার্কিন পদার্থ বিজ্ঞানী
রিচার্ড ফাইনম্যান(১৯১৮-১৯৮৮) তার THE CHARACTER OF
PHYSICAL LAW -(1965) গ্রন্থে বলেন আমার নিশ্চিত
ভাবে মনে হয় কোয়ান্টাম মেকানিক্স কোন বাক্তিই বুঝতে পারেনা। তাহলে বুঝুন ব্যাপারটা কত জটিল যে এই বিদ্যা দ্বারা সঙ্ঘটিত কোন
ঘটনা মানুষের বোঝার ক্ষমতার বাইরে, এটা নিয়ে আমরা শুধু পড়াশোনা করছি মাত্র,
আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতা তত্ত যখন আবিষ্কার হয়েছিল তখন সেটা বুঝত খুব কম লোকেই,
কিন্তু সেটা সর্বসাধারণের বোঝার পর্যায়ে আসতে গিয়ে মানুষের বিজ্ঞান প্রযুক্তি কে
অনেক উন্নত হতে হয়েছে ।যেমন ৪০ বছর আগে মানুষ মোবাইল নামক কিছু
আবিষ্কার হতে পারে এটা চিন্তাও করতে পারেনি,
(40)
তার বিহীন ভাবে হাজার মাইল
দূর থেকে কথা বলাটা বিস্ময় বটে, যেখানে শুধু আলাদা নাম্বার এর উপর ভিত্তি করে আলাদা
নির্দিষ্ট বাক্তির নাম্বার এই ফোন যাচ্ছে, আকাশ পথে কোথাও সংঘর্ষ হয়ে এক নাম্বার
আরেক নাম্বার এর বাক্তির কাছে যাচ্ছেনা, আপনার আমার পাশের খালি যায়গাটা যে রহস্যময়
একটা কিছুতে পূর্ণ বা আপনি আমি যে অদৃশ্য
কোন মাধ্যমের ভিতর বসবাস করছি সেটা এই মোবাইল বা টিভি না দেখলে বোঝা যেতনা ।
চতুর্থ মাত্রাঃ যদি আপনি চতুর্থ
মাত্রার ঘনক তৈরী করতে চান তবে আপনাকে অসীম
সংখ্যক ত্রিমাত্রিক ঘনক পাশাপাশি যুক্ত করতে হবে। চতুর্মাত্রিক পদার্থ সময়কে অতিক্রম করতে পারে । অর্থাৎ আপনি যদি
চতুর্মাত্রিক প্রাণী হোন, তাহলে আপনি চাইলেই অতীতে অথবা ভবিষ্যতে যেতে
পারবেন।
মানে সময় ভ্রমন(TIME TRAVELL) সম্ভব
হবে। এভাবে আপনি চাইলেই অতীতে গিয়ে কোন
কিছু পরিবর্তন করে বর্তমানকে পরিবর্তন করতে পারবেন । অবশ্য টাইম মেশিন বা টাইম ট্রাভেল এর এই
তত্ত্বটা পারষ্পরিক সাংঘর্ষিক ।কারণ আপনি পিছনে যাবেন সমস্যা নেই , কিন্তু বর্তমান
পরিবর্তন করার মতো কিছু করলে পৃথিবী ধ্বংস হতে সময় লাগবেনা ,কারণ মানব যার যার
ইচ্ছামতো পৃথিবীর পরিবর্তন করলে শেটা নিশ্চয় কারো জন্য হিতকর হবেনা ব্যাপারটা ।
পঞ্চম মাত্রাঃ পঞ্চম
মাত্রায় গেলে আপনি আপনার সমান্তরাল ভবিষ্যতগুলোতে যেতে পারবেন। মানে ধরুন আপনার এখন মনে হলো যে, এখন আপনি প্রিয়ার হাতে
হাত রেখে সমুদ্রে জ্যোৎস্না স্নান করবেন, তাহলে এখন আপনি
মূহুর্তের মধ্যেই দেখবেন আপনি প্রিয়াকে নিয়ে সমুদ্রের পাড়ে বসে আছেন। মানে বাপারটা আলাদীনের চেরাগ পাওয়ার মত । তার
জন্যে অতীতকে যেভাবে পরিবর্তন করা দরকার হবে, অতীত নিজেই সেভাবে
পরিবর্তিত হয়ে যাবে। ব্যাপারটা
খুবই মজার । আরেকটা বিষয়ে বলি তা হলো, কোয়ান্টাম মেকানিক্সের কাজ হচ্ছে পঞ্চম
মাত্রায়। যে কণা পঞ্চম মাত্রার উপর যতো বেশি
দখল রাখবে, সেই কণা ততো বেশী তরঙ্গধর্ম প্রদর্শন করে । ফোটন কণা পঞ্চম মাত্রায় থাকে বলেই একটি
ফোটন কণা একই সময়ে ভিন্ন যায়গায় অবস্থান করতে পারে।
(41)
ষষ্ঠ মাত্রাঃ ষষ্ঠ
মাত্রায় আপনি বিগব্যাং বা মহাবিষ্ফোরণ এর পর
এই মহাবিশ্বের যে কোন সময়ে চলে যেতে পারবেন। আপনি
হয়তো চিন্তা করতে পারেন, এই কাজ আপনি চতুর্থ মাত্রাতেই করতে পারবেন। হুদাই ষষ্ঠ মাত্রাতে যাবার কি দরকার? আসলে আপনি চতুর্থ
মাত্রা ব্যাবহার করে অতীতে যেতে পারবেন, কিন্তু নিজের
জন্মের আগে যেতে পারবেন না। নিজের
জন্মের আগে যেতে হলে আপনাকে ষষ্ঠ মাত্রাতেই যেতে হবে । বিভিন্ন জ্ঞানী
স্কলাররা মনে করেন কাউকে যদি হিন্দুদের দেবতা শিবের মত ক্ষমতার অবতার হতে হয় তবে
তাকে কমপক্ষে এই ষষ্ঠ মাত্রার ক্ষমতাবান বা ষষ্ঠ মাত্রার মানুষ বা সৃষ্টি বা এলিয়েন হতে হবে ।
এ রকমটা ভেবে অনেক বিজ্ঞানীরা বা
ভারতীয়রা, গ্রীক, ইনকা, মায়া সভ্যতাতে অবতারদের সাথে
এক্সট্রাটেরেস্ট্রিয়াল এবং প্রাচীন
অ্যাটমিক এনার্জির সন্ধান পান ।এ রকম একটা বিস্ফোরক ব্যাপার ঘটে ভারতীয় বর্তমান
সময়ের বিখ্যাত যোগী সাধুগুরু(jaggi vasudev)এর রহস্য অনুষ্ঠান MYSTIC OF
INDIA তে অভিনেত্রী
কঙ্গনা রণৌত এর উপস্থিতির একটি c‡e©| এই অনুষ্ঠানটিতে ভারতের সকল নামী ব্যাক্তিত্বের উপস্থিতি ও আধ্যাতিক আলোচনা
লক্ষনীয় ।ইচ্ছা হলে আর কঙ্গনার নিজ ভাবনার বা মতামতের
ভুল কথা ছাড়া কিছু মনে না করলে জাস্ট জানার জন্য এই ভিডিও লিংকটি আপনার ব্রাউজারে
পেস্ট করে দেখতে পারেন । মনে হয় নিছক আলোচনা ক্ষেত্রে বেফাস মন্তব্য করে ফেলেছেন ,যেমনটা
হয় আমাদের দেশে শাহরিয়ার নাজিম জয়ের উপস্থাপনায় সেন্স অফ হিউমার অনুষ্ঠানে।
সঠিক মত হিসেবে বলেননি। লিংকটি https://www.youtube.com/watch?v=rRKMqFPI8sI/হিন্দী ভালো বুঝলে
কঙ্গনা রণৌত এর এই পর্বটি পুরো দেখলে অনেক জ্ঞানমুলক ব্যাপার সম্বন্ধে আপনি
জানতে পারবেন ।
সপ্তম মাত্রাঃ সপ্তম মাত্রার প্রাণী হলে আপনি বা আমি আমাদের মহাবিশ্ব
এমন না হয়ে অন্য যেমন হতে পারতো সেই সকল মহাবিশ্বে যেতে পারতাম ।
অষ্টম মাত্রাঃ অষ্টম মাত্রায় গেলে আপনি যেতে পারতেন অন্য যে কোন
সমান্তরাল মহাবিশ্বে (PARALLEL
UNIVERSE )।
(42)
নবম মাত্রাঃ নবম মাত্রায় যদি আপনি কখনো যেতে পারেন তবে আপনি যেকোন
মহাবিশ্বের যে কোন সময়ে চলে যেতে পারবেন। তবে অষ্টম মাত্রা ও ষষ্ঠ মাত্রা ব্যাবহার করেও কাজটি আপনি করতে
পারতেন। অষ্টম মাত্রা ব্যাবহার করে অন্য কোন
মহাবিশ্বে এবং পরে ষষ্ঠ মাত্রা ব্যাবহার করে সেই মহাবিশ্বের যে কোন সময়ে যাওয়া
সম্ভব। তবে এটি একটু সময় সাপেক্ষ। নবম মাত্রা দিয়ে আপনি মুহুর্তেই যে কোন
মহাবিশ্বের যে কোন সময়ে যেতে পারবেন। ওহ মাই
গড, এগুলো কি ভাবা যায় !!!!!! এগুলো সব স্ট্রিং থিওরি এর কথা ।স্ট্রিং থিওরি এর মতে এই মাত্রা ১০ টি মতান্তরে ১১ টি ।
তবে এই বিজ্ঞানের দেওয়া মাত্রার
সঙ্গা থেকেই বুঝুন কেন আল কোরআনে স্রষ্ঠাকে মহাজ্ঞানী বলা হয়, মাত্রার সঙ্গাতেই যদি কোন কিছুর ইচ্ছা
বা কল্পনা করলে হতে পারে তাহলে স্রষ্ঠার বাণী হও বললেই সব সৃষ্টি হয়েছে সেটা সত্য
হবেনা কেন ? এই মাত্রার এই ব্যাপারটা আমি বুঝিনা, আমি বুঝি অন্যভাবে আমি যেভাবে
বুঝি সেটা এই বইয়ের পরবর্তী অংশে আছে ।
আমরা জানি বল (FORCE) হল চার প্রকার, মহাকর্ষ বল, তাড়িত
চৌম্বক বল , সবল নিউক্লীয় বল, দূর্বল
নিউক্লীয় বল । কিন্তু আরো একটা বল আছে যেটা এই সকল বলগুলোর একটা কমপ্লেক্স, কিন্তু
এই বলগুলোর একটাও না । বলা হয় প্রাচীন মিশরীয় ফারাউরা এই বল কিছুটা হলে ধরতে
শিখেছিল ।
২০১৭ তে হাঙ্গেরীর পদার্থবিদ আটিলা ক্রাজনাওর্ক্ প্রোটন কণাকে লিথিয়াম – ৭ নামক লিথিয়ামের আইসোটোপ দিয়ে আঘাত করে উৎপন্ন হওয়া পরীক্ষার
ফলাফলে ফিফথ ফোর্সের কিছুটা আচ পান । হয়তো দুর ভবিষ্যতে ওনার এই সুত্র ধরে
মানুষ রহস্যময় ক্ষমতাধর ফিফথ ফোর্সকে আয়ত্ব করে ফেলবে ।
চোখ, কান, নাক,
জিভ, ত্বক এই পাঁচটি ইন্দ্রিয় মানুষের। কিন্তু আরও একটা ইন্দ্রিয় আছে মানুষের,
ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়, সেটাকে অনেকে বলতে চান আমাদের মন বা মস্তিষ্ক ।কিন্তু এক্সাকটলি
আমাদের মন বা মস্তিষ্ক ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় নয়। তবে কী ? সেটার আলোচনা আমিও করতে পারবো
কিছুটা, কিন্তু সেটা করতে গেলে আলোচনার কলেবর অনেক বেড়ে যাবে। তবে গবেষক দের মতে
আমাদের মস্তিষ্কের বিশেষ একটি অংশ ষষ্ঠ ইন্দ্রিয়ের কাজ করে। অনেকে এটাকে অবসেন্স
মাইন্ড বা অবচেতন মন বলে থাকেন । কিন্তু এটা সেটাও না। ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় ক্ষমতা ০৫ টি
সুপার ন্যাচারাল
(43)
বিদ্যা/বিষয়ের
সমষ্টি(টেলিপ্যাথি, মাইক্রেমেট্রি,প্রিকগনিশন,রিকগনিশ্ন, ক্লিয়ারভয়েন্স )। তবে
ব্রুস উইলিসের ÔÔ দি সিক্সথ সেন্স ÕÕ(১৯৯৯)মুভি দেখলে এটা সম্বন্ধে কিছুটা অনুমান আপনি পেতে পারেন । সিক্সথ
সেন্সের অধিকারীরা ভূত দেখা , মৃত মানুষের আত্বা দেখা, কারো মৃত্যূ সম্বন্ধে ভবিষ্যতবাণী সহ অসীম
স্মৃতিশক্তির অধিকারী হতে পারেন । কেউ বলেন এটা সাইকোপ্যাথ জাতীয় সমস্যা, কেউ বলেন
এটা অবিশ্বাস ও করা যায়না , কালেভদ্রে অনেক সময় মেলে ব্যাপারটা বলে ।
৬১) পুরাণ কি ? পুরাণ কি মিথ্যা ? পুরাণ কি শুধু মিথ ? পুরাণ কি শুধু উপকথা রুপকথা ? মোটেই
না পুরাণ সুদূর অতীতের এক হারিয়ে যাওয়া সত্য, সুদূর অতীতের হারিয়ে যাওয়া এক অকাট্য বাস্তব ।ইলিয়ড,অডিসি,
ট্রয়, রামায়ন মহাভারত,আটলান্টিস কিছুই মিথ্যা নয় । মিথ্যা যদি হত তাহলে ইরাম, ট্রয়, মহাস্থান গড়, উয়ারি বটেশ্বর,
হেরাক্লিওন পুনরায় আবিষ্কার হতোনা । তাহলে পুরাণ মিথ্যা
কেন হয়ে যায়, গুরুত্ব কেন হারায় ? এই
কারনে হারায় যে পৃথিবীতে চিরকাল আজ চলে
গিয়ে নতুন এক আগামী আসছে, সেই আগামীর
জিনিষের কাছে পিছনের জিনিষ গুরুত্ব হারিয়ে ফেলে ।গুরুত্ব হারানো সত্য ইতিহাসের নামই পুরাণ
।আমাদের এই সভ্যতায় একমাত্র চুড়ান্ত উন্নত সভ্যতা নয় , এই সভ্যতার জন্মের আগেও
অনেকবার পৃথিবীতে আমাদের মত বিজ্ঞানময় আধুনিক সভ্যতার জন্ম হয়েছে , ভিন্ন কারনে তা
আবার ধ্বংশ ও হয়ে গিয়েছে ।
আপনার দাদা আর তার দাদার
নাম ঊর্ধে আপনি জানেন কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার দাদার
নাম আপনি জানেন না বলে তিনি ছিলেননা, ব্রিটিশ শাসনের দাপটে আজ থেকে ৪০ বা ৫০ বছর আগের বইয়ে আমরা ব্রিটিশ শাসন ভালভাবে পড়তাম,
তারপর এল পাকিস্তান শাসন, তারপর আমরা এখন পড়ি ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আমাদের কাছে কিন্তু
ব্রিটিশ ইতিহাসের মুল্য প্রায় উঠে গেছে
, মৌর্য ,গুপ্ত ,পাল এসব শাসন ইতিহাসে
উল্লেখ আছে, কিন্তু গুরুত্ত হারাতে হারাতে আজ এগুলো পুরাণ এর পাতায় চলে গেছে, আচ্ছা ১৭৫৭ সাল এর ২৩ শে জুন
নবাব সিরাজ উদ্দৌলা হেরে যান, কিন্তু
পলাশী দিবস তো
কেও পালন করিনা,কারন এটা ও গুরুত্ত হারিয়ে ফেলেছে , এভাবে আমরা ১৯৭১ এ স্বাধীন হয়েছি তাই ১৯৭১ এর এত দাম ,কারণ এটা নিকট
বা বর্তমানের স্বাধীনতা।
(44)
? আর ভৌগলিক
কারনে বাংলাদেশ কখন যদি মানচিত্র পরিবর্তিত হয় তবে ইতিহাস তো আরো বদলে
যাবে । হয়তো পানির নিচে ডুবে
অনেক যায়গা হারিয়ে যাবে, আমাদের বাংলাদেশের অনেক যায়গার পুর্ব নাম তো আমরা ভুলে গেছি সেগুলো
গুরুত্ত হারিয়েছে, আচ্ছা যদি বলি বাংলাদেশের চন্দ্রদীপ যাব,
বা যদি বলি খলিফাতবাদ যাব, এগুলো যথাক্রমে বরিশাল এবং যশোর
এর পুর্ব নাম, এই নাম গুলো কিন্তু পুরাণ এর উদাহরন ।আর গঙ্গারিডি নামটা তো পুরাণ এর খাতাতে চলে গেছে, এই গঙ্গারিডি দখল করতে সম্রাট
আলেক্সান্ডার দ্যা গ্রেট এসে ফিরে গিয়েছিলেন না পেরে সেটা কজন জানে, যশোর এর বর্তমান দড়াটানা মোড়ের ভৈরব নদে একসময় মিসরীয় নাবিকরা ২০০০-৩০০০ বছর আগে নৌকা ভেড়াতো বাবসার জন্য এগুলো কে জানে, এগুলো ও কিন্তু সেই
পুরাণ এর উদাহরন ।
পূরাণ হলো সেই সব ঘটনার বা ইতিহাসের সমষ্টি যেটা বাস্তব
সত্য হওয়া স্বত্তেও কালের আবর্তে গুরুত্ব হারাতে হারাতে এক সময় রূপকথা হয়ে যায় ।
৬২) বর্তমানের বড় বন জঙ্গল ,নদী সাগর মহাসাগর, বর্তমানের বড় মরুভুমি
,বর্তমানের উত্তর মেরু দক্ষিন মেরুর বরফ ঢাকা অঞ্চল সবগুলো
কিন্তু একসময়ের মহাসভ্যতার কবর মানে একসময় এই যায়গাগুলোতে নির্ঘাত বড়
বড় সভ্যতা ছিল ।দেখা যায় সুন্দরবন এর যায়গাতে ২০০০ বছর আগে সুন্দরবন ছিলনা , ছিল ব্যস্ততম জনকোলাহল এর যায়গা , ০৫
হাজার বছর আগে সাহারা বা মধ্যপ্রাচ্যের মরুভুমিতে হয়ত ব্যস্ততম এবং সুজলা সুফলা কোন সভ্যতা ছিল ।আটলান্টিক মহাসাগরের যায়গাতে আটলান্টিস ছিল ।
৬৩) মহাশূণ্যের গন্ধটা কেমন,
মহাশূণ্যে যখন নভোচারীরা বের হন তখন ওই যে ওয়েল্ডিং বা ঝালাইয়ের দোকানে লোহা পোড়া
যে গন্ধ বের হয় সেই রকম গন্ধ ।আর গ্যালাক্সী গুলোর কেন্দ্রের থেকে রাসপবেরীর গন্ধ
আসে । মূলত ইথাইল ফরমেটের(C3H6O2) অস্তিত্ব থেকে ই এই গন্ধ আসে ।
৬৪) ভিডিও
ব্যাপারটা বা ছবি তোলার ব্যাপারটা অদ্ভুত মনে হয় না, ব্যাপারটা আপনার আমার কাছে কত
সাধারন একটা ব্যাপার, কিন্তু এটা কত সহজ ভাবে আমাদের সময় কে ধরে রাখছে , এর পিছনে
কত জটিল একটা সমীকরণ কাজ করে
(45)
জানেন ? আপনি
যদি কোন ভিডিও দেখেন তবে সেই ভিডিওর প্রত্যেকটি সেকেন্ড
অন্তত পক্ষে ২৪ টি স্থির ছবি বহন করছে ,মানে
আপনি এক সেকেন্ড ভিডিও দেখার সময় ভাবতেও পারছেননা যে, এই এক সেকেন্ডে আপনার সামনে দিয়ে অন্তত ২৪ টি
স্থির চিত্র বা ফটো চলে যাচ্ছে ।আর সুপার স্পীড হাই রেজুলেশন ক্যামেরা সেকেন্ডে ০১ মিলিয়ন স্থির চিত্র নিতে
পারে ।আপনি আমি এই ক্যামেরা আবিষ্কার পূর্বে না হওয়াতে সত্যিই দূর্ভাগা, যদি ০২
হাজার বছর পূর্বে থেকে ক্যামেরা থাকতো, তাহলে আপনি আমি কাদের দেখতে পারতাম,
পৃথিবীর সব থেকে স্মরণীয় সময় গুলো যে গত ০২ হাজার বছরে চলে গেছে ।
৬৫)আমাদের শরীরে
০১ ট্রিলিয়ন ব্যাক্টেরিয়া থাকে {০১ ট্রিলিয়ন =১,০০০, ০০০, ০০০,০০০ টি মাত্র}
।যার ওজন ০২ কেজি ।মানে আমাদের শরীরের মোট ওজনের
০২ কেজি ওজন হলো
ব্যাক্টেরিয়ার ওজন । এর কোনটা আমাদের জন্য উপকারি, কোনগুলো অপকারী ।এদের যদি আমরা মেরে ফেলতাম শরীর থেকে তাহলে আমাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বা
ইমিউন সিস্টেম /এন্টিবডি একেবারে শূণ্য হয়ে যেত ।দৃশ্যমান যে কোন জীবের শরীরকে বলা
যেতে পারে ভিন্ন ভিন্ন জীবের ও ভিন্ন ভিন্ন জটিল যন্ত্রের একত্রিত রূপ মাত্র ।
(46)
৬৬) আচ্ছা মানুষ
কি কোনদিন প্রানের সন্ধান পাবে , আমরা যে ধারাতে খুজছি সেটা আমাদের জীবন ধরনের
সাথের মিল রেখে ভয়েজার নামক মহাকাশ যানটি ০৬ বিলিয়ন
কিলো দূর থেকে পৃথিবীর যে ছবি পাঠিয়েছে
তাতে পৃথিবীকে আলোকজ্জল তাঁরা ছাড়া আর কিছু মনে হয়না , পূর্বের ছবিটা খেয়াল
করেছেন কি ?
৬৭) পৃথিবীতে যত
বালুকনা আছে তার থেকে ১০ হাজার গুন বেশি হল মহাকাশের নক্ষত্রের সংখা ।
৬৮) আমরা পুরো
পৃথিবীর মানুষ যতটুকু পানি পান করি সেটা হল পৃথিবীর মোট পানির মাত্র ০১% !!!!!
৬৯) সাগরে ছড়িয়ে
ও খনি হিসেবে থাকা স্বর্ণের পরিমাণ ৯০ লাখ
টন । মানবজাতি আজ পর্য্যন্ত খনি থেকে মাত্র আধা লাখ টন স্বর্ণ তুলেছে ।
৭০)০৭ কোটি বছর
আগে বিলুপ্ত হওয়া প্রাণী ডাইনোসর কে যারা শুধু অতিকায় প্রাণী বলে জানি সেই
ডাইনোসরের diplodocus নামের ১১০ ফুট উচ্চতার যেমন প্রজাতি ছিলো তেমনি ANCHIORNIS নামে মাত্র ১১০ গ্রাম ওজনের ডায়নোসর ও ছিলো । theropod নামক ডাইনোসর এর একটি প্রজাতি থেকে পাখির সৃষ্টি
বলে মনে করেন বিবর্তনবাদী বিজ্ঞানীরা ।
৭১) একজন মানুষ
দিনে ২৩০৪০ বার শ্বাস প্রশ্বাস নেয় ।
৭২) পৃথিবীর সকল সমুদ্রের মিলে যতটুকু যায়গা হবে তার ৯৫%
যায়গা মানুষের
কাছে
অনাবিষ্কৃত রয়ে গেছে ।
৭৩) কবুতর অতি
বেগুনি রশ্মি বা ইউ ভি রে(ultra violet ray ) দেখতে পায়
৭৪) প্রাকৃতিক মুক্তা ভিনেগারের মাঝে গলে যায় ।
৭৫) আসল হীরাকে এসিড দিয়েও গলানো সম্ভব নয় । শুধুমাত্র উচ্চ
তাপমাত্রা দিয়ে
গলানো যায় ।
৭৬) সেকেন্ডে আলোর গতিতে ছুটলেও নিকটস্থ ছায়াপথ এন্ড্রোমিডাতে
যেতে
আমাদের ২০
লক্ষ বছর লাগবে ।
(47)
৭৭) একটি মানুষের শরীরের সব রক্ত খেতে নাকি ১২ লক্ষ মশার
প্রয়োজন ।
৭৮) পৃথিবীতে প্রতি বছর ১০ লাখ ভূমিকম্প হয় । কিন্তু আমাদের
টের পাবর মত
ভূমিকম্প হয়
হাতে গোনা কয়েকটি মাত্র ।
৭৯) আমাদের মস্তিষ্ক ১০ হাজার বিভিন্ন গন্ধ চিনে ও মনে
রাখতে পারে ।
৮০) বাঁশ গাছের কয়েকটি বিরল প্রজাতি আছে যেগুলো দিনে ০৩ ফুট বাড়তে
পারে ।
৮১) পৃথিবীর
সব থেকে দূর্লভ মৌল এস্টেটিন, সারা পৃথিবীতে মাত্র ২৮ গ্রাম আছে ।
৮২) পিপড়ার পাকস্থলী ০২ টি ।
৮৩) পিপড়ার কামড়ে
আমাদের চামড়াতে ফরমিক এসিড(CH2O2) ঢুকিয়ে দেয়
৮৪) ২০০১ সালে ভারতের কেরালাতে রক্ত লাল রঙের রহস্যময়
বৃষ্টি হয়েছিল ।
85) Avgiv Avm‡jB Lvjx †Pv‡Li Pvu‡`i gvÎ 59% †`L‡Z cvB|
evKx 41% Avgiv †`L‡Z cvB bv| Avevi Pvu‡`i GB 41% wM‡q hw` Avcwb `vovb Z‡e †mLvb
†L‡K c„w_ex‡K Avcwb †`L‡Z cv‡eb bv|
86) Pvu‡`i Kvi‡Y c„w_exi N~Y©b ïw³ cÖwZ 100 eQ‡ii †`o
wgwj †m‡KÛ K‡g h‡”Q|
অনেক লম্বা তথ্য কনিকার পর এবার ফিরে আসি সেই ভাষার
প্রসঙ্গে, কিন্তু যদি ওই বাঙালী লোকটি খুব ভালোভাবে চাইনিজ ম্যান্ডারীন বা তামিল
ভাষা জানে তাহলে তার কাছে আরো একটা জনগোষ্ঠীর ভাষা, সংস্কৃতি ও অজানা জীবনযাত্রা,
ওই ভাষাভাষী মানুষের সুখ দুঃখ, দিনলিপির মধ্যে তার জন যে একটা পর্দা রয়েছে সেটা
সরে নতুন একটা জগৎ তার সামনে উন্মোচিত হবে । ঠিক এমনই আমাদের সৃষ্টি জগতের সকল
সৃষ্টির মাঝে দুরত্ব রয়েছে ।মানুষ হয়ে মানব জাতির সকল ভাষা আমরা বুঝিনা ।
পশু পাখিদের একটা জগৎ রয়েছে, তাদের একটা
নিজস্ব ভাষা ও নির্দিষ্ট নিয়মে আবদ্ধ জীবনযাত্রা রয়েছে । যেটা আমরা বুঝতে পারিনা,
আবার আমরা যেটা করছি, যেটা বলছি সেটা হয়তো মানুষ ব্যাতীত অন্যান্য সৃষ্টি জগতের
কাছে দূর্বোধ্য , অনর্থক, বা ধারনার অতীত হতে পারে । সুতরাং, এতক্ষন এই কথা ও
উদাহরন
(48)
গুলো দিয়ে সময় নষ্ট করার অর্থ হলো পাঠকের
যাতে বইয়ের ভাব বস্তু বুঝতে অসুবিধা না হয়, পাঠক মাত্রই যেন বুঝতে পারেন জীবন,
বুদ্ধি বা সভ্যতার সঙ্গা, পরিবেশ ও কালভেদে ভিন্ন হতে পারে, জীবন, বুদ্ধি বা
সভ্যতার পরিমাপ বিচার আপেক্ষিক, ও মানুষ একেক যুগে তার প্রয়োজনে একটা না একটা
বিদ্যা ও চালিকা শক্তি আবিষ্কার করেছে । সময়ের আবর্তনে সেই অতি বিদ্যা হারিয়ে গেছে
, মানুষ আবার পরিশ্রম করেছে আবার উদ্ভাবন করেছে নতুন অতি বিদ্যা নতুন চালিকা শক্তি
।কিভাবে মানুষ সুপার এনার্জি ও সুপার নলেজ আবিষ্কার করে সভ্যতার স্বর্ন শিখরে
আরোহন করে, আবার কিভাবে একটা সভ্যতা কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে আবার কিভাবে বর্তমান
সভ্যতা হারিয়ে যেতে পারে সে বিষয়ে একেবারে সর্বশেষে আলোচনা করবো ।তবে বলছিনা এই
গ্রন্থের সবকিছু অকাট্যভাবে আপনারা বিশ্বাস করুন, শুধু মাত্র শক্তিশালী কিছু
যুক্তির আলোকে আপনাদের মূল্যবান কিছু সময় নষ্ট করবো ।আপনি যদি আপেক্ষিকতা বোঝেন
তাহলে পরবর্তী লেখাগুলো বুঝতে অসুবিধা হবেনা আশা করি এবং এ জন্য এত লেখা যে আমরা
যে জগতে বসবাস করি সেখানে আমাদের সাথে পাশাপাশি, কাছে, দুরে আমাদের মতে অসংখ্যা যে
সব সাধারন সৃষ্টি(গৃহপালিত বা বন্য পশুপাখি, কীটপতঙ্গ ) বসবাস করছে, এবং আমরা
যাদেরকে বা যে সব কিছুকে, বা যে সব ব্যাপারকে সাধারন ভেবে উড়িয়ে দিই বা ভাবনায় আনিনা
সে গুলোর ভিতর অজানা একটা জগৎ, অজানা কোন রহস্য, অজানা কোন বিজ্ঞান আছে কিনা একটু
ভেবে বা আলোচনা করে সময় কাটাই চলুন ।
মানুষের পৃথক চেহারা – পৃথিবীতে বর্তমানে
মানব জাতির জনসংখ্যা ৭০০ কোটি । এই ৭০০ কোটি মানুষের চেহারা এক জনের থেকে আরেক
জনের ভিন্ন । এই যে পৃথিবীতে আমরা কত যায়গায় ভ্রমণ করছি, কত মানুষ পথে ঘাটে চলতে
আমরা দেখি, কিন্তু কখনো কি দেখেছেন হুবহু আপনার
কার্বন কপি বা মিরর ইমেজ কাউকে, মানে হুবহু আপনার চেহারার একজন আপনার মুখোমুখি হতে
? দেখেননি । তবে বিজ্ঞানীদের সমীক্ষা মতে
প্রত্যেক মানুষর কয়েকজন জন প্রতিরূপ রয়েছে, তবে সেগুলো চেহারার ৬০-৮০% মিল ।হুবহু
নয় আবার মানুষের প্রত্যেকের ফিংগার প্রিন্ট সম্পূর্ন ইউনিক । কারো ফিংগার প্রিন্ট
কারো সাথে মিলবেনা ।
(49)
তো কথা হলো আমরা তো একেক জন মানুষ প্রত্যকে
প্রত্যেককে আলাদা করে চিনতে পারি, মা এর চেহারার সাথে বাবার চেহারা গুলিয়ে ফেলিনা
। ভাইয়ের সাথে বন্ধুর চেহারা গুলিয়ে ফেলিনা।একজন মানুষ থেকে আরেক জন মানুষের
চেহারা কেন পৃথক করা সম্ভব হয় এটা বোঝাতে একটা ছোট্ট উদাহরন দিই । আপনার এন্ড্রয়েড
মোবাইল সেটে যদি adobe reader সেট না করা থাকে তাহলে আপনি নিশ্চই পিডিএফ কোন গল্প
বা ফাইল পড়তে পারবেননা । যদি কোন
অডিও বা ভিডিও প্লেয়ার না থাকে তবে কোন mp3
বা video music প্লে করতে পারবেন না ।যারা
ওয়েব ডিজাইনার তারা html, css, javascript এর যে সব কোডগুলো সাজিয়ে একটা প্রিমিয়াম
থিম তৈরি করেন বা BBC, CNN , দেশ বিদেশের বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টাল গুলো ডিজাইন
করেন, এবং সেগুলো আমাদের চোখে ইন্টারনেট ও ব্রাউজার সহযোগে দৃশ্যমান হয়ে দেখা
দিচ্ছে ।কখনো কি এই সুসজ্জিত ওয়েবসাইটগুলো প্রোগ্রামার দের করা যে সব হিজিবিজি
কোডিং উপর চলছে তা আপনারা কি দেখেছেন? ড্রিমওয়েভার সফটওয়্যার, ইন্টারনেট কানেকশন,
ওয়েব ব্রাউজার ছাড়া এই কোডিং আমাদের চোখে সুন্দর হয়ে দৃশ্যমান হয়ে ধরা দেবেনা, নির্দিষ্ট সফটওয়্যার ব্যাতীত শুধুমাত্র হিজিবিজি কিছু লেখা ছাড়া আর কিছু
নয় ।তেমনি পৃথিবীর যত পশুপাখি আছে তারা কিন্তু নিজেদের কে একজন থেকে আরেকজনকে
পৃথক করতে পারে ।এটা আপনি আপনার গৃহপালিত পশু পাখি গুলোর প্রতি লক্ষ্য করলে
খুব ভালোভাবে বুঝতে পারবেন ।একটা মুরগী তার ছানা গুলো বাদে অন্য ছানা গুলোকে ঠিকই
পৃথক করে ফেলে বা আক্রমন করে । একটা গরুর বাছুর ঠিকই দুধ খাবার জন্য দশটা গাভীর
ভিতর থেকে তার মাকে ঠিকই আলাদা করে চিনে তার কাছে এসে দুগ্ধ পান করে । এতক্ষন এটাই
বলছি আপনি আস্তিক হোন আর নাস্তিক হোন মহান স্রষ্ঠা তার সৃষ্টির ভিতর
একেক সৃষ্টিতে একেকটা সফটওয়্যার বা রিডার সেট করে দিয়েছেন । স্রষ্ঠা যে সৃষ্টির ভিতর যতটুকু ক্ষমতাসম্পন্ন রিডার সফটওয়্যার দিয়েছেন
ততটুকুই আমরা অনুধাবন করতে পারি, ততটুকুই আমরা বুঝতে পারি, আর স্বল্পজ্ঞানের কারনে
অন্যান্য মাখলুকাতকে শুধুমাত্র দু পা বিশিষ্ট বা চার পা
(50)
-বিশিষ্ট শুধু মাত্র খেয়ে দেয়ে জীবনধারকারী
কিছু মনে করি ।এ জন্যই আমরা স্বল্প
জ্ঞানে ১০০ গরু / মুরগী এক যায়গায় দেখলে
১০০টি গরুর/মুরগীর চেহারায় ভিন্নতা কিছু দেখিনা ।আপনার যদি একটা পোষা টিয়া থাকে আর
সেই টিয়াকে যদি ১০০ টিয়ার ভিতর ছেড়ে দিলে আপনি তাকে আলাদা করতে পারবেননা ।কিন্তু
পশু পাখিরা তাদের স্ব স্ব প্রজাতিতে এক জন আরেকজনকে আলাদা করতে পারে কিন্তু আপনার ভাইকে একলক্ষ মানুষের ভিতর ছেড়ে
দিলেও আপনি তাকে পৃথক করতে পারবেন ।এটাই বলছি যে মহাবিজ্ঞানী স্রষ্ঠা যে সৃষ্টির রিডারে যতটুকু সীমা দিয়েছেন সে ততটুকু দেখতে পায় ও বুঝতে
পারে ।এটা এক প্রকার চেহারা পৃথককারী সফটওয়্যার।এটা যদি আমাদের ভিতর না থাকতো তো
আমরা মানুষরা অন্যান্য পশুপাখির চেহারায় যেমন কোন পার্থক্য পাইনা তেমনি আমরা
মানুষরাও এক জন আরেকজনকে পৃথক করতে পারতামনা । কারন সবার দুটো চোখ, দুটো হাত, দুটো
পা রয়েছে ।একটু এডাল্ট টাইপের কথায় আসি ,পৃথিবীতে সকল নারী পুরুষের শারীরিক ও যৌন
গঠন একই,, কিন্তু তারপরেও কেন আমরা কোন বিশেষ পুরুষ বা নারীর ভিতর অনেক বেশি
যৌনাকর্ষন অনুভব করি বা কিসের ভিত্তিতে বলতে পারেন ? উত্তরটা হলো তার চেহারা বা
মুখশ্রীর আকর্ষন // এটাই এক প্রাণী আরেক প্রাণীতে আলাদা করে সনাক্ত করতে পারেনা, এ
জন্যই এক প্রাণী আরেক প্রাণীকে বেসিক স্ট্রাকচারে দেখে, পার্থক্য ধরতে পারেনা ।
তাহলে
কথা হলো আমরা যেটা বুঝি বা দেখি সেটাই কি শেষ কথা ! সৃষ্টি জগতের অগনিত এই সৃষ্টি
পশুপাখি কি দেখছে বা তারা কি বুঝে চলে সেই তাদের চোখে যদি আমরা দেখতে পেতাম তাহলে
হয়তো অজানা কোন এক বিজ্ঞান আমাদের চোখে ধরা দিত । কে বলতে পারে মানব সভ্যতা কোনদিন
তাদের বিজ্ঞান কে এই পর্যায়ে উন্নীত করতে পারবে কিনা ? জগদীস চন্দ্র বসু যদি
ক্রেসকোগ্রাফ আবিষ্কার না করতেন তাহলে তো পৃথিবীর মানুষের কাছে গাছের ও জীবন আছে
বোধ আছে এটা অজানা থেকে যেতো ।আবার বর্তমানে আবার
এক্তা চাঞ্চল্যকর তথ্য আবিষ্কার হয়েছে গাছের সম্বন্ধে ।ক্রেস্কোগ্রাফ দিয়ে শুধু গাছের জীবন আর স্পন্দন
সম্পর্কে জানা যেত, কিন্তু তার শতবর্ষ পর এসে এখন নতুন একটি গবেষনা বলছে যে আমরা
যে গাছেদের স্থির এবং একজন থেকে একজন কে
(51)
পৃথক মনে করি ,
সেই গাছেরা নাকি একপ্রকার নির্দিষ্ট ছত্রাকের সাহায্যে একটি গাছ
মাটির নিচ দিয়ে মুলের
মাধ্যমে বিভিন্ন গাছের সাথে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং এর মত বাপক ভাবে যোগাযোগ রক্ষা
করে চলেছে, এই কায়দাতে গাছ অন্য প্রজাতির গাছ কে মেরেও ফেলতে পারে । ওহ মাই গড কি বিস্ময়কর বাপার তাইনা। হয়তো একদিন নবী হযরত
সুলায়মান আলাইহিস সালাম এর হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা কাহিনীর সত্যতা মিলবে, যে
তিনি সকল মাখলুকাতের বা সৃষ্টিজগতের সকল প্রাণীর ভাষা বুঝতেন ।পশু পাখির ডাক বা
পাখির কিচিরমিচির যে শুধু কিচিরমিচির নয়, এর ভিতর লুকিয়ে থাকতে পারে আমাদের মত
সমৃদ্ধ সাবলীল ভাষা ও অজানা জ্ঞান তা হয়তো কালের আবর্তে আবিষ্কার হবে ।জ্বীন নামক
অতিমানবীয় ক্ষমতাধর একটা জাতি আছে যারা তার হুকুমে কাজ করতো । আবার ধর্মগ্রন্থ মতে
কিছু পশুপাখি অদৃশ্য কোন কিছু দেখে ডেকে ওঠে, কুকুর ও গাধার ব্যাপারে এরকমটা শুনতে
পাওয়া যায় ।মাঝে মাঝে খেয়াল করবেন বিশেষ করে গভীর রাতে যখন জেগে থাকেন তখন কখনো
সখনো দেখবেন কুকুরের হাড় হিম করা ডাক ।হতে পারে একদিন বিজ্ঞানের ডাইমেনশন ভেদী
উন্নতিতে এগুলোর সত্যতা আমাদের সামনে আসবে আসলেই কি তারা আমাদের মাত্রা ও দৃষ্টির
বাইরের কিছু দেখে ডাক দেয় কিনা ।
মানব ভাষা – ভাষা বলতে কি বুঝি ?
ভাষা হলো আমাদের ভাবের আদান প্রদানের মাধ্যম । এই ভাষাতেই আমরা কথা বলছি, আমাদের
প্রিয় সাহিত্য উপন্যাস পাঠ করছি, পথে ঘাটে চলাফেরা করছি, বন্ধুদের সংগে আড্ডা
দেওয়া থেকে শুরু করে সকল কাজ কর্ম যেখানে কিছু বোঝানো বা বলার ব্যাপার রয়েছে সেখানেই
ব্যবহার করছি ভাষা । একেবারে সুক্ষ বিশ্লেষনে আসি । গতানুগতিক ক্লাসের বইয়ের বাইরে
আসবো অনেকবার এই গ্রন্থে । তো ভাষা কি ? আপনি গরমকালে একটা গাছের তলাতে বসে আছেন ।
গাছ থেকে একটা ফল পড়লো । ফলটির নাম আম দেওয়া হলো । আপনি বাঙালী । আর এই আম নামটি
কবে থেকে বাংলা ভাষার শব্দ ভান্ডারে এসেছে এ ব্যাপারে বাংলা ভাষার ইতিহাসে কোন উল্লেখ
নেই । তো এই আম কে আম নাম না দিয়ে যদি তাল নাম দেওয়া হতো তবে আমকে আমরা আমকে তাল
বলে চিনতাম ।
(52)
আবার ইংরেজীতে
এটাকে mango বলা হয় । ভাষার একটা ক্ষুদ্র সমষ্টি হলো শব্দ ।আম বা mango হলো শব্দ
।শব্দ গঠিত হয় কয়েকটি ধ্বনির সমন্বয়ে । আম=আ+ম ।এখানে আ ও ম হলো ধ্বনি ।তো বিষয়
হলো পৃথিবীতে একেক অঞ্চলের বা একেক দেশের অধিবাসীরা আম ফলটির নাম একেক রকম দিয়েছে
।তো এই ভাষার সংগা হলো একটি বস্তু বা বিষয় বা ভাব বা আবেগকে একেক অঞ্চলের
অধিবাসীরা একেক ধ্বনি সমষ্টির মাধ্যমে একেকটা শব্দ বা নাম হিসেবে প্রকাশ করেছে ।
আর সেটাই হয়েছে ভাষা । অঞ্চল ভেদে একটা বস্তুকে বা বিষয়কে সেই জনগোষ্ঠী একটা
বস্তুর যে নাম দিয়েছে সেটাই হলো ভাষার ভিন্নতা । আর ভাষা বা নাম অঞ্চলভেদে যাই
হোকনা কেন ভাষার ভিত্তি যে ধ্বনি সেটা কিন্তু সব ভাষাতেই এক ও অভিন্ন । যদি বলেন
কেমন, তাহলে আসুন দেখি বাংলাতে এ বর্ণ, ইংরেজীতে A, আরবীতে আলিফ ।লক্ষ্যনীয় তিনটা
ভাষাই সম্পূর্ণ আলাদা বর্ণমালাও আলাদা । কিন্তু বেসিক বা মূলভিত্তি ধ্বনি যেটা
একটাক্ষুদ্র শব্দের একক সেটা কিন্তু এক ও অভিন্ন । Linguisticsociety of America
এর ২০০৯ এর তথ্য মতে পৃথিবীতে স্বতন্ত্র ভাষা আছে ৬৯০৯ টি ।
এই
৬৯০৯ টির মধ্যে সর্বাধিক প্রচলিত ভাষা হলো ১১ টি । বাংলা, চীনা, ইংরেজী, আরবী,
হিন্দী, স্প্য্যানীশ, রুশ, পর্তুগীজ, জাপানী, জার্মান ও ফরাসী।পাপুয়া নিউগিনিতে
খোজ পাওয়া যায় ৮৫০ ট ভাষার, এবং ইন্দোনেশিয়ায় ৬৭০ টি ভাষার খোজ পাওয়া যায় ।যদি
শুনে না থাকেন ইন্দোনেশিয়ার কয়েকটি ভাষার নাম বলি । ইন্দোনশিয়ার প্রধান ভাষা
ইন্দোনেশিয়ান তথা মালয় ভাষা । এছাড়া বাকি ভাষা গুলো হলো সান্দানিজ, মুশি, বানজারিস,
সাসাক, বাতাক টোবা , মোংগোন্টো, নিয়াস ইত্যাদি । এ ছাড়া আরো অনেক ভাষা রয়েছে ।
সবগুলোর নাম লেখা এখানে নিস্প্রোয়জন ।পাপুয়া নিউগিনিতে সর্বাধিক প্রচললিত ভাষাগুলো
হলো টক পিসিন, হিরিমোটু, পাপুয়া নিউগিনি
সাইন ল্যাংগগুয়েজ । আচ্ছা এত কথা তো বললাম । কখনো কি মনে প্রশ্ন জাগেনা এত ভাষা
এলো কোথা থেকে । পৃথিবীর সকল মানুষ তো এক আদম-হাওয়ার বংশধর । তাহলে কেন এত ভাষা
হবে ।এক আরবী বা সংস্কৃত ভাষা হবার কথা ।এর পিছনে অনেকগুলো কারন থাকতে পারে ।
(53)
ধরুন
কালের আবর্তে আমাদের মানবজাতির আদি পিতা মাতা থেকে মানব বংশবিস্তার ঘটেছে এটা সবাই
মানেন এক বাক্যে । সেটা আপনি আমি ধর্ম বা মতবাদ ভেদে আদম-হাওয়া / অ্যাডাম-ইভ / মনু-শতরূপা যাই বলি না কেন একজনই ।এখন দেখা গেলো আমাদের আদি
পিতামাতা থেকে বংশবৃদ্ধির স্বাভাবিক ধারাতে মানুষের বংশবৃদ্ধিতো হয়েছে এটাও
স্বাভাবিক । এবারে কালে কালে মানুষের সংখ্যা লাখে তো পৌছালো । লাখ থেকে কয়েক লক্ষ,
কয়েক লক্ষ থেকে কয়েক কোটি । কয়েক কোটি থেকে শত কোটি, শত কোটি থেকে আজকের ৭০০ কোটি
। পৃথিবীতে যত মানুষ অদ্যবদি মারা গেছে তার থেকে বেশি মানুষ আজ জীবিত বসবাস করছে
পৃথিবীতে । তো যখন আদি পিতামাতা থেকে মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলো হতে পারে সেটা
কয়েক হাজার বা কয়েকলক্ষ।মানুষের স্বভাববশত মানুষ তার প্রয়োজনে সমাজ গঠন করেছে ও
একতাবদ্ধ থেকেছে ঠিকই ।আবার তাদের প্রয়োজনে আলাদা গোষ্ঠী বা গোত্রও গড়ে তোলে । হতে
পারে সেটা জমিজমা, খাদ্যের অপ্রতুলতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ইত্যাদি কারনে মানুষ আলাদা
হয়ে গেছে তার মুল বংশ থেকে ।
এবার
সে তার পূর্ববাসস্থান থেকে এসে দেখা গেলো আলাদা কোন সতন্ত্র স্থানে এসে পৌছালো ।
তার সাথে দশ বিশ হাজার লোক আছে । তাদের নিয়ে সে পৌছালো জনমানবহীন কোন ঘাসময়
প্রান্তরে, কোন পাহাড়ী অঞ্চলে বা মরু প্রান্তরে ।সে যদি পূর্বে থাকতো কোন মরু
অঞ্চলে তো ঠান্ডা বা নাতিশীতোঞ্চ অঞ্চলে
এসে সে তার পোশাক ,চলাফেরা খাবার সবই চেন্জ করে ফেলবে । কারন ওখানে যেটা পেতো
এখানে সে সেই পশু থেকে শুরু করে খাবার, মাছ সবই পূর্ব পরিচিত না পেয়ে আলাদা পাবে । এবারে তার সাথে যত লোক এসেছে, গোত্র প্রধান হিসেবে মানে
তাদেরকে তো থাকার যায়গা করে দিতে হবে । তখন তারা ইচ্ছামত তাদের যার যতটুকু যায়গা
লাগে দখলে নিয়ে বসবাস করতে শুরু করলো । তার আগে অবশ্য মানুষ যাযাবরের মত বসবাস
করতো । যখন দেখলো বার বার এত বৃহৎ জনগোষ্ঠী নিয়ে ঘুরে বেড়ানো সম্ভব নয় ।তখন
মানুষের মাথায় স্থায়ী বসবাস, চাষ-আবাদ এর ধারনা এলো ।
(54)
তখন নতুন স্থানে এসে নতুন গাছপালা, নতুন
পশুপাখি দেখলো ।এই নতুন পশুপাখির তো একটা নাম দিতে হবে, নতুন গাছপালার একটা নাম
দিতে হবে ।অন্য জাতি থেকে নিজেদের গোপনীয়তা রক্ষার জন্য
ভিন্ন ভাষা গড়ে তোলাও একটা কারণ হতে পারে। ফলে জন্ম হলো নতুন ভাষার । এবার গোত্রপ্রধান
হয়তো চাইলেন আমরা আমাদের মূল বাসস্থান থেকে অনেক দুরে এসে যখন বসবাস করছি আমাদের
সবকিছুই যেহেতু পরিবেশের সাথে আলাদা আইডেন্টিটি ও স্বতন্ত্রতা হয়ে গেছে, চলুন আমরা
সবকিছুর নতুন নাম দিই । সবাই নতুন নামে সবকিছু ডাকবে ও চিনবে । দেখা গেলো
গোত্রপ্রধান বা রাজার নির্দেশ মোতাবেক সবাই সেই নতুন নামে ডাকতে শুরু করলো ।রাজা
হয়তো নিজের নামে বা তার অনুগত জনগোষ্ঠীর দ্বারা অধিকৃত অঞ্চলের দেওয়া নামে ভাষার
নামে ভাষা প্রচলন করলেন ।যেমন ইংলিশ ভাষাভাষীদের নামে ইংল্যান্ড, বাঙালীর ভাষার
নামে বাংলাদেশ, মালয় ভাষাভষী বা জাতির নামে মালয়েশিয়া ইত্যাদি । তখনতো পৃথিবী
শুধুই ফাঁকা।জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে জাতিগোষ্ঠী আলাদা স্থানে বসবাস করলো, সাথে
সাথে ভাষা পরিবর্তন হতে শুরু করলো । আপনি সামান্য উদাহরন হিসাবে বাংলাদেশের কথা
বলি । আমাদের ভাষা বাংলা ।
আঞ্চলিকতা
ভেদে আপনি নোয়াখালি, সিলেট, বরিশাল, চট্টগামের কথাই ধরুন । দেখবেন এগুলোও বাংলা
ভাষা হলেও আপনার বুঝতে কষ্ট হচ্ছে । আচ্ছা আপনাকে যদি বলি মেকুর কি আপনি বুঝবেন ? মেকুর
হলো বিড়াল । যশোরে অনেক যায়গায় বিড়ালের এই নাম ছোটবেলায় শুনেছি। আবার যদি বলি হাইনসেলে
আমি । এর মানে কি, এর অর্থ হলো রান্নাঘর এ আমি ।এই শব্দটা ও যশোরের অনেক গ্রামে
আগের নানীদের মুখ শোনা যায় ।আচ্ছা ঘুনি কি । ঘুনি হলো বর্ষাকালে মাছ ধরার
ফাঁদ বা খাঁচাবিশেষ যেটাতে মাছ বা সাপ
ঢুকতে পারে বের হতে পারেনা । আবার ঘরামীরা (গৃহ বাড়ি নির্মাণ মিস্ত্রী
)ঘরের কাজে এসে বলতো জিনেরী লাগবে । জিনেরী মানে পেরেক ।তো এই শব্দগুলো
ভাষাবীদ বা সুশীল সমাজের নাও জানা থাকতে পারে বা আপনারা জানতেও পারেন । তো কথা হলো
যে লাউ সেই কদু ।
(55)
তাহলে কেউ কি বলতে পারবেন কেন শুদ্ধ শব্দ
থাকতে এই শব্দগুলোর প্রচলন ছিলো যশোরে ।এর উত্তর কিন্তু আমার জানা নেই ।আবার
বর্তমানের জেনারেশন এই ভাষাগুলো ব্যবহার করছেনা ।এভাবে মূলত ভাষা সৃষ্টি ও বিলুপ্ত
হয় ।আজকের কথায় ধরুন আমরা বাঙালীরা দু লাইন ইংরেজী শিখে, আমরা ক্রমশ বাংলিশ হয়ে
পড়ছি ।বাংলা হারাচ্ছে তার মূল শব্দ ভান্ডার, প্রতিস্থাপিত হচ্ছে নতুন শব্দে
।পাঁচশো বছর আগের বাংলার সাথে এখনকার বাংলার মিল খুব কম । ধরুন আগের সাহিত্যে একটা
বাক্য ছিল দোস্ত একটা বিষয় নিয় দ্বন্দে আছি । এখন সেটা বলছি কনফিউশনে আছি । তারপর
ফেসবুকে আমরা লল(বোকা বা ব্যাঙ্গার্থে) , ব্রো (brother) এই জাতীয় শব্দতো তৈরি করেই ফেলেছি ।শুধী দর্শক শ্রোতা না বলে
হাই ভিউয়ার্স বলছি।আর ক্লাসে অ্যাসাইইনমেন্ট, হোমওয়ার্ক, ক্যারিয়ার এগুলোতো
পার্মানেন্ট হয়ে গেছে ।এভাবে ভাষা তৈরি হয় নষ্ট হয়, বদলায়, প্রয়োজন ফুরালে বিলুপ্ত
হয় । চাক, কোডা, আসোচীন, পাংখুয়া, মেগম ভাষার মত কয়েকটি বিলুপ্তপ্রায় ভাষাতাত্বিক
নৃগোষ্ঠী রয়েছে বাংলাদেশে । যে ভাষায় কথা বলে মাত্র দুই হাজারের ও কম লোক ।এবং এই
ভাষাভাষীদের ছেলেমেয়েরা জীবিকার ও জীবনযাত্রার
প্রয়োজনে বাংলা ভাষাতে অভ্যস্ত হচ্ছে । একদিন তাদের সে ভাষা বিলুপ্ত ও হবে
কালের গর্ভে ।
যেমন
বাইবেল বা তৌরাত এর ভাষা ছিল হিব্রু বা ইবরানী ভাষা যা খিস্ট্রীয় ৪০০ সালে
পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়ে যায় । তবে দুটি পবিত্র গ্রন্থের ভাষা ছিলো বলে ১৮৮১ সালে
এলিজিয়ের বেন এহুদা নামক এক রুশ বংশোদ্ভুত ইহুদীর হাতে এ
ভাষার পূনর্জন্ম হয় ।যেটা এখন ঈসরাইলের ২য় ভাষা হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে । তবে এটা
মডার্ন হিব্রু নামে অভিহিত, প্রাচীন হিব্রুর সাথে পার্থক্য আছে বলে গবেষকদের অভিমত
।কেন বিতর্ক আছে জানেন কারন এলিজিয়েরের আবিষ্কারের ০৫ থেকে ০৬ দশক পরে ১৯৪৭
সালে ডেড সী এর পশ্চিম তীরে কুমরান গুহাতে
প্রাচীন হিব্রু ভাষাতে লেখা পান্ডুলিপি পায় দু জন বেদুইন বালক ।পরে যেটা গবেষকদের
হাতে আসে।এ গুলোর বয়স প্রায় ২০০০ বছরের কাছাকাছি ছিলো এবং এই স্ক্রোলের ৪০% লেখার
এখনো পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি ।এগুলোকে বলা
হয় ডেডসী স্ক্রল ।
(56)
উদ্ধারকৃত
প্রাচীন ডেডসি স্ক্রোল
তবে
এখনকার পর্যন্ত গবেষনামতে সকল ভাষার মূল পাওয়া যায় ইন্দোইউরোপীয়ান ভাষা(এই ভাষাগোষ্ঠীর
প্রাচীন লিপি ব্রাক্ষ্মী লিপি) থেকে । আমাদের বাংলা ভাষার সাথে দেখবেন আসাম ও
উড়িষ্যার ভাষার মিল আছে । এগুলো ইন্দো ইরানীয় ভাষাগোষ্ঠীর সদস্য ।ভাষার উৎপত্তি
ও উদাহরন অনেক আছে । বোঝবার জন্য সহজ দুটো
উদাহরন দিই । যেমন আমরা যেটা mouse বা ইদুর বলি সেটা লতিনা ও গ্রীকে muus, রুশ ভাষায় mish, সংস্কৃতে মূস বা মূষিক । আবার
ইংরেজী নোজ শব্দটা লাতিনে nass, রুশ ভাষায় nos, সংস্কৃতেও নাস বা নাসারন্ধ্র ।
আবার আমরা বাংলা বলি বমি ইংরেজীতে সেটা ভমিট । আবার বিশ্বের সৃষ্টিতত্বের প্রচলিত
অনেক কথাতেও মিল পাওয়া যায় । আমাদের ইসলাম ধর্মের নুহ আঃ এর মহাপ্লাবন এর কাহিনীর
সাথে হিন্দু ধর্মের বশিষ্ঠমুনি ও মৎসঅবতার কাহিনী প্রায় এক ।বিজ্ঞানমতে সময়কালটা
১০,০০০ বছর আগের হবুতি সন বা কোন গবেষকের মতে ৪৫০০ বছর আগের ।একেবারে একরকম উপকথা
প্রচলিত আছে লাতিন আমেরিকার কয়েকটি দেশে তবে ভিন্ন নামে । তবে
(57)
দুঃখিত নাম মনে করতে পারলাম না এই মুহুর্তে।এ
থেকেই বোঝা যায় ভাষার উৎপত্তি – বিকাশ ও ধবংশ সম্বন্ধে ও মানবজাতির উৎপত্তি
সম্বন্ধে বা আদিপিতা একজনই ।
ডাইমেনশন
বা মাত্রা -ভূত-প্রেত -রুহ ও তার
অস্তিত্ব তথা প্যারানরমাল জগৎ - আমাদের দেখার জন্য স্রষ্ঠা দুটো চোখ দিয়েছেন । এই দুটি চোখের সাহায্যে আমরা দেখছি পৃথিবীর সকল
সৌন্দর্য্য । চোখ মেলতেই আমাদের সামনে ভেসে ওঠে সুন্দর সুনীল আকাশ, রাতের আকাশের
জ্যোৎস্না ভরা চাঁদ, হাজারটা তাঁরাময় আকাশ , শ্রাবণের
বৃষ্টিস্নাত মেঘের দিন, ভোরের সূর্যোদয়, গোধুলির সূর্যাস্ত , নীল সমুদ্রের
সৌন্দর্য , ওই বন-পাহাড় এর অবারিত সৌন্দর্য, বাঘ, টিয়া, ময়ুর , চিত্রল হরিণ, স্রষ্ঠার সৃষ্টি কত সুন্দর জীব জগত এই সবই দেখছি অমুল্য এই চোখের কল্যানে
।ভাবুনতো আজ থেকে আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি নেই । তাহলে এক কথায় আপনার কাছে পৃথিবী
হয়ে পড়বে মূল্যহীন ।আর আমরা চোখে যা দেখি সেটাই বাস্তব । আমরা বিশ্বাস করি আমাদের
চোখ যা দেখে আর কান যা শোনে তাই বাস্তব ।
আসলেই
কি তাই ? আমাদের চোখ কি সব দেখতে পায় ? আমাদের কান কি সব শুনতে পাই ? মানুষের
শ্রাব্যতার সীমা ২০(বিশ) থেকে ২০,০০০(বিশ হাজার ) হার্জ । ২০ হার্জ এর নিচে ও
২০,০০০ হার্জ এর উপরের শব্দ মানুষ শুনতে পাইনা ।এর উপরেও তো শব্দ আছে । কুকুর
৩৫০০০ (৩৫ হাজার হার্জ ) পর্যন্ত শব্দ শুনতে পাই , আর বাদুর সর্বোচ্চ ১০০০০০(এক
লাখ হার্জ ) পর্যন্ত শব্দ শুনতে পাই ।আমাদের যদি আরো বেশি কম্পাঙ্কের শব্দ শোনবার
ক্ষমতা থাকতো তবে আমরা হয়তো অনেক অজানা জানতে পারতাম অথবা অনেক শব্দ সহ্য না করতে
পেরে মারা যেতাম । কিছু প্রজাতির তিমি মাছ মাত্র ০৭(সাত) হার্জ কম্পাঙ্কের সাউন্ড
শুনতে পাই পানিতে, যাকে বলে ইনফ্রাসনিক সাউন্ড । আমাদের শরীর বিশেষ করে আমাদের
মস্তিষ্ক চালাতে ২০ ওয়াট বিদ্যুৎ এর দরকার । এখন তো
(58)
মোবাইলে ক্যামেরা আছে, সেটা ১.৩ মেগাপিক্সেল
থেকে শুরু করে DSLR ক্যামেরার ১২০ মেগাপিক্সেল পর্যন্ত ক্যামেরা আছে । আপনি আমি যে
চোখ দিয়ে দেখি সেটা কিন্তু এক মহাশক্তিশালী ক্যামেরা ।আমাদের চোখ হলো ৫৭৬
মেগাপিক্সেলের এক শক্তিশালী ক্যামেরা । ফলে অনেক রং যেটা ক্যামেরাতে ধরা পড়েনা
সেখানে আমাদের চোখ প্রায় ০১ কোটি রং আলাদাভাবে সনাক্ত করতে পারে । এক কোটি রং কি
দেখেছেন ? যেহেতু আমাদের চোখ ও কানের দেখা ও শোনার একটা সীমাবদ্ধতা আছে সেহেতু
আমাদের চোখ ও কানের দেখা ও শোনার বাইরে নিঃসন্দেহে অনেক কিছু থাকাটা বিচিত্র কিছু
নয় । আমাদের চোখ অনেক রশ্মি ধরতে পারেনা । ধরুন এক্স-রে বা রণ্জন রশ্মি আবিষ্কার
আমাদের দেখার সীমাবদ্ধতার ক্ষেত্রে একটা বড় প্রমাণ । আমাদের চোখ সেটাই দেখে যেটা
পৃথিবীতে আছে , যে রশ্মি পৃথিবীতে আছে, যে রশ্মি/আলো/রং আমাদের চোখের ধারন
ক্ষমতাতে আছে সেটাই সে দেখতে পারে, কান সেটাই শোনে যা তার শ্রাব্যতার সীমার মধ্যে
আছে । আমাদের শরীরের আলো তৈরির ক্ষমতা আছে । আমাদের শরীর থেকে এক প্রকার আলো বের
হয় । খালি চোখে আমরা সেটা দেখতে পাইনা ।হাইভোল্টেজ আবেশে যে কোন বস্তুর চারপাশে এক
ধরনের জ্যোতির্ময় বলয় দেখা যায় ।সেটা সর্বপ্রথম ধারণ করবার পদ্ধতি উদ্ভাবন করেন সেমিওন
ডেভিডোভিচ কিরলিয়ান ১৯৩৯ সালে ।মানবদেহের সাথে একটি তড়িৎ চৌম্বকীয় বা
ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড ক্রিয়াশীল ।এ ধারনাটি ১৯৩৯ সালের আগ পর্যন্ত আনুমানিক
বা ধারনাগত ছিলো । কিন্তু কিরলিয়ানফটোগ্রাফি
ও ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ফিল্ড পরিমাপের যন্ত্র নিয়ে গবেষনাতে দেখা গেছে যে একটি
উচ্চ ক্রিয়াশীল ইলেকট্রো ম্যাগনেটিক ফিল্ড প্রতিটি জীবের দেহে প্রবাহিত হচ্ছে ।
যেটা কিরলিয়ান ফটোগ্রাফি মেথডে ধরা সম্ভব হয় ।এ ফিল্ডের প্রাবল্যতা পরিমাপযোগ্য
এবং এটা পরিবর্তনশীল বলে প্রমাণিত হয়েছে । বিভিন্ন কারণে এ ফিল্ড বা জ্যোতির
কমবেশি হয় । ক্ষেত্রবিশেষে কিছু অসুস্থতা ও বার্ধ্যকের বয়সে এই কিরলিয়ান
ফটোগ্রাফিতে রশ্মির প্রাবল্য বা সুস্পষ্টতা কম দেখা যায় । অর্থাৎ উদ্ভিদ হোক আর
প্রাণী হোক তথা মানবজাতির ক্ষেত্রেও এটি বয়সের সাথে সাথে
(59)
এই আলো কমতে থাকে ।কিরলিয়ানের মতে এটা লাইফ
সোর্সের প্রকাশ বা জীবনীশক্তি ধরার media ।
কিরলিয়ান
ফটোগ্রাফিতে তোলা পাতার ছবি
মেডিটেশনে কিরলিয়ান ফটোগ্রাফী
(60)
খটখটে পদার্থবিদদের মতে ইলেকট্রিক ডিসচার্জ
ফটোগ্রাফি ছাড়া আর কিছু নয় ।কোনটা সত্যি বলবো ? সত্যি সেটা মনে হয় যে যে চোখে দেখে
।ধরুন আমরা জীবনের একটা স্টেপে গিয়ে প্রেমে পড়ি। প্রেম নিয়ে আমাদের সে কি আবেগ, কত
সাহিত্য ,কবিতা, গান , সিনেমা, কত বিশেষণ,
কত প্রেমাবেগ, লাইলী-মজনু, শিরী-ফরহাদ কত আখ্যান , আবার এই প্রেমাবেগে অনেক
প্রেমীযুগলের একসাথে বিষপানে আত্বহনন, একই রশিতে ঝুলে আত্বহত্যা কত কি ।প্রেম
স্বর্গীয়, জনম জন্মান্তরের বন্ধন কত কি শুনি আমরা ।এবারে আসি এই খটখটে বিজ্ঞান
দিলোতো আপনার আমার খেয়াল ও আবেগের জগতে জল ঢেলে । রসায়ন বিজ্ঞান বলে
কাম-প্রেম-আবেগ এ সবই হলো টেস্টোস্টেরন-এস্ট্রোজেন, ডোপামিন, নোরপাইনফ্রাইন,
সেরাটোনিন, এন্ড্রোফিন এর খেলা । নামটা রসায়ন, কিন্তু একেবারে রসকসবিহীন ।
তবে
যতই বিজ্ঞানময় হোক না কেন, বিজ্ঞানের
দৃষ্টিতে সবকিছু বিচার না করে আমাদের উচিত কিছু জিনিস আমাদের আবেগ ও সাহিত্যে
সীমাবদ্ধ রাখা ।ধরুন আপনি আমি বূঝলাম প্রেম-ভালোবাসা তো শুধুই হরমোনের খেলা, সংসার-সন্তান
সবকিছুই তো আপনার আমার বানানো সামাজিক সিস্টেম ।স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন পবিত্র
কালেমা পড়ে বা হিন্দুদের মত অগ্নি সাক্ষী রেখে সাতপাক ঘুরে সাতজনমের বন্ধনে আবদ্ধ
হওয়া সম্পর্ক বলে এ সম্পর্ক থেকে একমাত্র মৃত্যূ ছাড়া আমাদের কেউ আলাদা করতে
পারবেনা এ রকম সেন্টিমেন্ট জড়িয়ে আছে আমাদের সাথে, পছন্দ-অপছন্দ দিয়ে কি হবে,
বাস্তব ভিত্তি থাকুক বা না থাকুক আমাদের বিশ্বাস আছে জন্ম-মৃত্যূ-বিয়ে এই তিন
বিধাতা নিয়ে । এই পুরনো বিশ্বাস গুলোকে অকাট্য ভাবে বিশ্বাস করা বোধ হয় যথেষ্ট
ভালো মানব সমাজ ও জাতির জন্য।ধরুন বিজ্ঞান মনষ্কতায় ও দৃষ্টিতে আমরা সবকিছু ভাবলাম
বা ভাবতে শুরু করলাম, যেমন প্রেম বলে কিছু নেই সবই রাসায়নিক ব্যাপার-স্যাপার, যৌনতা
বা ইজ্জত সম্মান বলে কিছু নেই, ফ্রি সেক্স কান্ট্রি বা সোসাইটি তো রয়েছে, তারা
যেটা পারে আমরা পারিনা কেন, এক সঙ্গী বা সঙ্গীনির বাহুডোরে একঘেয়ে যৌনজীবনের থেকে
রঙিন
(61)
যৌনজীবন যেখানে ইচ্ছামত সঙ্গী বা সঙ্গীনি
পরিবর্তন করা যায় সেটা ভালো, সন্তান জন্মদান বিবাহ না করেও সম্ভব, পিতৃ বা মাতৃ
পরিচয়ের কি দরকার , সন্তান কোলে পিঠে মানুষ না করে বেবি পালনের কোন কেয়ার সেন্টারে
পালতে দিলে হয়, টেস্টটিউব বেবি, গর্ভ ভাড়া করে সন্তান জন্মদান তথা সেরোগোসির
পদ্ধতি অনেক কিছুই শুনি আমরা ।এতক্ষন আমাদের রক্ষণশীলতার বাইরে যে কথাগুলো বললাম
মানে সনাতন নিয়ম ভেঙে আমরা যদি কেউ এ রকম হতে থাকি কোন সমস্যা নেই । আমার লাইফে
আমি ইচ্ছামত মাদক নেবো, ইচ্ছামত বহুগামী-সমকামী হবো, অযথা মানবিক বোধ না রেখে
কাউকে খুন করবো তাতে কার কি আসে যায় ? তাতে কার কি ।তাতেও
অসুবিধা নেই, অসুবিধা নেই ততক্ষন যতক্ষন এটা কিছু মানুষের ভিতর থাকে ।অসুবিধা তখনই
যখন সবাই এই মতবাদে বিশ্বাসী হয়ে যাবে । ধরুন কালো আছে তাই শ্বেত চামড়ার এত দাম, অসুন্দর
আছে বলে সুন্দরীর এত দাম, সব প্রাণী পাতা খায়না, সব প্রাণী মাংস খায়না বলেই কিন্তু
ভারসাম্য টিকে আছে।
সবাই
যদি আউট অফ কন্ট্রোভার্সাল রুল মানে রক্ষণশীলতার বাইরে চলে যেতাম তাহলেই
মানবজাতি ও সমাজের চুড়ান্ত ধবংশ হতে বেশিদিন লাগতোনা ।ধরুন ১০০ ছেলে আছে একটি দেশে,
এই ১০০ জনের সবাই চায় উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা হতে , ধরুন এই ১০০ জন ছাড়া আর কোন
ছেলেই নেই সেখানে, এবং সবাই লক্ষ্য অনুযায়ী উচ্চ পর্যায়ের বিলাসবহুল জীবনের
অধিকারী হলো ।এবার এদের খেদমতে লোক পাবে কোথায় ।হয় তাদের সিস্টেমটাই ধবংশ হয়ে যাবে
বা অন্য দেশের কম যোগ্যতার জনগোষ্ঠী থেকে
তাদের অধীনে তাদের কলকারখানা চালাবার জন্য শ্রমিক আনবে । আবার তার এই শ্রমিক তার
অধীনে কাজ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছে । মালিক মনে করছে আমার অধীনে হাজার
হাজার লোক আছে , আমি কত বড় একজন শিল্পপতি, আবার আমাদের দেশ থেকে যে শ্রমিক বিদেশে
যাচ্ছে সে মাসিক বেতনেই সন্তুষ্ট । তা দিয়েই সে তার দেশে থাকা স্ত্রী পরিজন ও মা
বাবা সন্তান ও নিজের ভবিষ্যত গড়তে পারছে । যে বেতন সে
(62)
পাচ্ছে তা হয়তো তার কোম্পানী মালিকের একদিনের
খরচের দশভাগের ও
একভাগ ও না ।এভাবে স্রষ্ঠা ভালো-মন্দ, ধনী
-গরীব, সুন্দর অসুন্দর, মানবিকতা সব কিছুই সৃষ্টি করে রেখেছেন । আপেক্ষিকতা এমন এক
তত্ব যা দিয়ে শুধু বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা নয় , আমাদের মানবজীবন ও সুন্দর করে ব্যাখা করে দেওয়া যায় । এ জন্যই বলে
জীবন যেখানে যেমন, যার কাছে যাতে সুখ, সবার চোখে সুন্দরের সঙ্গা এক হলে নির্দিষ্ট
কিছু ছেলেমেয়ে ছাড়া আর কারো বিয়ে হতোনা, নির্দিষ্ট কিছু ফুল ফল ও খাবার সুন্দরের
সঙ্গা হয়ে থাকতো, সমাজ সংসার, মা-বাবা , সন্তান মায়ার বন্ধন সামাজিক শৃঙ্খলা কিছুই
থাকতোনা, যদি আমাদের সবার কাছে অরক্ষণশীলতা ভালো লাগতো, তাহলে কি হতো নিজ ভাবনায়
একটু ভেবে সোস্যাল মিডিয়া কমেন্টে বা মেসেজে জানান ।কেউ কৃষিকাজ করছে বলেই আপনাকে
রোদ বৃষ্টিতে পুড়তে বা ভিজতে হচ্ছেনা, গোড়ামী মনে হলেও কোন মোড়ল ধরণের লোক সামাজিক অনুশাসন বজায়
রেখেছেন বলে সমাজে পারিবারিক বন্ধন অটুট আছে, সবাই বিশৃঙ্খল হবার সুযোগ পাচ্ছিনা, একটা ভালোমন্দের অনুপাত(ratio)ঠিক আছে বলেই হয়তো সব ঠিকঠাক আছে, তা না হলে হয়তো প্রাণীজগতের অন্যান্য প্রাণীর মত
যাযাবর হয় উঠতাম ।
তারপরও
মৌমাছি, পিপিলীকা এদের শৃঙ্খলা ও সমাজবদ্ধতা দেখুন ।এ জন্য আমাদের ব্যাক্তিগত
–পারিবারিক-সামাজিক লাইফে সব যায়গায় যুক্তি ও বিজ্ঞান রেখে কিছু আবেগ ও সনাতন
সেন্টিমেন্ট আবশ্যক ভাবে থাকা দরকার, শিকড়কে অবশ্যই আমাদের মনে রাখতে হবে, ভুলে
গেলে চলবেনা ।তা নাহলে প্রাচ্যের
পারিবারিক ও সামাজিক সৌন্দর্য ও সুনাম অক্ষুন্ন থাকেনা ।আবার যেখান থেকে শুরু
করেছিলাম আমাদের চোখ যে যে রশ্মি ধরতে পারে বা ওই যে বললাম এক কোটির মত
রং আলাদাভাবে ধরতে পারে ।তো এক কোটির মত রং বা রশ্মি আমরা কি দেখেছি ? ।
হাতে গোনা কয়েকটি রং ছাড়া আমরা আর কিছু
দেখিনা ।ঊর্ধে গেলে দেখি ওই বারটি রংয়ের মিশ্রনে তৈরি নানা কম্বিনেশন ।তো অদেখা সব
রশ্মির ভিতর দিয়ে যদি আমরা আমাদের জগৎ দেখি তাহলে নানা রকম অদেখা এক জগৎ আমাদের
সামনে দেখা দেবে । আমাদের চোখ যদি এখন যতটুকু বড়
(63)
দেখে বা যে যে রং শনাক্ত করতে পারে তার বাইরে
যদি কিছু পারতো তাহলে আরো একটা জগৎ দেখতো । বর্ণান্ধতার কথা হয়তো শুনেছেন সবাই ।
আমাদের চোখের কোণ কোষ রং শনাক্তকরনের জন্য দায়ী । মুলত লাল, সবুজ ও নীল এই
তিনটি রং সে ধরে । এখন যদি এই কোন কোষের কোন বর্ণালী সনাক্তকরন কোষ নষ্ট হয়ে যায়
তাহলে, সেই লোক হয়তো লাল রক্ত দেখে বলতে পারলোনা এটা কোন রং সে দেখছে। আবার যদি
ধরি কথার কথা, কোন ব্যাক্তির চোখ গড গিফটেড ভাবে, বিজ্ঞানের সুত্রের বাইরে
গিয়ে এই তিন মৌলিক রংয়ের বাইরে কোন একটি
অজানা রশ্মি বা রং শনাক্ত করতে সক্ষম হলো তাহলে সে যা দেখবে আপনি আমি সাধারন
চর্মচক্ষুতে তা দেখতে পাবোনা, বরং তার দেখাকে পাগলের প্রলাপ ভাববো ।আপনার চোখ আপনার টিভির রিমোট থেকে নির্গত রশ্মি দেখতে পায়না , কিন্তু আপনার মোবাইলের ক্যামেরা তা ধরে ফেলে । এক্সরের ভিতর দিয়ে
যখন আমরা কোন মানুষ দেখলে আমাদের এই চোখ দিয়েই একজন সুন্দর মানুষকে দেখি কঙ্কাল
ছাড়া আর কিছু না হিসেবে । তাহলে দাড়াচ্ছে আজ যদি সূর্য্য UV-RAY(ULTRA-VIOLET) বা অতি বেগুনি রশ্মি না ছেড়ে X-RAY বিকিরণ করতো
পৃথিবীর উপর তাহলে আমাদের চোখ কি দেখতো, যা দেখতো সেটা দেখা খুবই সহজ । এ জন্য
আপনি প্রথমে একটা ছবি তুলুন আপনার হাতে থাকা মোবাইলে ।
তারপর সেটাকে মোবাইলে ইন্সটল করা ফটো
এডিটর দিয়ে নেগেটিভ বা সোলার ইফেক্ট দিয়ে দেখুন । পৃথিবীটা হয়ে যেতো আপনার হাতে
আসা X-RAY রিপোর্ট ইমেজের মত । শুধু সেটা না X-RAY এর বাজে প্রভাবে ক্যান্সার,
টিউমারে সৃষ্টিজগত ধবংশ হয় যেতো, অথবা অভিযোজিত হয়ে আমরা XRAY প্রুফ হয়ে যেতাম ।
(64)
আমাদের চোখে দেখা পৃথিবী
পৃথিবীর চারপাশটা যদি ইনফ্রারেড ওয়েভ
দিয়ে ঘেরা থাকতো তবে পৃথিবীর বাইরে গিয়ে পৃথিবীকে এমন রঙে দেখতেন
(65)
পৃথিবীর চারপাশটা
যদি X-RAY দিয়ে ঘেরা থাকতো তবে পৃথিবীর বাইরে গিয়ে পৃথিবীকে এমন রঙে দেখতেন
পৃথিবীর চারপাশটা যদি গামা রশ্মি দিয়ে ঘেরা থাকতো তবে পৃথিবীর বাইরে
গিয়ে পৃথিবীকে এমন রঙে দেখতেন
(66)
এটাই
হলো কথা । আমরা আমাদের খালি চোখে যা দেখছি , চর্মচক্ষুতে যা দেখছি সেটাই কি শেষ
কথা, এর বাইরে কি আর কিছু নেই বা থাকতে পারেনা । অবশ্যই পারে, যা আমরা দেখছি সেটাই
শেষ কথা না । এর বাইরে অনেক কিছুই আছে । ন্যানোটেকনোলজি
নিয়ে এখন বিস্তর গবেষণা হচ্ছে । ন্যানোটেকনোলজি টা কে একটা সহজ উদাহরণ দিয়ে বোঝাই,
ধরুন আপনার ঘরে একটা টেবিল আছে, আপনি সেখান বসে পড়াশুনা করেন, এখন আপনি সম্পূর্ন
বোধবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ থাকলেন ।কিন্তু হয়ে গেলেন ছোটখাটো ব্যাকটেরিয়া বা
ভাইরাসের মত ।তখন এই টেবিলটাকে মাইক্রোস্কোপ এর সাহায্য ছাড়া যেমন / টেবিলের কাঠের
যে রূপ দেখা যেতোনা, ঠিক টেবিলের সেই রূপ আপনি এখন এমনিতে দেখতে পাচ্ছেন ।এটাই হলো
ন্যানোটেকনোলজি ।এক সময় হয়তো নানোটেকনোলজির মাধ্যমে এত ক্ষুদ্র রোবট আবিষ্কার
সম্ভব হবে যেটা আপনার শরীরে ঢুকে বিনা কাটাছেড়াতে জটিল ও ঝুকিপূর্ণ অপারেশন করে
বেরিয়ে আসবে ।
আমার
ওজন ৭০ কিলো গ্রাম । এটা কি শেষ কথা ? এটা কি মহাবিশ্বের সবখানে সমান ? এই
মুহুর্তে চাঁদে গেলে বা মঙ্গল গ্রহে গেলে আমার ওজন বা ভর এক থাকবেনা । কারণ ওজন বা
ভর আপনি যে স্থানে বসে পরিমাপ করছেন সেটা সে স্থানের অভিকর্ষজ বল / অভিকর্ষজ ত্বরণ
ও মাধ্যাকর্ষণ শক্তির উপর নির্ভর করবে ।ধরুন আপনার ওজন ৭০ কেজি আপনি চাঁদে গেলে
আপনার ওজন হবে ০৭ কেজি , আপনি পৃথিবীতে এক লাফে এক ফুট উপরে উঠলে চাঁদে অনায়াসে ০৬
ফুট উচ্চতায় বিনা কষ্টে উঠতে পারবেন । তাহলে
আমি মানব , আমার ক্ষমতার সঙ্গাটাও আপেক্ষিক ।
দ্রব্যগুণ ও স্থানগুনে আমার ক্ষমতার সঙ্গা ভিন্ন হয়ে যেতে পারে । আপনি
আমি একটা গাছ বা মানুষকে যতটুকু বড় দেখছি বা ছোট দেখছি আসলেই কি সেটা তত বড় বা ছোট
। এর উত্তরটাও আপেক্ষিক । আমার চোখের লেন্স এই গাছ বা মানুষটাকে নির্দিষ্ট
RESOLUTION বা ZOOM এ দেখছে
(67)
কাঠ কাটলে এ রকম দেখা যায় কি , microscope এর
নিচে দেখা একটি কাষ্ঠল উদ্ভিদের অংশ , খালি চোখে যেটা আমরা দেখিনা
এক ধরনের মশা বা
মাছি জাতীয় পতঙ্গের চোখ মাইক্রোস্কোপ এর নিচে
(68)
এটা কোন পর্বতের গিরিখাদের ছবি নয় বা মহাকাশের থেকে নেওয়া পৃথিবী পৃষ্ঠের ছবি ও নয়, একটা
বাচ্চা ছেলের দাঁতের ফাটল , ১৪০০ গুণ বিবর্ধিত করে ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ এর নিচে
তোলা ।
সে জন্যই তো আমি সেটাকে ওইটুকু দেখছি । আমি
মানুষ আমি উড়তে পারিনা । কিন্তু এই উড়তে না পারাটাও আপেক্ষিক ।আমি উড়তে পারিনা
পৃথিবীর একটা নির্দিষ্ট সীমাতে ।পৃথিবী পৃষ্ঠ থেকে ৫০০ কি.মি উপরে আপনাকে নিয়ে ছেড়ে দিলে আপনি তখন নিজেকে
ওজনহীন মনে করবেন এবং ভেসে বেড়াবেন অবশ্য সেখানে একটা ঘুর্ণণ ও রয়েছে, এই ঘূর্ণণ
না থাকলে অবশ্য গ্রহ-নক্ষত্র-উপগ্রহ সব পতিত হয়ে যেতো ,পৃথিবী গিয়ে পড়তো সূর্য্, চাঁদ
পড়তো পৃথিবীতে । কৃত্রিম উপগ্রহ বা স্যাটেলাইট ও একই নিয়ম মেনে চলে ।একে পৃথিবী
থেকে বায়ুমন্ডলের সর্বোচ্চ স্তর
এক্সোস্ফিয়ার এর কাছাকাছি বা উপরে ওঠানো হয় জ্বালানীর জোরে জোর করে । তারপর এর
জ্বালানী শেষ হলেও এটি অনন্তকাল ধরে পৃথিবীর ঘূর্ণন এর সাথে ঘুরতে থাকে । আবার
কসমিক রে বা মহাজাগতিক রশ্মি অনবরত পৃথিবীতে এসে আঘাত হানছে ।আঘাত হানছে জীব জগতের
উপর অনবরত ভাবে ।
(69)
ক্ষেত্র বিশেষে এটা দিনের পর দিন অনবরত ভাবে
আমাদের কোষের ক্ষয় ও ক্ষতির কারণ হয়ে দাড়িয়েছে । পৃথিবীর বায়ুমন্ডল থেকে
ওজোনস্তরের ঘনত্ব কমে যাওয়ার ফলে অতিবেগুনী রশ্মি ও কসমিক রে খুব সহজেই তার
ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারছে আমাদের উপর । ফলে তেজস্ক্রিয়তা জনিত রোগব্যাধীতে
আক্রান্ত হবার ঝুকিও বাড়ছে । মহাজাগতিক রশ্মির সঠিক উৎপত্তিস্থল নির্দিষ্ট নয়
।ধারনা করা হয় লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দুরের সুপারনোভা থেকে এগুলো আসছে । মহাবিশ্ব
সৃষ্টির শুরু থেকেই এগুলো সমানে পতিত হচ্ছে পৃথিবীর উপর।সবশেষে এটাই দাড়াচ্ছে যে
আমরা যেটা দেখছি, যেটা শুনছি সবটাই আপেক্ষিক ও সাজানো একটা পরিবেশ । এটাই শেষ কথা
নয় । যেভাবে সিনেমা সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে সেটাই সেভাবে আমরা দেখছি ও শুনছি । তাহলে
আমরা যেটা দেখছি ও শুনছি তার বাইরে তো এক মহা অজানা, মহা রহস্যময়, এক অলৌকিক জগৎ
থাকতেই পারে ।এটা অসম্ভব অবাস্তব, অযৌক্তিক বা গাজাখুরী গল্প বা অনুমান ভিত্তিক
কথা নয় । লোক সমাজে বহুকাল ধরে প্রচলিত জ্বীন-ভূত –প্রেত-রূহ তথা প্যারানরমাল জগৎ
নেই বলে দেওয়াটা হয়তো অতি বিজ্ঞান বা অতি বাস্তবতাবাদে সম্ভব ।কিন্তু একবার
ভাবুনতো এ সব নেই বলে দেওয়াটা কতটা যুক্তিযুক্ত ।
ভিডিও
ক্যামেরা আবিষ্কারের আগে মানুষ কি কখনো ভাবতো যে, আমাদের ইচ্ছাকৃত মূহুর্ত
ক্যামেরার রিল বা মেমোরিতে ধরে রাখা সম্ভব ! এখন যেটা সম্ভব নয়, বিজ্ঞানের কল্যানে
হয়তো একদিন তা সম্ভব । কে ভেবেছিলো যে মোবাইল দিয়ে হাজার মাইল দুরের লোকের সাথে
কথা বলা সম্ভব ।মোবাইল ব্যবহার করছেন বলে, ব্যাপারটা বুঝতে পারছেননা । একটু ভেবে
দেখেছেন কত জটিল ব্যাপারটা । পৃথিবী বলি
আর বিশ্বজগৎই বলি তা অপার শক্তির আধার । পৃথিবীতে যত গাছপালা আছে তার হাতেগোনা
কয়েকটি ছাড়া আমরা এখনো সবগুলোর গুণাগুণ সম্বন্ধে জানতে পারিনি । এর ভিতর কোনটার
আছে জ্বালানী তেল প্রদান গুণ, দুরারোগ্য ব্যাধির ঔষধ প্রদান গুণ । পৃথিবীতে লক্ষ
লক্ষ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে । হাতে গোনা হয়তো শত থেকে হাজার খানেক উদ্ভিদের প্রজাতির
ভেষজ, ফল, কাঠ ও ফসলের জন্য আমরা ব্যবহার করি, বাকি ৯৯% উদ্ভিদের ব্যবহার আমাদের
অজানা । সামান্য যদি বলি আমের কয়েকটি জাতের নাম বলুন যেগুলোর নাম
(70)
আগে কেউ শোনেনি তাই আপনি আমি বলতে পারবোনা
।এই ধরুন ফ্লোরিগান , আরুমানিস , কালাপাহাড়ী ইত্যাদি ।হতে পারে এর কোনটার
ভিতর লুকিয়ে আছে দুরারোগ্য রোগ বিধান ঔষধ, বা বার্ধক্য প্রতিরোধী গুণ, বা অজানা
অত্যাশ্চর্য কোন গুণ ।পৃথিবীর সব প্রাণীর সন্ধানও কিন্তু আমরা পাইনি , পৃথিবীর জলে , স্থলে , পাহাড়ে , গুহাতে , বনে ও ভূগর্ভে এখনো লুকিয়ে আছে অনেক অদেখা অজানা সভ্যতার মানুষ , বিভিন্ন অদেখা পশু পাখি , যে মানুষদের বর্ণণা বা যে সকল পশু বা প্রাণীর বর্ণনা আমাদের আধুনিক বিজ্ঞানীদের ও জানা নেই ।হয়তো ভবিষ্যতে পৃথিবীতে কোনদিন তাদের খোজ পেয়ে যাবো । মানুষ কালে কালে বিভিন্ন অতি আশ্চর্য শক্তির
সন্ধান পেয়েছে , আশ্চর্য দ্রব্যগুন আবিষ্কার করেছে, সভ্যতাকে চরম উন্নতিতে নিয়ে
গেছে, অদৃষ্টের প্রভাবে যুদ্ধ বা প্রাকৃতিক দূর্যোগ বা ভৌগলিক পরিবর্তনের কারণে
ধবংশ হয়ে গেছে । আমার মনে হয় আমাদের এই যুগের মত সভ্যতার ছোয়া পৃথিবী অনেকবার
পেয়েছে আবার ধবংশ ও হয়ে গেছে ,আলকেমি নামক ৫০ জনের একটা সংগঠনের অনেক অত্যাশ্চর্য আবিষ্কার আজ পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত । কতবার মানুষ সভ্যতার চরম শিখরে আরোহন করেছে আবার অনুন্নত অবস্থায় ফিরে গেছে
তার ঠিক নেই । যত উন্নত আমরা হই না কেন আমাদের বসবাসের ভূখন্ড ২০০ ফুট মাটি বা
পানির নিচে যাবেনা এটা বলতে পারিনা বা নিশ্চয়তা দিতে পারিনা, কারন আমরা ভেসে আছি
পানি আর তেলের উপর মাটির জাহাজে । নিশ্চয়তা দিতে পারিনা বা ঠেকাতে পারিনা
প্রাকৃতিক দূর্যোগ , ভূমিকম্প, সুনামী, ভূমিধ্বস, মহাযুদ্ধ। তাহলে আজ যেটা আছে / নেই সেটা ভবিষ্যতে আছে বা নেই হয়ে যাবেনা এমন
নিশ্চয়তা দেওয়া যাবে কি ? জ্বীন –ভূতের গল্প বা হন্টেড প্লেসগুলো নিয়ে চলে আসা
কাহিনীগুলো শুধু কাহিনী হোক বা লোকশ্রুতিই হোক এগুলো চলে আসছে যুগ যুগ ধরে, সুদুর
অতীত থেকে ।
বিজ্ঞান যেমন বলেই দিয়েছে ভুত-প্রেত-জ্বীন-আত্বা –প্রেতাত্বা এ সব অবচেতন মনের
নিছক খেয়াল বা অলস মস্তিস্কের কল্পনা প্রসূত গল্প মাত্র, তেমনি আধিভৌতিক এসব ব্যাপারগুলোর পক্ষে বলা মানুষ ও গবেষকের ও অভাব নেই ।
হ্যারি প্রাইস, স্যার উইলিয়াম ক্রুকস , কার্লিস ওসিস উল্লেখযোগ্য নাম ভৌতিক
গবেষণাতে ।
(71)
আর আমাদের সামনেই তো আধুনিক যুগে সৌদি আরবে
ওয়াদি আল জ্বীন নামক যায়গা(মদিনার আল বায়দা উপত্যাকা তে) এই ওয়াদি আল জীন এ কোন গাড়ি
ইঞ্জিন বন্ধ করলে চললে ১২০ কিমি গতিতে মদিনার দিকে উল্টো
চলতে শুরু করে, যে কোন জিনিস ফেলে দিলে সেটাও পাহাড়ের ঢাল বেয়ে উঠতে থাকে, সৌদি
সরকার এই এলাকা সাম্প্রতিক কালে চলাচলের জন্য অনেক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে, অনেকে
মনে করেন এটা ওই এলাকাতে মাধ্যাকর্ষণের বিপরীত সুত্র এবং কেউ কেউ একটা মিথ এর দাবি
করেন যে যদিও এটার একেবারে কোন সঠিক ভিত্তি নেই , সেটা হল একবার হুজুর সাঃ এর একদল
জীনের সাথে দেখা হয় , তারা কোন এক কারনে চুক্তি করে যে আমাদের এলাকায় মানুষ আসবে
না , তখন থেকে এখানে কোন মানুষ বা গাড়ি যাই আসুক তাকে উল্টো দিকে মানে মদিনার দিকে
ফেরত দেওয়া হয় । সৌদি সরকার এই যায়গাতে বিকাল ০৪ টার পর চলাচল নিষিদ্ধ করে দিয়েছে
। ভারত সীমান্তের লাদাখ, বাংলাদেশের গানস অফ বরিশাল নামক মিথ (১৮৯০ সালে টিডি
লাটুস এর এক প্রতিবেদনে ১৮৭০ সালে প্রথম শোনা এক বিকট শব্দের উল্লেখ আছে,
মিস্টপুফার্স বা গঙ্গা ব্রক্ষপুত্র ডেল্টার অব্যাখ্যাত শব্দ বলে যাকে আর কি, এটা
বরিশালের তৎকালীন অববাহিকাতে শোনা যেতো , ১৮৮৬ সালে কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির
হিসাব অনুযায়ী খুলনা ও নারায়নগন্জেও এ শব্দ শোনা গেছে বলে জানা যায় , সাধারণত নদী
অববাহিকায় ভুকম্পন ও নদীর তলদেশের প্লেটের স্থানচ্যুতির মাধ্যমেও এই বিকট রহস্যময় শব্দের উৎপত্তি । কামানের গোলার শব্দের
সাথে এর মিল আছে ।এমন একটা শব্দ শুনলেন যেটা শুনে আপনার মনে হল বোমা বিস্ফোরণের মত
, গুলির শব্দ এর মত , কিন্তু বাইরে এসে দেখলেন কোন বোমা গুলি কিছুই বিস্ফোরিত হয়নি
।প্রকৃতি আপনা থেকে উৎপন্ন করেছে এ শব্দ এই রহস্যময় শব্দই রহস্য ইতিহাসে গানস অফ বরিশাল হয়ে আছে । তবে ১৯৫০ এর পর এরকম শব্দ আজ পর্যন্ত কউ শোনেনি),
হিমালয়ের অমর মানুষ মিথ, হিমালয়ের ইয়েতি বা তুষারমানব রহস্য , হিমালয়ের রক্ত তুষার
এ সব সহ হাজার হাজার মিথ সারা পৃথিবীজুড়ে এই যুগেও রয়েছে ।।বিজ্ঞানীদের
জানামতে পৃথিবীর মরুভূমি , জঙ্গল ও সমুদ্রের নির্দিষ্ট কিছু
যায়গা বিজ্ঞান , চুম্বক ও মাধ্যাকর্ষণের সুত্র মানেনা , বিজ্ঞানীদের কাছে
অনাবিষ্কৃত এ রকম অনেক যায়গা এখনো থাকতে পারে ।
(72)
**** গ্রাম বাংলাতে বা শহরে প্রচলিত কিছু কমন ভৌতিক ঘটনা ও তার ব্যাখ্যা ***
ঘরের চালে গভীর
রাতে ইট পাটকেল পড়া – ঘরের চালে গভীর রাতে ঢিল পড়া ,
কিছু যেন চালের বা ছাদের উপর দিয়ে হেটে যাচ্ছে এরকম অনেক কিছু আমরা প্রায়ি শুনে
থাকি ।এগুলো সাধারনত ভয়ের ব্যাপার হয়ে দাড়াই আমাদের
কাছে । এগুলোর ক্ষেত্রে সাধারনত অতিপ্রাকৃত কিছু হবার কারন গুলো অস্বীকার করে ফেলা
যায় খূব সহজেই । কারণ ইট-পাটকেল ঢিল এগুলো সাধারণত কারোর ছোড়া হতে পারে ।আবার হতে পারে লক্ষ করে দেখবেন কোন কোন বাড়ির পিছনে দিকে নারকেল গাছ থাকে ,
সুপারী গাছ থাকে ।সেসব থেকে টিনের চালে এগুলো পড়ে
। কেউ দুষ্টুমী বশত ঢিল ছুড়তে পারে । আগে শোনা যেতো
মানুষ গ্রামে বা পাড়াতে এটা সেটা দেখতো । এখন দেখে না
কেনো ,আচ্ছা আপনার আমার বাড়ীর আশেপাশে কি আপনি বা আমি আধিভৌতিক কি কিছু দেখি ?
দেখিনা বলা যায় ১০০ % নিশ্চিত। তাহলে প্রকৃত ঘটনাটা
কি ? । এখন বলতে গেলে সবজায়গাতে মানুষ এর
কোলাহল, বলতে গেলে লোকে লোকারণ্য, বলতে গেলে মানুষ দখল করে নিয়েছে সব যায়গা । যেটুকু যা ফাকা যায়গা ছিলো সেটাও ও দখল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন নতুন উন্নয়নের
ধাক্কাতে । বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে ঊল্লেখ পাওয়া যায় জ্বীন
,ভূত এগুলো নির্জন স্থানে থাকে , মানব বসতি থেকে বেশ দুরে থাকে । তাহলে এরা বসবাস করে সব নির্জন স্থানে । কিন্তু
সর্বক্ষণ নির্জনে গেলেই কী দেখা যায় এদের । আজ পর্যন্ত যত
মানুষ এসব দেখেছে তারা কেউই এগূলো দেখাতে পারেনি , অন্য কাউকে যখন তখন ডেকে নিয়ে দেখাতে । কিন্তু তারপরেও মানুষ কী এগুলোর গল্প বা ভয় কে সম্পূর্ণ রূপে ছাড়তে পেরেছে । ছাড়তে পারেনি । আচ্ছা এখন কী নির্জন স্থান গূলো আছে , তেমন
নেই ।আর
মানুষের বিজ্ঞানমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে অনেক মানব সৃষ্ট ভৌতিক কাহিনী বিলুপ্ত হয়েছে ।
তবে এখনকার যুগে মানুষের বাড়ীর ছাদ
গূলো বলা চলে দিন এবং রাতে সম্পূর্ণ রূপে নির্জন । ছাদে কেউ যায়না বললেই চলে । রাতের ছাদ গুলো
আড্ডাখানা নয়তো এসবের !!। হয়তোবা । বর্তমানের
বহুতল ভবনের ছাদগুলো এদের জন্য নিরাপদ
আড্ডার যায়গা হয়ে যায়নিতো ।
(73)
আমার এসব গাজাখুরী গল্প না বিশ্বাস করলেও চলবে । তবে বইটার বিষয়বস্তু গূলো আজগুবী
ব্যাপার নিয়ে হলেও , যুক্তি , সম্ভাবনা আর হারানো কিছু জ্ঞান নিয়ে এর
আলোচনা । সব কিছু এখানে প্রমাণিত সত্য হবে তা নয় । ইন্টারনেট ঘেটে
পৃথিবীর অনেক ভৌতিক যায়গার নাম দিতে পারতাম ।কিন্তু দিলাম না
এজন্য যে সেগূলো আপনাদের ভূত কাহিনী প্রেমী পাঠক দের কারো না কারো পড়া । আসলে আমি মনে করি ভূত দেখার পিছনে বা ভৌতিক কাহিনীর পিছনে দুটো কারন থাকতে
পারে ।
প্রথমত – মানুষের সবার
চোখ থেকে লাখে বা হাজারে একজনের ভিন্ন রশ্মি ধরার ক্ষমতা থাকতে পারে । সে ওই রশ্মি
রং ধরতে পারার কারনে সে অদ্ভূত যে জিনিসটি দেখলো সেটা বাকি নয় লক্ষ নিরানব্বই
হাজার মানুষের কাছে অদেখাই রইলো । ফলে সবাই ব্যাপারটা সত্যি হওয়া সত্ত্বেও
গাজাখুরি বলে উড়িয়ে দিলো । পূর্বেই অধরা সিক্সথ সেন্সের কথা বলেছি ।
দ্বিতীয়ত অনেকে বিশেষ কারণে বা ব্যাক্তিগত স্বার্থ
উদ্ধারে ভৌতিক কাহিনীর রটনা করতে পারে বা জ্বীনে ধরার অভিনয় করতে পারে । যেমন আমরা
ভন্ড সাধুদের জ্বীন তাড়াতে বা রোগ সারাতে নানা
রকম অদ্ভূত সব কুকীর্তির খবর প্রায়ই পত্রিকায় দেখি । ভূত দেখানোর ফ্রড অনেক
ট্রিকস আছে । বইয়ে সেগুলো আর লিখলাম না । বিজ্ঞানের এই স্বর্ণ যুগে ভূত দেখানো বা
ভৌতিক পরিবেশ তৈরি কোন ব্যাপারই না ।
**** আগুন উড়ে যাওয়া -গ্রাম এ একটা গল্প প্রায় শুনি আমরা ,আজ থেকে
বেশ আগে ছোটোবেলাতে শুনতাম, এখনো অনেক সময়ে শুনি, কেউ একজন রাতে যখন সে বের হয়েছে হঠাৎ তার থেকে খানিকটা সামনে দিয়ে
আগুন এর পিণ্ড উড়ে গেছে
আগুণ এর পিণ্ড উড়তে দেখাটা এমন কোন
ব্যাপার নয় । অনেক কাল আগে থেকে সেই সুদূর প্রাচীন থেকে
জাহাজ এর নাবিক, রাতের মরুযাত্রীরা সবাই দেখত যে আকাশ ঠিক আগুন ছুটে আসছে । এটাকে অনেকে বলেন তাঁরা খসা বা উল্কাপাত ।
(74)
আকাশ থেকে আসা
কোন পাথর বা ধাতব খণ্ড যখন বাতাসের সংস্পর্শে আসে তখন সেটা জ্বলে ওঠে । অনেক সময় পতিত হবার উচ্চতা এবং কোনের উপর নির্ভর করে সেটা অনেকক্ষণ দেখা যেতে
পারে । কিন্তু যখন আপনি সেটা গিয়ে দেখলেন কোন গাছের উপর পতিত হয়ে অনেকক্ষণ জ্বলছে বা
আপনার সামনে দিয়ে খুব নিচে দিয়ে গিয়ে ঘুরে ঘুরে বেড়াতে লাগলো । এটা কে কি ঊল্কা বলা যাবে , বা ঊল্কা
তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করা যাবে ? । বিজ্ঞানীদের
এসব ক্ষেত্রে যুক্তি একটাই প্রমান দেখান , যখন ঘটে ডেকে নিয়ে দেখান, দেখাতে
পারবেননা তো, এটাই আমার কাছে সবথেকে বোরিং একটা যুক্তি মনে হয় , একতরফা যুক্তি মনে
হয় , গৎবাধা উত্তর মনে হয় । কারণ যখন ঘটবে সেটা দেখানোর জন্য মানুষ যখন
ডেকে নিয়ে যাবে তখন তো এটা স্বাভাবিক ভাবে আর সর্বসাধারণের দেখার জন্য বসে থাকবে
না ।ভৌতিক ঘটনা হঠাৎ করে আপনার মানসিক দুর্বলতা ,হ্যালুসিনেশন, নির্জন পরিবেশ বা বিভিন্ন
কারনে হতে পারে । সর্বসাধারণের সামনে ঘটেছে এমন টা কখনও হয়না । যেই দেখেছে বলতে গেলে যখন একা ছিলো সেই মানুষটি ।এই কারনে ভুত প্রেতের ব্যাপারটা কখনো দেখা সম্ভব হয়না , প্রমান করবার মত
প্রমান ও পাওয়া যায়না । এই ধরুন ভারতীয় যুক্তিবাদী বিজ্ঞান সঙ্ঘের
প্রতিষ্ঠাতা প্রবির ঘোষ ০৩ সেপ্টেম্বর
২০১২ তে একটি টেলিভিশন চ্যানেল এ হাজির হন নাগেরবাজার এর উড়ালপূলের ভুত দেখার জন্য
। সেখানে কোন ভুত নেই বলার জন্য তিনি লাইভ এ যান, অনেক মানুষ ব্যাপারটা দেখে,
অবশেষে আড়াই ঘণ্টা অপেক্ষা করার পর দেখা যায় ভুত বলে কিছু নেই । প্রমান হয়ে যায় সেখানে ভুত বলে কিছু নেই ।কিন্তু
ব্যাপারটা কি হল, আমার মনে হয় এরকম পরীক্ষাটা যুক্তিযুক্ত নয় , আপনি লাইভ দেখলে কিছু
পাওয়া যাবে বলে মনে হয়না । আছে কি নেই বুঝতে হলে একেবারে একা বিনা
ঘোষনাতে গিয়ে দেখলে হয় ব্যাপারটা ।
আমাদের দেশে এবিসি রেডিও তে জনপ্রিয় আরজে কিবরিয়া ভাইয়ের উপস্থাপনায় ডর
নামে একটা অনুষ্ঠানে ডর লাইভ এ যেতেন, কিন্তু ভৌতিক যায়গা
গুলোতে দলবেধে
গিয়ে , আধুনিক ক্যামেরা দিয়ে হইহুল্লোড় করে কি ভুত দেখা
(75)
সম্ভব !। ভূত দেখার
একটা আইডিয়া হতে পারে তা হল কারো গায়ে যদি
একটা সিসি কামেরা বসিয়ে তাকে হন্টেড প্লেস এ পাঠানো যায় আর তার আর কয়েক মাইল এর
ভিতর কেউ না থাকে তাহলে হয়তো কিছুটা প্রমান পাওয়া যেতে পারে, ,আছে কি এরকম সাহসী
কেউ ? এরকম
সাহস কি আছে কারো, মনে হয় নেই ।আবার বিভিন্ন পীর ফকির
ঋষি দরবেশ দের অলৌকিকত্ব কে অনেকে প্রতারনা বা হাত সাফাই বলে থাকেন ।আমার কথা হলো ঢালাও ভাবে প্রতারনা বা হাত সাফাই বলাটা যুক্তির কথা নয়, কারনটা
হল আপনি যেটা জানেননা এবং অসম্ভব বলে মনে করেন সেটা তার কাছে এক অজানা বিজ্ঞানের
জন্য সম্ভব বলে মনে হচ্ছে । অলৌকিক বলে কিছু নেই ,আর আপনি যেটা কেই অলৌকিক
বলে মনে করেন সেটা হলো আমাদের অজানা বিজ্ঞান, সব অলৌকিক ঘটনার পিছনে থাকে একটা বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা ।অলৌকিক ঘটনা হল অজানা এক বিজ্ঞানের ঘটনা ।যে বিজ্ঞান আমরা জানিনা , যে ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই সেটাই আমাদের চোখে অলৌকিক
হিসেবে ধরা দেয় । মুলত অলৌকিক যত কিছু ঘটুক না কেন তা অবশ্যই একটা অজানা
বিজ্ঞানের খেলা । প্রত্যেক অলৌকিক বা ভৌতিক ঘটনার পিছনে দায়ী হলো আমাদের
অজানা এক অলৌকিক বিজ্ঞানের জগত এর খেলা ।
অবশ্য যদি আপনি কখনো অলৌকিক কিছু দেখতে পায় । এই আগুন ধরবার পিছনেও সেইরকম অজানা কোন বিজ্ঞান কাজ
করছে । পৃথিবীতে আমরা আসা
আর যাওয়ার খেলাতে এক অভিনেতা মাত্র । কিন্তু কখনো অদেখা কিছু দেখেছেন , আসলে হাতে কলমে
ধরিয়ে বা চোখে আঙ্গুল দিয়ে অদ্ভুত কিছু
দেখানো যায়না । আপনার খোলা চোখ কান ই সাহায্য করতে পারে অনেক অদ্ভুত কিছু
দেখতে। হাতে নাতে কিছু
দেখানো যাবেনা বা দেখাতে পারবনা যদিও তবে কিছু ধারনা আপনাদের দিতে পারব পাঠক ইউটিউব আছে বলে কিছুটা অদ্ভুতের ছোয়া আপনাদের
দিতে পারি ।
ইউটিউব এ যান আর লিখুন illusion এই শব্দটি আর এই illusion শব্দটিকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে লিখুন বিভিন্ন ভাবে যেমন illusion এর আগে লাগিয়ে দিন mind blowing , তারপর illusion
এর আগে লাগিয়ে দিন optical , এরকম ভাবে illusion
এর আগে মন মত কয়েকটা শব্দ লাগিয়ে নিলে রহস্যময় অনেক
(76)
কিছু আপনি দেখতে পারবেন, youtube এ ভুত বা GHOST লিখে দেখার দরকার নেই, কারন ভুতের
অনেক এডিটেড বা সম্পাদিত নকল ভিডিও পাবেন , আসল কিছু না পাবার সম্ভাবনা ৯০%। তবে illusion
আর top magicians magic লিখে ইউটিউবে সার্চ দিলে অনেক অজানা রহস্য
আপনার কাছে পরিষ্কার হবে । মরিচীকার নাম শুনেছেন না, সেটাও কিন্তু এক প্রকার optical
illusion ।আসুন কিছু illusion এর স্থির চিত্র দিই, ছবিগুলো স্থির
কিন্তু আপনি ঘূণায়মান বা নড়ছে ভেবে ভুল করবেন, এর পিছনে আছে আপনার বা আমার সাধারণ
জ্ঞানের বাইরে মাথা খাটিয়ে আকানো
প্যাটার্ণ, আসুন ছবিগুলো দেখে নিই –
- .
(77)
এই ছবিটার নাকের লাল বিন্দুতে ৩০ সেকেন্ড রাতে এক নজরে
পলকহীন তাকিয়ে থাকুন । তারপর সাদা দেয়ালে ওই পলকহীন অবস্থায় তাকান , স্পষ্ট মাইকেল
জ্যাকসন এর ফটো দেখবেন সাদা দেয়ালে
(78)
মরূভূমির
মূসাফির ঠিকই পানি দেখে কিন্তু বাস্তবে কিন্তু তা নেই । এটার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা
হলো মরূভূমির প্রচন্ড রৌদ্রে ও তাপে বায়ুমন্ডলে পানির কৃত্রিম চিত্র সৃষ্টি , এর
ছোট সংস্করণ দেখবেন গ্রীষ্মকালের দুপুরে যখন প্রাণীকুলের জীবন অতিষ্ট তখন নতুন
চকচকে টিনের চালে তাকালে কিছুটা মরিচীকার নমুনা দেখতে পাবেন ।মনে
পড়ে ছোটবেলার কথা ওই যে ধরুন রাতে সাইকেলের সামনে যখন আমরা বসে থাকতাম হতে পারে
সেটা বাবার সাথে রাতে সাইকেল এ চড়ে কোথাও যাওয়া , তখন বলতাম বাবা চাঁদ আমাদের সাথে
সাথে দৌড়াচ্ছে, ওই যে বাড়ির উঠানে যে চাঁদ ছিল সেটা আমাদের সাথে এত দূর চলে এসেছ,
এটাও কিন্তু একপ্রকার দৃষ্টিবিভ্রম । চাঁদ কিন্তু তার
যায়গাতেই বিদ্যমান, কিন্তু তাকে সবখান থেকে দেখা যায় বলেই চলন্ত কিছুর উপর বসে
থাকলে আমাদের মনে হয় সে আমাদের সাথে যাচ্ছে। বাসে চড়লে মনে
হয় জানালার বাইরের গাছগুলো, ঘরবাড়ি বা মানুষগুলো আমাদের সাথে সাথে দৌড়াচ্ছে। এটা
কিন্তু মনে হয় আমাদের বাস গতিশীল আর বাসের জানালার বাইরের জিনিসগুলো স্থির বা কম
গতিশীল বলে ।যদি জানালার বাইরের জিনিসগুলি বাসের সমান গতিশীল
হতো তাহলে আমরা দেখতাম সেগুলো স্থির ।কিন্তু আসলে সেগুলো
গতিশীল, কিন্তু দেখলাম স্থির, তাহলে ব্যাপারটা কি দাড়ালো ।চোখের
দেখার কি এক অদ্ভুত ভুল ।আমার নিজের একটা মজার খেলা আর
অভিজ্ঞতার কথা বলি, অনেকে হয়তো খেয়াল করে থাকবেন ব্যাপারটা ।তবুও
বলি, আমি যখনই মাথার উপর ছাদবিহীন গাড়ীতে কোথাও যাই, ধরুন সেটা রিকশা বা ভ্যান,
তখনই আকাশের দিকে চেয়ে থাকি চিবুক উচু করে যতটা উপরে তাকানো যায় ।এতে একটা বিভ্রমের সৃষ্টি হয় , বিভ্রমটা হল মনে হবে যেন আপনি রিকশা বা
ভ্যান থেকে আস্তে আস্তে আকাশে উঠে যাচ্ছেন ম্যাজিক এর মত ।গাড়িটা
যত দ্রুত চলবে আপনার বিভ্রমটা তত বেশি বাস্তব মনে হবে ।তবে
নিজের কাছে বিশাল একটা মজাকর অনুভুতি হয় ।illusion বা
দৃষ্টিবিভ্রম সবশেষে আরো একটা বড় উদাহরণ দিই।আমরা একসময় শোয়েব আখতারের বোলিং দেখতাম ।
(79)
আপনি এখনো ইউটিউবে দেখবেন শোয়েব আখতার
যখন বোলিং করেন যে কারোরই সেটা দেখে মনে হবে তিনি ছুড়ে বল করছেন, ক্রিকেটের কেতাবি
ভাষাতে যেটা বলে চাকিং। কিন্তু না তিনি হাত ঘুরিয়েই বল করেন, কিন্তু ওনার
হাতের গঠনগত ত্রুটির কারনে বোলিং করতে
দেখলে মনে হয় চাকিং করছেন ।
শোয়েব আখতারের হাতের গঠনে
আপনি কি ব্যাতিক্রম কিছু দেখছেন ??
(80)
**নির্জনে সাদা কাপড়ে লোক
দেখা বা মৃত মানুষ কে কোথাও দেখা -- আচ্ছা এটা কেন হয় বলতে পারবেন । আপনি কখনো দেখেছেন ?। বলা হয় কবর
স্থানে “ঘুল”
নামক এক প্রকার জ্বীন থাকে তারাই এরকম রুপ ধরে, বা হতে পারে কারিন জ্বীনের মৃত
বাক্তির রুপ ধারন। হতেই পারে, আপনি কি কখন দেখেছেন । গভীর
রাতে কবরস্থানে যাবার মত সাহস কি আপনার আছে , আমার তো নেইই । আপনাদের এত সাহস
না থাকা ভালো । আমরা তো সবকিছু চোখ বুজে নেই বলি, কিন্তু কি জানি কেউ কি
এসব নিয়ে পরীক্ষা করে বলে ব্যাপারটা। মুলত এই সব ঘটনা গুলো নির্দিষ্ট সময় বা ফ্রেম এ বেধে
পর্যবেক্ষন সম্ভব নয় বলেই এগুলো মানুষের পরীক্ষাতে নেই হয়ে গেছে। কিন্তু
প্রমাণিত নেই হবার পরেও মানুষ এগুলো বিশ্বাস করে। কি আছে বা নেই
ব্যাপারটা অনেকটা রহস্যময়। আসলে সময় বলে কি কিছু আছে , সময় তো আমাদের বানান
একটা সিসটেম বা কাল পরিবর্তনের একক মাত্র, ঘড়ি তো সুর্য্যের আলো আর পৃথিবীর
আবর্তনের হিসেব করে আমরা সময় নামক একটা ব্যাপারের জন্ম দিয়েছি। ধরুন সুর্য্য পৃথিবির একপাশে আলো দেই,একপাশে পৃথিবীর
ঘুর্ননের কারনে অন্ধকার, আরেকপাশে খরা, একই সময়ে একপাশে বাপক বৃষ্টি বা ব্যাপক শীতকাল
এরকম চলছে। আসলে কি জানেন
গুরু বা শক্তিমানের শ্রেষ্ঠত কিসে জানেন, শক্তিমানের শ্রেষ্ঠত্ব কিসে বা প্রকৃতির
রহস্যময়তা কিসে এটা বোঝবার সূবিধার্থে একটা কয়েক লাইনের গল্প বলি। একবার একজন
যাদুকর টেলিভিশন এ একটা যাদু দেখাচ্ছেন, যাদুটা এমন যে তার হাতে একটা ডিম আছে,
দর্শক সবাই দেখল একটা ডিম যাদুকরের হাতে, ভাল করে দেখা হল তার হাতে আর কিছু নেই।
এবার যাদু মন্ত্র বিড়বিড় করার মত কিছু পড়ে হাত ঘোরালেন সবাই দেখলেন ডিমটা হাতে ভেঙে
একটা মুরগীর বাচ্চা বেরিয়ে এল। সবাই ভাবলো এটাই যাদু, কিন্তু কয়েক মুহূর্ত পরেই
দেখা গেল হাতের আরেক ঘুর্নিতে মুরগীর বাচ্চাটা হাতে নিতেই সেটা ডিম হয়ে গেলো। শ্রেষ্ঠত্বের
বা অব্যাখ্যায়িত আরো একটা উদাহরন দিই। ধরুন একটা লোক ০৫ তলা থেকে কোন লাইফ সাপোর্ট ছাড়া পড়লো,
কিন্তু মরলোনা । এ রকম ঘটনা কিন্তু ঘটে বাস্তবেই ।
(81)
কোন এক ক্রিকেট দলের নাম ÔÔকÕÕ ,
এই ÔÔকÕÕ দলের দরকার ০৬ বলে ০৩ রান , হাতে ০৪ উইকেট। তাহলে ÔÔকÕÕ’ দল এর না
জেতার কোন কারণ নেই।কিন্তু দেখা গেলো প্রতিপক্ষ দলের একজন বোলার সবগুলো উইকেট তুলে
নিলো মাত্র ০১ রান দিয়ে । ফলশ্রুতিতে ক দল হেরে গেলো অবিশ্বাস্যভাবে ।আবার ধরুন
দুটো দলের ফুটবল খেলা হচ্ছে । একটা দল ৮০ মিনিট পর্য্যন্ত দুই গোল দিয়ে এগিয়ে আছে
। ফলশ্রুতিতে ২য় দল গোলশূন্য থাকায় তাদের কোনরকমই জেতার সম্ভাবনা নেই । কিন্তু শেষ
১০ মিনিটে গোলশূন্য দলটি ০৩ টি গোল দিয়ে জিতে গেল । অবিশ্বাস্য আর অসম্ভব শোনা
গেলেও ক্রিকেট আর ফুটবলে এরকম ম্যাচ এর নজির বেশ কিছু আছে । এ রকম উদাহরণটা দিলাম
ক্ষমতার উপর ক্ষমতার (ট্রাম্প ওভার ট্রাম্প) কিছুটা বোঝানোর জন্য বা অতিপ্রাকৃত বা
অলৌকিক মানে কি সেটা বোঝানোর জন্য । ধরুন আমরা জানি আমাদের মানবদেহের কোন অঙ্গের
কি কাজ , অপারেশন বা শল্য চিকিৎসা আর ঔষধ সবই আমাদের কাছে আছে, তারপরও কি একটা রহস্য যেন থেকে যায় মনে হয় তাইনা । মানব সন্তান জন্মের
প্রক্রিয়া আমরা জানি , কিন্তু , তারপরেও একটা রহস্য কিন্তু থেকেই যায়, আমাদের
চোখের আড়ালে অদৃশ্য একটা শক্তির দ্বারা ১০ মাস সবকিছু নিয়ন্ত্রিত হয়, আমরা সবাই এত
সাবধানে পথ চলেও দূর্ঘটনায় পড়ি, ব্যাপারটা হলো সব খেলোয়াড় বল দেখে খেলে কিন্তু
তারপরেও আউট হতে হয় কোন না কোন বলে ।আমরা এ রকম একটা অদৃশ্য শক্তির হাতে
নিয়ন্ত্রিত যে নিজের জ্ঞানে আর নিজের হাতেই কখন নিজের অপছন্দের কাজ করে বসবো তার
ঠিক নেই। আমরা সবাই ঝেড়ে দৌড়াতে পারি ,
কিন্তু উসাইন বোল্ট সবাই হতে পারিনা।কবিতা আর গল্পের লেখক লক্ষ লক্ষ হলেও নজরুল,
রবি ঠাকুর আর কেউ হলোনা ।মার্শাল আর্ট অনেকে দেখালেও আর কেউ ব্রুস লি হলোনা। ফুটবল
সবাই কম বেশি খেলি, সব দেশেই কঠোর প্রশিক্ষনের একটা জাতীয় দল আছে , কিন্তু সবাই
পেলে,ম্যারাডোনা, মেসি রোনালদো নেইমার হয়না । আমাদের জব্দ ভূমিকম্প প্রতিরোধী রড
আছে, দক্ষ ইন্জিনিয়ার এর প্ল্যান এ বাড়ি আছে , কিন্তু তবুও ভুমিকম্প ও এর
ক্ষয়ক্ষতি ঠেকাতে পারিনা ।
(82)
নদী শাসন করবার সব উপায় আছে
কিন্তু বন্যা ঠেকাতে পারিনা, নদীভাঙন ঠিকই সময়মত হয়ে যায় সবাই চায় টাকা সমৃদ্ধ
সুখের জীবন, কিন্তু শতকরা ০৫ জন ও সেই সোনার জীবন ধরতে পারেনা।কেমনে কেমনে সেই
টাকার পিছনে ছোটা মানুষটার জীবন বার্ধ্যকে এসে যায় , ত্রিশ বছর ধরে খেটেও অবস্থা
সেই এক রকমই আছে যখন উপলব্ধি করে তখন আর কিছু করার থাকেনা ।নিজের উপর আত্ববিশ্বাসী
মানুষটি তখন হয়ে যায় ভাগ্যবিশ্বাসী। এই ঘটনাগুলোর পিছনে কারণ হিসেবে আপনি
বিজ্ঞের মত অনেক কিছু বলবেন, যুক্তি
দেখাবেন কিন্তু কিছুতেই আপনি এই অদৃশ্য শক্তির তৎপরতা ঠকিয়ে রাখতে পারবেননা ।শিক্ষক
হলেও সব ছাত্রকে আপনি ১০০ তে ৯০ পাবার মত তৈরি করতে পারবেননা। সব কথার শেষেও একটা
কিছু থাকা, যুগে যুগে কালে কালে এই যে মানুষের হাতে থাকার পরও কিছুই হাতে নেই
উপলব্ধি হওয়া, সব কিছু শেষ হয়ে হয়ে যাবার
পরেও কিছু একটা থাকা আর কারো উপস্থিতি থাকার নামই সর্বশক্তিমান স্রষ্ঠার
অস্তিত্বের প্রমাণ । এটাই বোধ হয় স্রষ্ঠার শ্রেষ্ঠত, সবার শক্তি, দম্ভ, দৃষ্টিসীমা,
ক্ষমতা, কল্পনার যেখানে শেষ এর ও শেষ স্রষ্ঠার
সেখান থেকে শুরু মাত্র, শেষ কোথায় সেটা কল্পনাতেও আসা অসম্ভব ।
ভুতের পোড়োবাড়ি , সাদা কাপড়ে লোক দাড়িয়ে থাকা এসব কিছুর একটা ব্যাখ্যা থাকতে
পারে বা হতে পারে এগুলো বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষের খেয়াল মাত্র । তবে
যে যুগই হোক আর মানুষ যত আধুনিক হোক উপযুক্ত পরিবেশে পড়লে ভুতের ভয় বা রহস্যময়
ঘটনা আপনাকে বা আমাকে সাক্ষী বানাতে ভূল
করবেনা । যুক্তি থাকুক আর নাই থাকুক ।হোক সেটা হ্যালুসিনেশন বা ইলিউশন ।
কয়েকটা ভুতের গল্প(বিশ্বাস করতে বলিনি কিন্তু ,শুধু বিজ্ঞানমুলক একঘেয়েমী
কাটানো এবং উদাহরণ ও ব্যাখ্যার প্রয়োজনে )----
১)বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে ফেসবুকে আমার পোস্ট (স্ক্রিনসট সহ ) - ব্যাপারটা বলি কাকতালীয় না কি শুধুমাত্র বাস্তবতা
নাকি ভৌতিক, কি করে বলব ।বিশ্বকাপ ২০১৮ তে এসে জার্মানির বিদায়ে হঠাৎ
একটা ব্যাপার খেয়াল করে স্ট্যাটাস দিলাম ।স্ট্যাট্যাস টার
স্ক্রিনশট সহ দিয়ে দিলাম এখানে ।
(83)
(84)
এখন ব্যাপারটা কে কি বলবেন ? বাস্তবতার নিরিখে যৌক্তিক
ব্যাখ্যা আছে বটে, কিন্তু ভৌতিক বা অভিশাপ বলার যুক্তিও এখানে কম নেই ।কারন পুর্বের বিশ্বকাপ এ তারা যে টিম নিয়ে বিশ্বকাপ জিতেছিল, পরবর্তী বিশ্বকাপ
এ ও সেই টিম নিয়ে আসছে,বাছাই পর্বেও ভাল
খেলছে, কিন্তু বিশ্বকাপ এ এসে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দের বেহাল দশা হয়ে যায় । আছে এটার কোন ব্যাখ্যা আপনার কাছে ।আর আর্জেন্টিনার
সাপোর্টার হওয়ার কারণে রাউন্ড অফ সিক্সটিনে ফ্রান্সের কাছে হেরে বন্ধু ও সহকর্মী
মহলে আর্জিতিনার সাপোর্টার হয়ে গেলাম ।
২) আবার দেখুন LM-LIONEL MESSI
LM- LUKA MODRIC
দুজনেরই জার্সি নাম্বার ১০, দুজন
যথাক্রমে ২০১৪ এবং ২০১৮ তে সবার অনুমান ভুল করে, ফেভারিট এর বাইরে থেকে সবার
অনুমান ভুল করে ওনারা ফাইনাল এ উঠে যান । কিন্তু দুজন
কেই রানার্স আপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয় ।কি কাকতালীয় মিল
তাইনা । আসলে এর অনেক যুক্তিযুক্ত বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে তাইনা ।রহস্যময় এবং কাকতালীয় বা ভৌতিক জিনিসের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা অবশ্যই হয় ।কিন্তু এত ব্যাখ্যা এত, এত বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা থাকার পর ও রহস্য এবং কাকতালীয়
ঘটনা পৃথিবীতে অতীতে ঘটেছে, বর্তমানে ঘটছে এবং ভবিষ্যতেও ঘটবে ।বিজ্ঞানের দৃষ্টিতে দেখলেও সকল রহস্য আর ভৌতিক ঘটনার একটা বৈজ্ঞানিক
ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে ।কিন্তু এত ব্যাখ্যার
পরেও রহস্যময় ঘটনা ঘটে ।পৃথিবীতে সব সত্য প্রকাশ করা যায়না,কিছু চরম সত্য আড়ালেই
থেকে যায়, সব কিছুর প্রমাণ দেওয়া যায়না,সৃষ্টি ও ঘটনার কারিগরেরা আড়ালেই থেকে যায়
,সব সত্য প্রকাশ পেলে আপনার বা আমার অস্তিত্ব অথবা জীবনের রং থাকতোনা ,একেই বলে ভৌতিক বা রহস্যময় ঘটনা ও তার কারিশমা। হতে পারে এটাই মানুষের ভুত দেখার
কারন ।যে ভুত দেখবে সে মস্তিস্ক দোষে হোক,
আর সত্যিই দেখুক সে ভয় পাবে, বিশ্বাস করবে, কিন্তু যারা দেখেনি তারা সন্দেহের চোখে
দেখবে, হয়তো কিছুটা বিশ্বাস করবে কেউ, কেউবা করবেনা ।
৩) একদিন আমি অফিস শেষে বাসাতে ফিরছিলাম । সালটা ২০১৬ এর শেষে দিক ,শীতকাল, আকাশে বড় পুর্ণিমার চাঁদ ।যশোর ভোলা ট্যাঙ্ক রোডের অফিস থেকে ডিউটি শেষ
করে বাসাতে ফিরছি ।
(85)
সেদিন অফিস এ
একটা অনুষ্ঠান উপলক্ষে একটু বেশি রাত হয়ে গেল ।প্রায় ১১ টার মত বেজে গেল, অফিস ডিউটি থেকে বের হতে হতে, সাইকেল চালিয়ে
যাতায়াত করিনা যেহেতু, ইজিবাইক বা মোটর লাগান রিকসাই ভরসা । তো কোন রিকসাই সেই রাতে কিসমত নওয়াপাড়া শেষে বাহাদুরপুর বিলের নতুন হওয়া
আবাসিক এলাকা হাইওয়ে টাউন এ যেতে রাজি হলোনা ।যায়গাটা যশোর
যুব উন্নয়ন অফিস এর পাশে অবস্থিত হাইওয়ে টাউন নাম হলে হবে কি ? পুরাটাই গ্রাম এর
ফাকা মাঠের মাঝে নির্জন এলাকা ।বাহাদুরপুরের বিল কালের
পরিক্রমায় ও বিবর্তনে পানিশূন্য হয়ে মানব বসতি গড়ে উঠেছে ।তবে এখনও শুকনো মাটিতে ঘাসের সাথে বিলবাওড়ের জলজ উদ্ভিদ হেলেঞ্চা, কলমি, বিন্না
ঘাস (যশোরের আঞ্চলিক ভাষাতে পেতেল বন) জন্মে। প্রায় চতুর্দিকে গ্রাম ঘেরা এ রকম
একটা যায়গাতে ভাড়া বাসাতে থাকি । উপশহর এর পাশে হয়েও সম্পূর্ণ গ্রাম আবহের যায়গাটা খুব ভালো
লাগতো। এই মুল জমজমাট শহর এলাকা দড়াটানা ছেড়ে কোন রিক্সাওয়ালা নির্জন ওই এলাকাতে
যেতে রাজি হলোনা, এমনকি দিনের বেলার ৪০ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা দিতে চেয়েও রাজি হলোনা
। অগত্যা দড়াটানা মোড় এ একজন ইজিবাইক চালক পাওয়া গেল ।যার বাড়ি বাহাদুরপুর এর কোন এক জায়গাতে । সদর হাসপাতালে
রোগী দিতে এসেছিলেন ।এখন একা যেতে হবে, আমাদের পেয়ে ওনার বেশ ভাল
হলো । তো ইজিবাইক এ আমি, এক বুড়ো চাচা, আর মধ্য বয়সী একজন লোক । মাত্র মোবাইল এর ঘড়ি দেখে লাফিয়ে উঠলাম, ১২ টা প্রায় বাজতে চলেছে ।শীতের রাত ১২ টা প্রায় মানে বেশ রাত ।গায়ের সোয়েটার
টা খুলে ফেললাম, বুড়ো চাচা গ্রামের সরল হাসিতে বললেন, কি হলো ,শীতের রাতে জ্যাকট
খুলছো কেন, আমি বললাম খেয়েই মাত্র দৌড় দিয়ে দড়াটানা পৌছেছি । সে জন্য এ অবস্থা । বেশ হাপাচ্ছি তখনো ,যদিও দড়াটানা এসেছি ২০
মিনিট হয়ে গেছে । আগের বুড়োরা যেমন বলেন, ঠিক তেমনি করে উনি বলা
শুরু করলেন ,তোমাদের বয়সে আমাদের এরকম শরীরের রক্ত টগবগ করে ফুটতো । শীতের রাতে রস চুরি করেছি, মাঘের শীতের কনকনে সকালে কোমর পানিতে নেমে মাছ ধরেছি ।
(86)
এখন আর গায়ে শক্তি পাইনা । বুঝলে বাপু বয়সই
সবকিছু । এই দেখ আমার সামনের উপরের পাটির দাঁত দুটো নেই । কেন নেই জানো, যুবক বয়সে মানুষ অনেক কিছু করে, ভবিষ্যতে ভাল না মন্দ না ভেবেই
করে । আমাকে মুরব্বিরা মানা করত বাঁশি বাজাস না, আমি ছিলাম বাশির প্রচন্ড ভক্ত ।সময় পেলেই বাঁশি বাজাতাম ।ভর রৌদ্রতপ্ত দুপুরে
গরু চরাতে গিয়ে ও বাঁশি বাজাতাম । আর রাতে একা বসে ফাঁকা
মাঠে বাঁশি বাজানোর অভ্যাস তো ছিলই ।আহ কি সুন্দর
পূর্ণিমার ভরা চাঁদ এর জ্যোৎস্না রাত।(দিগন্ত বিস্তৃত ফাঁকা মাঠের ঝিরি বাতাস আর
সাথে সুর তরঙ্গের বাশরীর সুর। ব্যাপারটা আমার কল্পনায় মাত্রাতিরিক্ত রোমান্টিক হয়ে
ধরা দিলো) আমার বাবা আবার আমার এই অভ্যাসটার ঘোর বিরোধী ছিলেন । মোটেই দেখতে পারতেননা । কানের উপর চটকানা
বসিয়ে দিতেন । তো বাবার থেকে সাবধান থাকতাম । একদিন হল কি বিকালের দিকে বাঁশি বাজাতে বাজাতে এমন মগ্ন হয়ে গেছি যে মাগরিবের
আযান এ সম্বিৎ ফিরে পেলাম । গরু নিয়ে ফিরতে হবে । কিন্তু দুটো গরু দেখলাম না । বাকি গরু গুলো পেলাম । এখন হলো কি আমি ভেবেছিলাম ওই দুটো গরু বাড়িতে ফিরে গেছে । বাড়িতে যেইনা ঢুকেছি তখনি দেখি বাবা বেশ ক্রুদ্ধ চোখে তাকিয়ে হারিকেনের কাঁচ মুচছেন আর বলছেন,
বলি নবাবের ব্যাটা আর দুটো গরু কি আমি নিয়ে আসব । সারাদিন শুধু ওই বাঁশির ঘোড়ার ডিম নিয়ে পড়ে থাক । গরু নিয়ে না এলে এ বাড়ির ভাত তোর জন্য চিরকালের জন্য বন্ধ ।বাড়ি থেকে বের হq, এই বলে বাবা রাগে আমার দিকে কাগ (আঞ্চলিক ভাসাতে লম্ফতে(সলতে দিয়ে
কুপি বাতি)কেরসিন ঢালার জন্য এক ধরনের চোঙ ব্যবহার করা হত ) আমার দিকে ছুড়ে দিলেন। আমি আব্বার মেজাজ খারাপ দেখে বাড়ির বাইরে চলে গেলাম ।ভাবলাম এ আর বিশেষ কি, তাড়াতাড়ি গরু খুজে নিয়ে বাড়ি ফিরব, যাবে আর কোথায় । গ্রামের কারো বাড়ি বা ঘরের পিছনে হয়ত কলা গাছ খাচ্ছে । এই ভেবে বেরিয়ে পড়লাম । কোথায় কি, সারা গ্রাম
খুজে কোথাও গরু দুটোর দেখা পেলাম না । বেমালুম গায়েব
হয়ে গেছে । আমার গ্রাম আড়পাড়া এর শেষ সীমানা বালিয়াডাঙ্গা
।তারপর মাঠ টা পেরোলে পরে পাঁচবাড়িয়া গ্রাম ।
(87)
পাঁচবাড়ীয়া গ্রাম
এ চলে গেলো নাকি !। মনে সন্দেহটা
ঢুকতেই হাটা শুরু করলাম পাঁচবাড়িয়ার উদ্দ্যেশে ।সেখানে গরু কি থাকবে, এই রাত কি গরু ওখানে যাবে । বেশ ০২ কিলোমিটার এর মত ফাঁকা মাঠ । শীতের রাত, আকাশে
ভরা জ্যোৎস্না ।মাঠের ভিতর দিয়ে হেটে যাচ্ছি ।কোথাও গরু দেখলাম না ।মাঠ পেরিয়ে পাঁচবাড়ীয়া গ্রামের সীমানাতে ঢুকে
পড়েছি । মনুষ্য বসতি কয়েকঘর মাত্র এ পাশে, আমি যে পাশে মাঠের ভিতর দিয়ে উঠেছি, বেশ
ভাল মত ঝোপঝাড় জঙ্গল আছে, এমন সময় আমার খেয়াল হলো খাওয়া হয়নি, পানির পিপাসা তা অবশ্য
শীতে লাগেনি ।খিদে ও তেমন লাগেনি, তবে খেতে পারলে ভাল হত । এমন সাত পাচ ভাবতে ভাবতে দেখি আমি এমন একটা যায়গাতে দাড়িয়ে যে যায়গাটা নদীর
পাড়ে ।ঘটনা অন্তত ৪০ বছর আগের ।বেশ কয়েকশ গজ দূরে
বৈদ্যনাথের মন্দির আছে ।এই মন্দিরে বাবা বৈদ্যনাথের একটা বিগ্রহ পাথর
সংরক্ষিত আছে, যেটা নাকি পাশের এই বুড়িভৈরব নদীতে ভেসে এসেছিল। উপরে জ্যোৎস্না,
কুয়াশার ভাব এ আমার আবার মাথাতে পাগলামি ঢুকে গেল । সেই বাঁশির পাগলামি । বাঁশিটা যে লুঙ্গির সাথে কোমরে আছে এতক্ষন
খেয়াল করিনি ।এতক্ষনে খেয়াল হলো কনকনে শীতে চাদরটা গায়ে ভালভাবে পেচিয়ে নিয়ে
নদীর পাশে পরিস্কার যায়গা দেখে শুরু করলাম বাঁশির সুর তোলা ।বাঁশির সুমধুর সুর এ আস্তে আস্তে আমি নিজেই মোহিত হয়ে যাচ্ছি । আজ কেন জানি বাঁশির সুরটা একটু বেশি সুরেলা মনে হলো । সুরটা আনকোরা একেবারে নতুন । আমি বাঁশি বাজাচ্ছি তো
বাজাচ্ছি । বাঁশির সুর এ আমি একেবারে নিজেকে বিলীন করে
দিয়েছি । হঠাৎ আমার মনে হলো বাঁশি বাজাতে বাজাতে আমার বাশির সুর আরো মধুর হয়ে যাচ্ছে ।বাঁশির সুর এত সুন্দর হতে পারে তা এতদিন বাশি বাজিয়েছি কখনো খেয়াল করিনি ।কেমন যেন বাশির সুরের সাথে ঝুম ঝুম করে হাল্কা নুপুরের একটা আওয়াজ হচ্ছে ।আওয়াজ টা এমন যে কাঁচ এর সাথে কাঁচ এর হাল্কা ঘর্ষনে টুংটাং টুংটাং যে আওয়াজ
হয় তেমন । আর এদিকে আমার বাঁশির সুর এখন এমন একটা স্তরে পৌছে গেছে বলে মনে হচ্ছে যে নদীর
পানিতে প্রতিধ্বনি তৈরি করে অপার্থিব সুরের এক মুর্ছনা গড়ে তুলেছে । আমার এতক্ষন কিছু হয়নি ।
(88)
সব নিজের মনপ্রান দিয়ে বাজানোর ফল ভেবে
উপভোগ করছিলাম সব । কিন্তু হঠাৎ একটা জিনিস আমাকে ভয় ঢুকিয়ে দিল । আচ্ছা এই নুপুরের শব্দ আসছে কোত্থেকে । তার থেকে বড়
কথা হলো কারা যেন আমার চারপাশ দিয়ে ঘুরছে আর হাসছে, তবে হাসিগুলো বেশ নিম্ন স্বরে ।ওই পৌষের শীতেও সামান্য ঘর্মাক্ত হয়ে উঠলাম । কিন্তু বিচলিত
হলাম না মোটেও, একটা কথা শুনেছিলাম যে কেন একা একা ভরদুপুরে আর রাতে মাঠে বাসি
বাজাতে নেই, সেই কথার কারনে বাঁশি বাজানো থামালাম না । কারন হলো এখন যদি বাশি বাজানো থামাই আর আমার পাশে যাদের শব্দ শুনছি তারা যদি
অশরিরী কিছু হয় তবে বাঁশি থামালেই তারা আরো বিরক্ত হয়ে বংশীবাদক কে আক্রমন করতে
পারে । একমাত্র এই বাঁশি তখনি থামবে যখন ফজরের আযান দেবে আর না হয় কোন মানুষের দল
যদি আমার দিকে আসে । আমি যেখানে বসা সেখান থেকে জোরে চিৎকার দিয়ে
তেমন লাভ হবেনা ।কারনটা হলো শীতের রাতে সবাই লেপ মুড়ি দিয়ে যে
যার মত ঘুমাচ্ছে । আর এমন সময় বাঁশি থামালে তেনারা আমার ঘাড় মটকে
দিতে পারে । কি বলব হয়ত ভাগ্যে বেঁচে ফেরা ছিল, এমন সময় কয়েকজন
লোকের কন্ঠস্বর শুনলাম, এই কেরে বাঁশি বাজায় ? সাথে সাথে সব সুনশান, আমার আশেপাশে
নুপুরের ঝুম ঝুম আর নদী থেকে বাঁশির শব্দ প্রতিধ্বনিত হয়ে জলতরঙ্গ হয়ে ফিরে আসছেনা
। আমি সাহস করে তাকাতেই দেখি কয়েকজন লোক আমার দিকে তাকিয়ে আছে, আমার সামনে
দাড়ানো, সাজ পোশাকে তেমন খারাপ কিছু মনে হলনা, তবে মনে হয় অন্য কোন গ্রাম থেকে কোন
অনুষ্ঠানের দাওয়াত খেয়ে ফিরছিল ।হয়তো খাওয়ার পর চা বিড়ি
আর তাসের আড্ডাতে দেরি হয়ে গেছে ।আমার মত মাঠের ভিতর দিয়ে সোজা চলে এসেছে ।আমাকে পরিচয় জিজ্ঞাসা করতে সব খুলে বললাম । সে রাতের মত
ওনাদের বাড়িতে আমাকে থাকতে হলো । ওনারা এও বললেন ও রকম
বাগান যায়গাতে কেউ বসে ! । অত রাতে খাবারের ব্যবস্থাও হলো, আমার বাঁশির
সুর শুনে ওনাদের এই কৌতুহল হয় যে গ্রামে তো কেউ বাঁশি বাজায়না, তাহলে কে ওখানে এত
সুরেলা বাঁশি বাজাচ্ছে, গরমকাল হলেও এক কথা থাকে, এত পাগল কে যে শীতের এই রাতে বাঁশি
বাজাবে ।এই কারনে বোধ হয় আমি বেঁচে যাই সেরাতে ।
(89)
রাতে ওনাদের বাড়িতে খেয়ে সকালে, ওনাদের এক
জনের সাথে গরু খুজতে গিয়ে বেশিদুর দৌড়াতে হলনা । কয়েক বাড়ি পরেই পাওয়া গেল নচ্ছার গরু দুইটাকে ।
৪) বিল জলেশ্বর
আমার নানাবাড়ি বাঘারপাড়া উপজেলাতে , বিল জলেশ্বর অত্র অঞ্চলের বিখ্যাত বিল । সময়টা ১৯৯২ হবে সম্ভবত , আনুমানিক তিন বছর বয়সে একটি ছেলে হারিয়ে যায় । নানা বাড়িতে বেড়াতে এসে ওই বয়সে বাড়ি
থেকে তিন কিলোমিটার দুরের বিলে বছর তিনেকের বাচ্চার পক্ষে একা যাওয়া সম্ভব নয় ।ঘটনা দুপুরের একটু পরপরই । বেশ কয়েকঘন্টা খুজে
কোথাও ছেলেটিকে পাওয়া গেলোনা । এমন সময় সন্ধ্যা হয়ে
গেছে । গ্রাম এ বিল থেকে ধান কেটে ফেরার সময় একজন ছেলেটিকে পান যিনি সম্পর্কে ছেলেটির গ্রাম সম্পর্কে আত্বীয়
হয় ।যিনি সন্ধ্যার সময় গ্রামে পৌছাতে না পৌছাতেই
গ্রামে খবর রটে গেল আসাদ একটা বাচ্চা ছেলেকে পেয়েছে বিল থেকে ধান কেটে ফিরে আসার
সময় । এমন কথা শুনে সবাই হৈ হৈ করে ওনার বাড়িতে চলে গেল । বাচ্চা টা কে দেখে সবাই হতচকিত হয়ে গেল । এ তো সেই
বাচ্চাটা । কিন্তু এতটুকু বাচ্চা তিন কিলোমিটার দুরের বিল
এ গেল কি করে । কেউ কি নিয়ে গেছিল , নাকি নিজে চলে গিয়েছিল ,
ওই বয়সে নিজে যাবার ব্যাপারটা অবিশ্বাস্য , নিজে যাওয়া তো সম্ভব
নয় ।ফলে গ্রামে তৎকালীন প্রচলনে যা হলো জ্বীনে নিয়ে যাবার গল্প হয়ে গেলো ব্যাপারটা
। না সত্যিই অতিপ্রাকৃত কিছু , যেহেতু বিজ্ঞান এই সম্ভাবনা
নাকচ করে দেয় সেহেতু , ব্যাখ্যা আসতে পারে
কেউ কি শত্রুতা বশত ক্ষতি করতে চেয়েছিল বা তৎকালীন ছেলেধরা ব্যাপার নয় তো ? এই গল্পটা কিন্তু আমাকে নিয়ে আমার নানা বাড়ির গ্রামে এক সময় প্রচলিত ছিল ,
বয়স্ক মানুষেরা আমাকে দেখলে গল্পে গল্পে এই ঘটনাটা বলতো , গল্পটা বিশ্বাস হলো আপনাদের ? বিশ্বাস না করাটা
স্বাভাবিক ।ভুতের গল্পের বই নয় এটি বলে গল্প আর বাড়ালাম না , আসলে বিশ্বাস করা না করা যার
যার ব্যাপার । ভুত কাউকে জোর করে দেখা যায়না । ভুত বা তার ভয় বা অতিপ্রাকৃত কিছুর অনুভুতি বা দেখার জন্য একটা পরিবেশ লাগে ।
(90)
আমাদের বর্তমান ঘনবসতি পুর্ণ, আলো ঝলমল যায়গাতে এটা দেখা বা অনুভব করা যাবেনা
একদমই । আসলে মানুষের সুন্দর চেহারা বা পোশাকের আড়ালে যে ভয়ংকর ক্ষতিকর বা কুৎসিৎ
মানসিকতা থাকে সেটাকে ভূতের থেকে কম কিছু বলা যাবেনা । পৃথিবীর সব থেকে হিংস্র আর
ভয়ংকর প্রাণী বাঘ –সিংহ-সাপ এগুলো । কিন্তু এরা আর
কটা মানুষ বা প্রাণী হত্যা করে, তার থেকে মানুষ কয়েকশো গুন বেশি হিংস্র। আর ভুত দেখার পরিবেশে থাকতে হয় একা । আসলে কেউ যদি ভুত দেখতে চান, বা ভুত কি, আছে কি নেই জানতে চান তাহলে বেরিয়ে
পরুন সম্পুর্ণ একা এবং শুধুমাত্র এমন এক পরিবেশে যেখানে মাইল এর পর মাইল ধুধু মাঠ
আছে, কোন মানব বসতি নেই, নেই কোন বিদ্যুৎ বাতি, একা একা হাটুন সেই মাঠ দিয়ে, সেই
রাস্তা দিয়ে, যদি সত্যিই ভুত অনভুব বা দেখার ইচ্ছা থাকে তাহলে এরকম পরিবেশে একা
বের হলে আশা করি আপনার উত্তর আপনি নিশ্চিত পেয়ে যাবেন । তবে এরকম চেষ্টা করে কেউ কোনভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হলে আমি দায়ি নই । সম্পুর্ণ নিজ দায়িত্বে নিজ ঝুকিতে কাজ করুন । পৃথিবিতে যা দেখা যায়না তা নেই বলে দেওয়াটা বোকামি । আপনার গায়ে যদি আঘাত বা কোন কারনে ব্যাথা হয় তাহলে আপনি কি ব্যাথা দেখাতে
পারবেন, মাথা ব্যাথা হলে সেটা কি দেখাতে পারবেন, পারবেননা, শুধু বলতে পারবেন ব্যাথা
হয়েছে কিনা । কিন্তু আমি যদি বলি ব্যাথা বলে কিছু নেই,
সেটাও সঠিক হবে এই যুক্তিতে যে আপনি যে মিথ্যা বলছেননা, ব্যাথা নিয়ে তার প্রমান কি
? আপনি তো কোন সুবিধা আদায়ের জন্য ও মিথ্যা ব্যাথার নাটক করতেই পারেন ।
৫) আমি চাকুরির
বদলিজনিত কারনে উন্নত বাসা না পাওয়াতে কিছুদিন
পুরাতন একটা বাসাতে থাকতাম , বাসাটা অবশ্য
বেশ পুরাতন , তা অন্তত পক্ষে ৬০ বছরের কম হবেনা । তো বাসার আশে পাশে অনেক গাছ আছে ।রাতে মনে হতো
আমি একটা জঙ্গলের ভিতর কোন পোড়োবাড়িতে আছি। একদিন আমি বারান্দাতে দাড়িয়ে আছি। এমন সময় একটা গাছ এর পাতা নড়তে দেখলাম ।মনে করলাম বাতাস
বইছে হয়তো । কিন্তু অদ্ভুত লাগলো এটা যে আশেপাশের চালতা,
লম্বু, সজনা কোন গাছের পাতা নড়ছেনা ।কিন্তু ওই আতা
গাছটির পাতা নড়ছে ।
(91)
নড়ছে মানে বেশ আলোড়িত হচ্ছে ।আলোড়ন টা এমন যে বাতাস এ পাতা নড়া নয় ।গাছ এর এ ডাল
থেকে ওই ডালে কেউ গেলে যেমন হয় তেমন নড়ছে ।
৬)একদিন আমি বাসাতে একা । আমার স্ত্রী গেছে বাবার বাড়িতে । এমন দিনে প্রচন্ড কর্ম ব্যস্ত দিন কাটিয়ে আমি
রাত ০১ টার দিকে ঘুমাতে গেলাম ঘরের
বৈদ্যুতিক আলো বন্ধ করে দিয়েছি । বিছানায় বালিশে যেই না একটু চিৎ কাত
হয়েছি অমনি মনে হলো কেউ যেন আমার গলা টিপে ধরল । মনে করলাম হয়ত সারাদিন অত্যন্ত কর্মব্যস্ততা
গেছে বলে এ ভ্রম, ব্যাপারটা নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে আবার ঘুমালাম, ০৫ মিনিট হয়নি, এমন
সময় মনে হলে কালো করে কেউ আমার পাশে শুয়ে আছে, আমার গলার উপর হাত দিয়ে । এবার আমি সম্পুর্ণ সজাগ হয়ে গেলাম, কিন্তু
অনুভব করলাম আমার সারা শরীর অবশ হয়ে যাচ্ছে,গলা বন্ধ হয়ে গেছে , চিৎকার করতে পারছিনা,
কিছু সময় পরে দেখলাম পাশে আর কেউ নেই, ধড়মড়িয়ে বিছানা থেকে উঠে সাহস করে ঘরের লাইট অন করে দিলাম, দেখলাম ঘরে অবশ্য কেউ নেই । তাড়াতাড়ি মোবাইল দিয়ে ফোন করে রাতে ডিউটি করছে
এমন দুজন লোক ডেকে সব ঘটনা খুলে বলতে ওনারা আমাকে বললেন লাইট অন করে ঘুমান, কোন ভয়
নেই, পরে শুনলাম কেউ একজন
এই রুম এ অনেক আগে মারা গেছে এবং পাশের রুমে আমাদের একজন অতি সিনিয়র কলিগ চাকুরিরত
অবস্থাতেই বুড়ো বয়সে মারা গেছিল। ব্যাপারটা মানসিক বিভ্রমের কারণে হওয়া বোবা ভুতের
ব্যাপার হবে।চিকিৎসা বিজ্ঞানে এটা স্বাভাবিক মানসিক সমস্যা বা ডিজঅর্ডার বলা হয় ।
৭) ঘটনাটা ২০০১ সালের নভেম্বর মাস । একদিন খবর পেলাম আমার বোন ভয় পেয়েছে নানি বাড়িতে
প্রচন্ড জ্বর ১০০ ডিগ্রিতো হবেই । কি করে জ্বর এল
, কেন ভয় পেলি বলতেই ও যা বলল সেটা শুনে আমি বেশ ঘাবড়ে গেলাম।এরকম ব্যাপার হলে তো আমি মুর্ছা যেতাম । ও নানু বাড়িতে
গিয়ে পানির কলের দিকে এগিয়েছিল মাত্র । হঠাৎ নজর এ এলো
যে ওর সামনে দিয়ে একটা জ্বলন্ত অগ্নিপিন্ড উড়ে গেল ব্যাপারটা তা নয়, আরো সিরিয়াস হলো যে আগুনটা
সামনের কদবেল গাছের ডালে বেশ অনেক্ষন জ্বলন্ত থেকে নিভে গেল । গাছে কোথাও পোড়া দাগ পাওয়া যায়নি পরে ।
(92)
০৮) একটা প্রচলিত গল্প আছে যে একজন
লোক বন্ধুদের সাথে বাজি ধরে গিয়েছিল
শ্মশান এ একটা ডাল পুতে রেখে আসবে, সেটা করতে
গিয়ে নিজের লুঙ্গিতে ডাল পুতেছিল, ভুত
নিয়ে এ রকম একটা নির্মম হাসির গল্প আছে । এক লোক গল্প করছিল তার বেশ কিছ বন্ধুদের সাথে ।গল্পে গল্পে কথা উঠলো যে কে কত সাহসী তার প্রমান
দিতে হবে । তার ভিতর এক জন ছিল যে সে খুব সাহসী লোক ।সে বলল আমি
সাহসী কি প্রমান দিতে হবে বলো । তখন বন্ধুরা বলল তুমি
রাত ০২ টার সময়ে শ্মশানে গিয়ে একটা ডাল পুতে আসবে আমরা তুমি আসার পর সবাই মিলে সেই
ডালটা দেখে আসব যে তুমি পুতে এসেছ কিনা ।তাহলে তোমাকে
সবাই মিলে তোমার ইচ্ছা মত ভরপুর খাওয়াবে । তো বন্ধুটি তো বুঝে গেল ভয়ে তার হাত পা সেধিয়ে যাচ্ছে ।কিন্তু উপায় নেই, বাজি যেহেতু ধরেই ফেলেছে ।সাহস তো দূরে থাক সে কখনো ভাবেনি যে রাত ০২ টার সময় শ্মশান এর নিঝুম পরিবেশের ভয়াবহতা , বা লোকালয়
থেকে ০২ কিলোমিটার দুরের স্রোতস্বিনী নদীর ধারের শ্মশান এত ভয়ংকর হতে পারে। দূরে চাঁদের আলোয় নদীর দিকে তাকালেও
গায়ের ভিতর ঝাড়া দিয়ে উঠছে ।ব্যাপারটা এত
ভয়ংকর যে কোন দিন বন্ধুদের কাছে বসে গল্প করে ভেবে দেখেনি । আজ একটা মড়া পুড়িয়েছে, সেই একটা মড়া পোড়া গন্ধ আসছে ।যাক এত কিছু
ভেবে লাভ নেই।ডাল টা পুতে দিলেই তো ল্যাঠা চুকে বুকে যায় । এই দিলাম পুতে এবার ফিরতে গিয়ে দেখে ওরে বাবা কে যেন পিছন থেকে টেনে ধরে
রেখেছে।এবার সে ভাবলো এবার কাকে যে দেখতে হবে
ভয়ে গা ঘেমে সেখানেই বন্ধুটি মরে পরে রইলো ।সারা রাত বন্ধুটির জন্য অপেক্ষা করে সকালে তার বন্ধুরা সবাই চলে গেল বন্ধুর
বাড়ি, সেখানে না খুজে পেয়ে শ্মশানে গিয়ে দেখল বন্ধুটি মরে পড়ে আছে ।কিন্তু একটা অদ্ভুত জিনিস আবিষ্কার করলো দেখলো বন্ধুটির লুঙ্গির একটা
কোন সেই ডাল এ আটকানো আছে ।মানে ও ডাল পুততে গিয়ে নিজের লুঙ্গিতে পুতে ফেলেছিল, ডাল পুতে ফেরবার পথে ওর
মনে হয়েছিল ওর লুঙ্গি কেউ টেনে ধরে রেখেছে।এই ভয়েই সে মারা
গিয়েছিল ।আসলে মানুষকে বনের বাঘ এ খায়না, খায়
মনের বাঘ এ , ভূত থাকে আপনার অন্তরে ।
(93)
০৯) গ্রামে একটা গল্প প্রচলিত ছিল যে রাতে মাছ ধরতে গিয়েছে কেউ ,
সেখানে ভুত এ সব কাচা মাছ খেয়ে ফেলছিল,
ভুতটা ছিল তার বন্ধুরুপী ভুত। ঘটনাটা ছিল এমন যে সে
রাতে দুই বন্ধুতে মিলে মাছ ধরতে গিয়েছিল এক বন্ধু মাছ ধরছিল আর এক বন্ধু নৌকার এক
কোনে বসে ছিল হঠাৎ খেয়াল করল যে হাড়িতে যে কটা মাছ রেখেছে সেই মাছ আর নেই, গেল কোথায় , হঠাৎ দেখলো যে সেই বন্ধুটির মুখে রক্ত লেগে আছে আর সে হাঁসছে । তখন সে ভাবলো
যে এ আমার বন্ধু নয় । এ হলো অন্য কিছু, মানুষ কি কাঁচা মাছ খেতে পারে।বলি কেন পারেনা,নির্দিষ্ট কয়েকটি কাজ বাদে মানুষ পারেনা এহেন কোন কাজ আছে কি, যারা সাইকি বা মানসিক রোগের এর ডাক্তার তাদের কাছে
এরকম হাজারটা অদ্ভুত চরিত্রের রোগী আসে ।কত বিকৃত মস্তিষ্কের মানুষ আছে না দেখলে বোঝা
যাবেনা । মানুষের কলিজা খেকো মানুষ আছে , মানুষের মাংস খায় এমন মানুষ আছে , বালি পাথর খায় এমন মানুষ আছে, টিকটিকির লেজ খাই এমন মানুষ আছে , আর মাছ তো মামূলী ব্যাপার
মাত্র ।জাপানীরা তো কাচা মাছ খায়, সাপের জুস খায় কোরিয়ানরা ।কুকুর খায় ভিয়েতনামীরা, কোরিয়ানরা
।তাই বলে আপনি আমি তাদের বলবো ভূত সেটা তো
হয়না । দেখা গেলো ঐ বন্ধুটির কাঁচা মাছের নেশা ছিলো , রাতে নৌকায় বসে খেতে খেতে কত খাচ্ছে সেই দিকে
খেয়াল ছিলোনা, সব মাছের পুরো খাবে এমন কথা নেই, আধা খেয়ে খেয়ে ফেলে দিয়েছে ।বাচ্চাদের কে
অনেক সময় দেখেছেন চক অথবা বালি খেতে, এটা সাধারনত চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষাতে pica (পিকা) বা আয়রন অভাব
বা রক্তস্বল্পতা নামে পরিচিত । অনেকে বলে থাকেন কিছুটা যকৃতদুষ্টি হতেও পারে। এখন
আপনি বা আমি নিজের কাছের মানুষদেরই অনেক বিকৃত অভ্যাস এর খবর রাখিনা। পত্রিকাতে এমন পাওয়া গেছে যে একটা লোক খুন বা ধর্ষন করে এসে নিজের পরিবারের
সাথে এসে রাতের খাবার খেয়েছে , আনন্দের সাথে টিভি দেখেছে , কিন্তু তার পরিবার
সামান্যতম আচও করতে পারেনি ব্যাপারটা ।সেখানে কাঁচা
মাছ খাওয়া তো কোন ব্যাপার না ।এখন ওই বন্ধুটি কাঁচা মাছ খাওয়ারত অবস্থাতে ওই রুপে ধরা পড়ে চরম লজ্জিত হয়ে বন্ধুটির সাথে ধস্তাধস্তি করে
বন্ধুটিকে আঘাত করে নৌকা থেকে পালিয়ে এলো ।
(94)
আর বন্ধুটি সকালে জ্ঞান ফিরে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে দেখল সে স্বাভাবিক কাজ করে বেড়াচ্ছে
। বন্ধুটির গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন নেই। বন্ধুটি নাটক
করে বেড়াচ্ছে এই যে সে রাতে সে কোথাও যায়নি । এবং ভুক্তভোগী
বন্ধুকে ব্যাপারটা বুঝাতে সক্ষম ও হলো সে । এভাবে
দোষী মানুষের কত দোষ যে ভুত আর নিরীহ
নির্দোষী মানুষের উপর পড়েছে তার ইয়ত্তা নেই।আর সুস্থ
বন্ধুটি মাছ খাওয়া বন্ধুটির বিকৃত অভ্যাস বা অসুস্থতা স্বম্বন্ধে কোনদিনই জানতোনা।এই
না জানাটাই তার কাছে ধরা দিয়েছে ভূতরূপে।আচ্ছা যারা সিরিয়াল কিলার তারা তো তাদের
পরিবারের কাছে খুন করে এসেও স্বাভাবিক চলেছে, একসাথে রাতের খাবার খেয়েছে , তারপর
যখন একদিন ধরা পড়ে তখন তাদের পরিবারই বিষ্ময়ে ভাবে এই কাজ আমাদের অমুক করতে পারে
কখনো ? ওর রূপ ধরে ভুতে করেছে এসব । যদিও মানুষ সৃষ্টির সেরা তবুও মানুষের
থেকে হিংস্র আর কোন প্রাণী নেই , মানুষের থেকে ভূত বেশি ভয়ংকর নয় ।
এবার আসি কিছু কুসংস্কারের কথাতে –
**** গ্রামে ও শহরে পূর্বে বহুল প্রচলিত একটা
ব্যাপার ছিল যে রাতে মাছ কেনা বা বাড়িতে নিয়ে আসা যাবেনা। এর পিছনে গল্প ছিল যে
কেউ রাস্তা দিয়ে মাছ নিয়ে এলে তার পিছন পিছন মাছ লোভী ভুতটি ও পিছু নেয়। সাদা
কাপড়ে সামনে এসে বা পুরনো গাছ তলাতে লোকটি আসা মাত্রই নাকি সুরে বলে উঠতো এঁই
আঁমাকে মাঁছটা দিঁবি ? তো আর কি মাছটা ফেলে হয়তো দিলেন ভো দৌড়, অনেক সময় মাছ না
দেওয়াতে ঘাড় মটকে দিল। এটার কি ব্যাখ্যা হতে পারে ? খুবই সহজ এর উত্তর, এখানে ভুত
নয়, আছে মানুষ। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে এগুলো দেখা যেত যার হাতে বাজারের যে কোন সবথেকে
বড় মাছ অথবা ইলিশ মাছ আছে এমন লোকেদের সাথে। তো আপনারা জানেন এই মাছ গুলো সবযুগেই
মূল্যবান ছিল এবং সবার এগুলো কিনে খাবার সামর্থ্য সবকালেই নেই , শুনতে খারাপ শোনা
গেলেও এটা মানুষেরই কাজ। তৎকালীন বিদ্যুৎ বিহীন যুগের গ্রাম আর শহর গুলো এই চিত্র
দৃশ্যায়নের উপযুক্ত মঞ্চ বটে ।
**** দুই তালগাছ এ পা দিয়ে অতি লম্বা ভুত দাড়িয়ে
আছে। এটা কোন ব্যাপারই না । রণপা ব্যবহার করে এরকম নাটক মঞ্চস্থ করা কোন ব্যাপারই
না ।
(95)
**** রাতে বা সন্ধ্যার পর ঘর ঝাড়ু দেওয়া বা নখ কাটা
ঘোর অমঙ্গলজনক, কারণটা কি ? কারন হল তখনকার দিনে বিদ্যুৎ ছিলোনা, রাতের টিমটিমে
বাতিগুলোতে ঘরের মেঝে গুলো আবছা অন্ধকার হয়ে থাকতো বলা চলে। তো যদি ঘর ঝাড়ু দেবার সময় মহিলাদের কোন
স্বর্ণালংকার ঝাড়ুর সাথে চলে যায় তাহলে তা টেরও পাওয়া যাবেনা। আর নখ কাটতে গিয়ে
অন্ধকারে হাত বা পায়ের আঙুলে উল্টো পাল্টা ভাবে কেটে যেতে পারে সেজন্য এ সব প্রচলন
। আরো কত কুসংস্কার আছে
, যেমন কাকের ডাক , পেঁচার ডাক অশুভ ।জমজ কলা খেলে জমজ সন্তান হয় , এ রকম ব্যাপার
। কুসংস্কার কিন্তু সমাজের অগ্রগতির জন্য ভয়াবহ বাধা হয়ে
যেতে পারে ।এই কুসংস্কারই কিন্তু সতীদাহ প্রথা , জাত পাত বর্ণভেদ , নিরক্ষরতা
,সাস্থ্য অসচেতনতার জন্ম দিয়েছিল । হাল আমলে আফ্রিকার দেশগুলোতে আলবিনো(Albinism)
মানুষদের শরীর তাদের কাছে আপনা মাংসে হরিণা বৈরির মত হয়ে গেছে শুধু কুসংস্কার ও
কালোজাদুর কারনে ।এছাড়া মানসিক রোগ আর শূচিবাই তো আছে ।
তাহলে এত ঘটনা যখন আছে , ব্যাখ্যাও যখন
আছে তাহলে ভুত কেন দেখা যায়না বা কেন মানুষ এখনো ভুত দেখেনি, বা ভূত না মানুষের
কীর্তি এটা উদঘাটন কেন হয়নি ? ।এর কারন হতে পারে ভুত
না মানুষ এটা যাচাই করতে গিয়ে যদি সত্যি ভূতের সাথে দেখা হয়ে যায় ? অথবা ভুত বা
অতিপ্রাকৃত কিছু দেখার বা সনাক্তকরণের মত কোন যন্ত্র মানুষের এখনো আবিষ্কার হয়নি ।আচ্ছা একটা সময় মানুষ মানুষের ছবি তুলে দেখাতে পারতোনা কোথাও গেলে আনুমানিক আঁকা
বা তার সম্বন্ধে বর্ণনা দেওয়া যেত মাত্র কিন্তু তাই বলে কি সেই মানুষ অথবা কোন
বর্ণিত জিনিস ছিলনা ।ঠিক তা নয়, সেই মানুষ তা তখন ছিল, এখন যেমন ক্যামেরা আবিষ্কার হয়েছে বলে
আমরা একজন মানুষ সহজেই তার স্মৃতিকে জীবন্ত
ধারন করতে পারছে । এই ব্যাপারটাই তো বড় একটা ভৌতিক ব্যাপার, বড়
একটা বিজ্ঞানময় ব্যাপার, বড় একটা কালোজাদু
।যে আশ্চর্য ব্যাপারটা সবার জানা এবং সবাই ব্যবহার করছে সেটাকে বলি বিজ্ঞান,
যেটা সবাই জানেনা, সবাই ধরতে পারেনা সেটাই হলো ভৌতিক বা সেই বিদ্যা হলো কালোজাদু ।
(96)
হ্যা এটা রহস্য ও বিজ্ঞানের সর্বশেষ
স্বীকারোক্তি । বেশিরভাগ ভুতের গল্পগুলো এ রকম হয় গভীর রাতে একা পথে চলছেন, মনে
হচ্ছে কেউ যেন পিছনে আসছে , কারো যেন পায়ের শব্দ শোনা যাচ্ছে, কিন্তু পেছনে তাকালে
কেউ নেই, হঠাৎ রাতে টিনের চালে কেউ যেন হেটে বেড়াচ্ছে, টিনের চালে ইট পড়ার শব্দ, সাদা শাড়ি পরে কেউ যেন দাড়িয়ে আছে,হঠাৎ করে রাতে দেখলেন কোন আগুন
উড়ে চলেছে , পোড়োবড়িতে কাদের যেন হেটে চলে বেড়াতে দেখা যায়।
বিলে
বা নদীতে গভীর রাতে মাছ ধরছেন দেখা গেল আপনার বন্ধু রূপধারী যে আপনার সাথে ছিলো সে
হয়তো আপনার এতক্ষণ ধরে রাখা মাছগুলো সব
কাচাই খেয়ে ফেলেছে যেটা একটু আগে বললাম,কারো মৃত্যূর পর
তাকে আবার কোথাও দেখা গেল, একা বাড়িতে ভুতের ভয় পেয়েছে কেউ । এ রকম কত কি শুনি আমরা । এ গুলো সব কিছুর একটা ব্যাখ্যা আছে,
সত্যতা কতটুকু আছে জানিনা ।আগেই বলেছি মানুষের শ্রাব্যতার সীমা ২০ হার্জ থেকে শুরু
। তার নিচের শব্দ মানুষ শুনতে পায়না ।একে বলে ইনফ্রাসাউন্ড । এই সাউন্ডটা আমরা
শুনতে পাইনা । কিন্তু অনেকের মস্তিষ্ক অবচেতন মনে এই সাউন্ড ধরে ফেলে, এই সাউন্ড
ধরে ফেলার কারণে আপনার হঠাৎ করে ভাল লাগা বা অসস্তির বোধ হতে পারে । ধরুন আমরা যখন
বাসে চড়ি তখন দেখা যায়, অনেকের মাথা ঘোরায় ও বমিভাব হয় । এটাকে বলা হয় মোশন সিকনেস
।এর কারণ দুইটা একটা হলো অপটিক্যাল ইলিউশন, যখন মস্তিষ্ক দেখে বাইরে সবকিছু চলমান
এবং গাড়ির ভিতরে দেখে সবকিছু স্থির । আমাদের অনেকের মস্তিষ্কের নার্ভ এই ইলিউশানটা
নিতে পারেনা । মূলত স্নায়ুর এক প্রকার অনভ্যস্ততা থেকে এটা হয় ।আরেকটা কারণ হলো
ইনফ্রাসাউন্ড । ২০ হার্জের নিচের শব্দটা হলো ইনফ্রাসাউন্ড ।এই মাত্রার শব্দ শোনা
যায়না । কিন্তু অবচেতন মন মস্তিষ্ক বা ধ্যানমগ্ন মন এটা ধরতে পারে ।এই শব্দ আমাদের
অন্ত্র ও স্নায়ুকে প্রভাবিত করে আর সাথে গাড়ির ধোয়া ও গন্ধ যোগ হয় , ফলশ্রুতিতে
বমি বমি ভাব ও মাথা ঘোরা সমস্যা হয় ।আবার যারা নিয়মিত যানবাহনে চড়ে অভ্যস্ত তাদের
এই ধরনের সমস্যা হয়না বললেই চলে ।তো যেটা বলছিলাম বিজ্ঞানীরা যেখানে মানুষ ভূত
দেখেছেন বা হন্টেড প্লেস এর কথা শোনা
(97)
যায়, সেখানে ক্ষেত্রবিশেষে শক্তিশালী বা মৃদূ
তড়িৎ চৌম্বকীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব পেয়েছেন ।আসলে ভৌতিক বা আধিভৌতিক অবৈজ্ঞানিক যাই
ঘটুক না কেন সব কিছুর একটা ব্যাখ্যা দাড় করানো যায় ।একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দিলেই
জিনিসটা মিমাংসা হয়ে যায় তা নয় ।নেই বললে নেই হয়ে যায় তা নয় । বর্তমানে দেখা
যাচ্ছে পূর্বের অনেক মতবাদ পরিবর্তিত হয়ে যাচ্ছে । দেখা গেলো ২০ বছর আগের বিজ্ঞানী
বলছেন ডিম ওজন বাড়ায় এবং হার্টের জন্য ক্ষতিকর । ২০ বছর পর বিজ্ঞানীরা বলছেন যে
ডিম ওজন কমাতে সহায়তা করে এবং এর কোলেষ্টরল ও ক্ষতিকর নয় । আসলে জ্বীন বা ভুত অথবা
অশরীরি আছে কিনা এর অস্তিত্ব নিয়ে বিতর্ক সুপ্রাচীন । প্রাচীন সেমাইট জাতির জনগন ,
আশিরীয় সভ্যতার লোকজন জ্বীন জাতির অস্তিত্বে বিশ্বাস করতো ।ভারতীয় ও মিশরীয়
সভ্যতায় তো অনেক গল্পকথা বা উপকথায় উল্লেখ পাওয়া যায় অশরিরী ও প্রেতাত্বাদের
।প্রাচীন প্রচলিত অনেক তন্ত্র মন্ত্র ও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে যে গুলো অশরিরী হাজির,
বশীকরণ ও বিতাড়নের জন্য । সকল সভ্যতায় ছড়িয়ে আছে এ রকম হাজার হাজার তন্ত্র মন্ত্র । আজকের এই বিজ্ঞান যুগেও আমরা
এসব বৈজ্ঞানিক ভাবে সম্পূর্ন না করে দিলেও এসবে মনে মনে বিশ্বাস করেন এমন শিক্ষিত লোকেরও অভাব নেই ।তা
যদি না হয় তা হলে টেলিভিশন খুললেই কোন কোন চ্যানেলে সব
সমস্যা নিশ্চয়তা সমাধানে সিদ্ধহস্ত
বিভিন্ন বাবাদের বিজ্ঞাপন দেখতে পাওয়া যায় এটা তো দেখেছেন তাইনা? তো বিশ্বাস যদি
মানুষ নাই করে তবে এদের পসার হয় কি করে ? আবার জ্যোতিষবাণী বা জ্যোতিষবিদ্যা ভুয়া
বলে সবাই বলছি , তারপরও দেখুন সবকয়টি জাতীয় পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকা গুলোতে আজকের
রাশিফল নামে একটা অংশ থাকে । জ্বীন-ভূত-প্রেত-জ্যোতিষ এসবে স্বীকৃত ভাবে বিশ্বাস
করিনা বলা হয় সমাজে বা বলা হয় বিশ্বাস করবার মত যৌক্তিকতা বা বৈজ্ঞানিক ভাবে এর
কোন ভিত্তি নেই।তবে সাধারণত মানুষ তার কোন
দূর্বল মুহূর্তে এগুলো বিশ্বাস করে অধিকাংশে ।ধরুন যার হাতে প্রচুর অর্থ আছে সে
কিন্তু ভাববেনা তার কালকের দিনটা কেমন যাবে , যাত্রা শুভ কিনা, আবার লাগাতার
দারিদ্র কষাঘাতে পড়া মানুষটা হয়তো এ সবে
(98)
ক্রমাগত বিশ্বাস করতো এখন আর বিশ্বাস করেনা,
আবার একজন মানুষ যদি ব্যাপারটা বিশ্বাস করে তবে হয়তো সে এমন কিছু জীবনে পেলো সেটা
সে পাবার যোগ্য ছিলোনা, বা অপত্যাশিত ভাবে পেলো, তখনও তার ভিতর ভাগ্য বিশ্বাস এসে
যেতে পারে । মানুষের বিশ্বাস এর ভিন্নতা তৈরি হয়
পরিস্থিতি, মন ও তার পারিপ্বার্শিক পরিবেশ ভেদে ।ধরুন আপনার কোন একটা জরুরি
কাজ সেরে ফিরতে অনেকটা রাত হয়ে গেলো, রাত
তখন একটা, আপনাকে হেটে আসতে হবে ০৫ কিলোমিটার নির্জন রাস্তা দিয়ে, রাস্তার কোথাও
একটা গাড়িঘোড়া নেই, একটা জনমানুষ নেই, আপনার কাছে লাইসেন্স করা অস্ত্র আছে, অতএব
কোন মানুষের এ্যটাকের ভয়ও আপনি পাচ্ছেননা , আপনার যাত্রা পথে বড় একটা কবরস্তান আছে
, সেখানে আলোও কম, গল্প শুনেছেন ওই কবরস্তানের সামনে মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেব
আজানের আগে কিছু সাদা কাপড়ের লোক কে ঘুরতে দেখেছেন, কোন বাচ্চা কবরে বসে কাঁদে,
হঠাৎ করে কালো কাপড় পরা একটা লোক সামনে এসে অদৃশ্য হয়ে যায়, কবরস্তান পার হবার পর
আপনার বাড়ি যেতে একটা তেপান্তরের ফসলের
মাঠ পড়ে, মাঠের দু পাশে ফাকা , মাঠের ভিতর বড় একটা শতবর্ষী বট বা শিমুল গাছ আছে ।
আপনি শুনেছেন মাঝে মাঝে বটতলায় জ্বীনরা রাতে আসর জমায়, বা আগুন উড়ে বেড়াতে দেখা
যায়, বা মাঝে মাঝে মাঠের ওই রাস্তা দিয়ে গলাকাটা একজন লোক ঘুরে বেড়ায়, অনেকদিন আগে
একটা লোককে দূর্বৃত্তরা গলা কেটে খুন করে রেখে যায় এই মাঠে, হতে পারে সেই লোকের
আত্ত্বা, ব্যাস হয়ে গেলো আপনার কর্ম সাবাড় । আপনি ছিলেন সায়েন্স এর ছাত্র, আপনি
পড়েছেন ভুত বলে কিছু হয়না, আপনি জানেন রাতের আকাশে যে আগুন উড়ে বেড়ায় সেটা হলো
উল্কাপাত, বিল জলাভুমির আগুন মিথেন গ্যাসের প্রভাবে হয়, আপনি শুনেছেন হঠাৎ করে
নির্মল পরিষ্কার যায়গায় বোটকা দুর্গন্ধ অপদেবতা বা বাজে আত্বার উপস্থিতি, ব্যাস
হয়ে গেলো, আপনি দেখছেননা ওটা ইদুর–ছুচো না টয়লেটের গন্ধ । আপনি তো চিরকাল বুক
ফুলিয়ে বলে এসেছেন ও বিশ্বাস করে এসেছেন ভূত বলে কিছু হয়না, এ সব অলস মস্তিষ্কের
প্রসূত গল্প । কিন্তু কাহিনী যে পরিবেশ ভেদে ভিন্ন হয়ে যায় সেটা আপনি এই নির্জনতায়
খুব ভালোভাবে উপলব্ধি করছেন ।
(99)
বৈদ্যুতিক বাতির নিচে বসে, নেই
বলে যেটা তুড়িতে উড়িয়ে দেওয়া যায়, সেটা
কিন্তু এখন কোনমতে উড়িয়ে দিতে পারছেননা ।হঠাৎ করে মনে হলো কেউ হেসে উঠলো, কেউ মনে
হচ্ছে হাত ঘষছে, কেউ মনে হলো হাততালি দিলো, কেউ যেনো পিছনে হেটে আসছে, আবার পিছনে
তাকালে কেউ নেই । আপনার হার্টটা খুব লাফাচ্ছে, পা টা গরম হয়ে যাচ্ছে, আমাদের সমাজে
এ রকম মানুষ পুরুষ হোক বা নারী হোক শতকরা ৮০ জন এ রকম ভীতু । কারণটা এবার আমার
নিজস্ব মতামতে বলি, ধরুন আপনি অশরিরী নেই বলে যে গল্প দেন সেটা আপনি আপনার ঘরে বা
চায়ের দোকানে বন্ধু ও মানব সমাবেশে বলেন ।
যে বিজ্ঞানী বলেন ও সব গাজাখুরি, বিজ্ঞানের ভাষাতে হ্যালুসিনেশন বা অলীক ভাবনা,
ইলিউশন বা দৃষ্টিবিভ্রম তারা কিন্তু ল্যাবের মডার্ণ টেকনোলজি সমৃদ্ধ ঘরে বসে বলেন
। কিন্তু কজন আছে যে কোন হন্টেড প্লেসে বাজি ধরে একা রাত্রিযাপন করতে পারবেন ? যার
০৫ কি.মি. এর ভিতর কোন মানুষ নেই, দেখবেন আসর ফাঁকা হয়ে যাবে,সিসি ক্যামেরা সেট
করে দিলেও যাবেনা । দেখুন জনসমাগম স্থলে গরম চা খেতে খেতে
পাশে দশজন বন্ধু নিয়ে আর পকেটে পয়সা থাকলে অনেক কথা বলা যায় ।কি আছে কি নেই এটা
বুঝতে হলে আপনাকে সেই পরীক্ষা ও পরিবেশের মুখোমুখি হতে হবে ।পরীক্ষা কতটা ভয়ংকর, ছাত্রজীবনে
ক্লাস পরীক্ষায় ভালো মার্কস পাওয়া কতটা কষ্টের সেটা বুঝতে হলে সাজেশনের বাইরে আসা
প্রশ্ন ও হলে শিক্ষকদের কড়া গার্ড ছাড়া বোঝা যাবেনা ।ধরুন
সারা বছর আড্ডাবাজি ও ডেটিং এ ব্যস্ত থাকলাম, কোচিং এ গেলাম, বইয়ে প্রশ্ন আছে ২০০,
কোচিং বা স্কুল শিক্ষক সাজেশন দিলেন ৩০ টা প্রশ্ন, বা ফাস করা প্রশ্ন পেলাম যার ভিতর থেকে ১০
টা প্রশ্নই আসবে, আপনিও পড়লেন সেটা, আর পরীক্ষা দিলেন,
ভালো মার্কসও পেলেন, আর বলে বেড়াতে লাগলেন পরীক্ষা কঠিন কিছু হলো,যারা পরীক্ষাতে
ভলো রেজাল্টের জন্য রাতদিন এক করে পড়ে তারা কি বোকা তাইনা ?আসলে এই দুইরকম পরীক্ষার্থীর রেজাল্ট ভালো হলেও সমস্যা নেই, পার্থক্য থেকেই যাবে, ঘাটতি থাকলে জীবনের
যে কোন এক স্টেজে এসে আপনাকে কিঞ্চিৎ হলেও ভুগতে হবে।এখনকার জেনারেশনের আপনি আমি
এখনকার যুগে সব কিছুই না বুঝে
(100)
ইগনোর করি, বাস্তবতা কি জিনিস, কত নির্মম,
বাস্তবতার কোপে না পড়েই আমরা যা না তাই বলি, আমাদের ভিতর কেমন একটা হামবড়া ভাব
প্রবল, ঘরে বসে টিভি সেটের সামনে বসে যখন আপনার প্রিয় দলের ব্যাটসম্যানের স্ট্যাম্প
কখনো ১৫৫ কিলো গতির বোলারের করা বলে উড়ে যায় ।তখন আপনি বিজ্ঞের মত গাল পাড়তে থাকেন,
অমুক প্লেয়ার কে দিয়ে হবেনা, কানা বলটা একটু দেখে খেলবিনা
!বলটাতো তোর ব্যাট সোজা যাচ্ছিলো, আসুন একটা হিসাব করি, আপনি বা আমি কি কোনদিন ১৫০-১৬০
গতির বল কাকে বলে জানি ? ১২৮ কি.মি গতি তো ক্রিকেট পেস বোলিংয়ে কোন গতিই না, তো সেই গতির বল যখন
বোলারের হাত থেকে উড়ে এসে পিচ টাচ করে তখন ব্যাটসম্যানকে বলটাকে কি করে খেলতে হয়
জানেন ? বলটা
খেলার জন্য জন্য মাত্র 0.27 sec/(০.২৭ সেকেন্ড)সময় পাই ব্যাটসম্যান,মানে এর
মাঝে ব্যাট চালাতে না পারলে বলটা অনর্থক রানশূন্য হিসেবে উইকেট কিপার এর হাতে চলে
যাবে ।0.27 sec/(০.২৭ সেকেন্ড)সময় মানে ০১ সেকেন্ড এর অর্ধেকের ও কম সময়, তো ভাইয়েরা এই আধা সেকেন্ড এর কম সময়ে বলটা শুধু
দেখতে পেলে হবেনা, আধা সেকেন্ডের কম সময়ের ভিতর বলটা কোথায় পড়লো দেখতে হবে, আবার
বলটা যদি স্ট্রেট না এসে ইনসুইং, আউটসুইং, স্লোয়ার, কাটার, ইয়র্কার আসে কিনা সেটাও বুঝতে হবে, এবার বোলারের ডেলিভারির ধরন অনুযায়ী
শট খেলতে হবে, পুল, ফ্লিক, না স্কুপ কি শট খেলা যায় সেটাও ওই আধা সেকেন্ডের ভিতরের
সিদ্ধান্তে খেলতে হবে, আবার ফিল্ডারদের অবস্থান, কত বলে দলের কত রান দরকার সে
টেনশনও থাকে ব্যাটসম্যানের মাথায়, এখন একটা ডু অর ডাই পরিস্থিতিতে নিজেকে কল্পনা করি, ১২ বলে ৩০ রান
লাগবে, উইকেটে একমাত্র সেট ব্যাটসম্যান আপনি, এটা লাস্ট উইকেট, আপনার অপর প্রান্তে
যে ম্যান আছেন তিনি বোলিং ছাড়া ব্যাটিংয়ের
ব টাও বোঝেননা, আপনার দল বিশ্বকাপের ফাইনালে, এই প্রথমবার ফাইনালে উঠেছে,
আপনার চোখে ভেসে উঠলো দেশে আপনাকে টিজ করা কয়েকজন নিন্দুক টিভি সেটের সামনে বসে
আছে, যারা
(101)
আপনার খেলা নিয়ে তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে বসে সব
সময়, আরো ভাবছেন দর্শক যে পাগলের পাগল, হেরে গেলে আমার বাড়ি ভাংচুর করবে, আবার
আপনার দলের সিলেকশন কমিটিতে কয়েকজন আছেন যারা আপনাকে বাদ দেবার একটা ছুতো খুজছেন, দল
হারলে আপনি বাদ আর আপনার দলের টপ অর্ডার-মিডল অর্ডাররা ঠিকমতো ব্যাটিং করলে আপনাকে
এত ভাবতে হতোনা । ওদিকে খেলার ভেণ্যু বাইরের
দেশের কোন স্টেডিয়াম, আপনার নাম ভেসে আসছেনা গ্যালারী থেকে, লাখ খানেক
দর্শক সিংহনাদে গর্জন করে উঠছে জনসন ও স্টার্ক এর নামে, গো জনসন, গো স্টার্ক,
প্রথম ওভারটা মিশেল জনসন, পরের টা মিশেল স্টার্ক এর, সর্বোচ্চ গতি, সর্বোচ্চ সুইং এর মোকাবেলা, জীবন আপনাকে এই পরিস্থিতে
যুক্তি ও বিশ্বাসের বাইরে নিয়ে যাবে, যুক্তির বাইরে একটা জগৎ আছে সেই অভিজ্ঞতা
আপনি তখন পাবেন, হাজারটা যুক্তিও তখন আপনার জন্য অকার্য্যকর মনে হবে ।গতিটা ১২৮
kph নয় বস, ১৫০-১৬০ kph, ১২৮ এ আধা
সেকেন্ড সময় পেলে ১৬০ এ কয় সেকেন্ড সময় পাওয়া যাবে ? ।আপনি আমি চিরকাল যে মাঠে
বন্ধু বান্ধব দের সাথে যে টেনিস বা টেপ টেনিস বল এ স্কুলের মাঠে খেলে এসেছি সেটাতে
সর্বসাকূল্যে ১২০ kph এর বেশি ওঠেনা, আর ১২০ kph গতি কোন বন্ধুর হাতে থাকলে আমরা
তার বল খেলতে পারিনা, সময় ক্ষেত্রে বলি অত জোরে বল করা যাবেনা বা বলি ওই আস্তে বল
কর, গোয়ারের মত বল করিসনা ।তবু ওই টেনিস বলে ১২০ kph গতি ওঠে এমন লোক পাওয়া দুস্কর,
অধিকাংশ বন্ধুদের হাতে গতি ১০০ থেকে ১১০
kph এর বেশি হয়না ।এ জন্য রবি বা গ্রামীন ফোনের
পেসার হান্টে সর্বোচচ ১৩০ এর ধারে কাছে গতির বোলার পায় ,পরবর্তীতে কোচ করিয়ে তাকে
১০-২০ kph স্পিড বাড়ানো হয়, সেটাও সময়,
কঠোর পরিশ্রম ও খেলোয়াড়ের শরীরের গঠনের উপর নির্ভর করে । কারণ বলের গতি
সেই বোলারের শরীর, উচ্চতা, পেশী ও বোলিং এ্যাকশন, স্ট্যমিনা অনেক কিছুর উপর নির্ভর
করে ।তাহলে বুঝুন আমরা কি দেখেছি ! গতি কাকে বলে সে অভিজ্ঞতা আমাদের হয়নি ।আবার
কথা হলো পেসার হান্টের ক্ষেত্রে কাঠের(কর্ক)
এর বল ব্যবহার করা হয় ।এরপরেও ১৩০ গতির বোলার পাওয়া কষ্ট হয়ে যায় ।
(102)
কারণ কাঠের বল টেনিস বল থেকে কমপক্ষে ২০ kph
বেশি গতি দেয় আপনাকে ।এরও বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা আছে ।শোয়েব আখতার যদি টেনিস বল দিয়ে
একটা বল করেন এবং কাঠের বল দিয়ে একটা বল করেন, তাহলে দুটো বলই ওনার হাত থেকে সমান
গতিতে বের হবে ।কিন্তু কাঠের বলটি বাতাসের বাধা ভেদ করে তার ভরবেগ(momentum)একই
রেখে ব্যাটসম্যানের কাছে পৌছবে, অপরদিক টেনিস বল হাল্কা হওয়ায় বাতাসের বাধা ভেদ
করে যেতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে গিয়ে ব্যাটসম্যান পর্যন্ত পৌছে স্পিন বোলিং এর মত
গতি দেখাবে ।টেপ টেনিস অবশ্য কিছুটা বেশি গতি দেয় । তাহলে বুঝুন, টেনিস বা টেপ
টেনিস এ আমরা কত কম গতির বল মোকাবেলা করি বা খেলি ।সব থেকে বড় মূল
কথা হলো ব্যাটসম্যান বা বোলাররা খেলেন শুধু বল ছুড়ে দিলাম আর পেটালাম
বুদ্ধি দিয়ে নয় । তারা খেলেন মূলত সায়েন্স অফ স্পোর্টস ব্যবহার করে ।সাধারণ
একটা কথা বলি, রিভার্স সুইং করেন যে বোলাররা তারা কিন্তু শুধু বল করলেই হয়না ।
রিভার্স সুইং করাতে গেলে বলের কোন পাশ ক্ষয়ে গেছে, কোন পাশ উজ্জল আছে সেটা দেখতে
হয়, মাঠে বাতাস আছে কিনা সেটা দেখতে হয়, বাতাস থাকলেও বাতাসের প্রবাহ কোনদিকে সেটা
দেখতে হয়, এতো সামান্য একটা বিষ্ময়কর রহস্য, আরো কত সায়েন্স জেনে একজন ব্যটসম্যান
ও বোলারকে খেলতে হয় তার হিসাব নেই । সেটা একমাত্র তাদের কোচাররাই ভালো জানেন।ধরুন
মুস্তাফিজ ভালো কাটার দিতে পারেন । তিনি কাটার মাস্টার । কিন্তু সামান্য যদি তার
পা ফেলাতে বা বডি মুভমেন্টে ভুল হলেও ওনার বল কাটার হবেনা । কাটার শুধু হাতের
আঙুলের কারসাজিতে নয় । সাথে পুরো বডি মুভমেন্ট, পায়ের স্টেপ, কাধের পেশী, এমনকি
ওনার শরীরের ওজনের সাথেও সম্পর্ক আছে । আর ২০১৬-২০১৭ তে ইনজুরি থেকে ফেরার পর কেউ
কেউ তো সন্দেহ প্রকাশ করছে তার সামর্থ্য কি শেষ হয়ে গেছে ।আশা করি তিনি আবার কামব্যাক করবেন । যে ইউনিক এবং বিধ্বংশী একই সাথে ভয়ংকর
স্লোয়ার, কাটার, ইয়র্কারে তিনি হয়ে উঠছিলেন আতঙ্ক, সেটা
কি তার ভক্তেরা ভুলতে পারবে ? মনে আছে FIZZ
এর ভয়ংকর ইয়র্কারে IPL এ আন্দ্রে রাসেলের বোল্ড
হওয়াটা । আন্দ্রে রাসেল বলটা খেলতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে
(103)
পড়ে যান ।আরো বলি ইস
মাত্র ০৩ বলে ০১ রান নিয়ে বাংলাদেশ দল জিততে
পারলোনা, পাড়ার পোলাপান এর থেকে ভালো খেলতে
পারে, etc,etc , তো ধরুন একজন বোলার, পরিণত বয়স
নয়, লাখো দর্শকের শেষ মুহুর্তের গর্জন এসব কিছুর সাথে পরিচিত নন উনি, শেষ মুহুর্তে শক্ত রাখার মত এই নার্ভ ওই
সময়ে ওনার না থাকাটাই স্বাভাবিক, ওনার হাতের কাটার ওনাকে প্রত্যাশার থেকে বেশি
খ্যাতি এনে দিয়েছে, আমরা তার সমর্থক রা তাকে অতিমানব ভেবে ফেলেছি, কিন্তু উনি ওই
রকম পরিস্থিতি কখনো ফেস করেননি, ফলে অনভিজ্ঞতা হয়তো তাকে এরকম পরিস্থিতে আনাড়ী করে
ফেলতে পারে। আপনি খুবই মাসলস বহুল একজন মানুষ, সিক্স প্যাক শরীরও তৈরি করেছেন, বা
আপনার চুলটা সিল্কি, স্কিনটা খুব সুন্দর, তো আপনি একটা কালো চামড়ার শরীরের লোক কে
দেখে মনে মনে একটু অহংকারী হন , কোকড়া চুলোকে দেখে নিজের সিল্কি চুলের জন্য
অহংকারী হন । ভাবুনতো আপনি বা আমি যদি কালো চামড়া ও
কোকড়া চুল নিয়ে জন্মগ্রহণ করতাম তো কি করার ছিলো
আপনার বা আমার, আপনার মাসলসম্যান এর মত বডি আছে , খুব খেটে
তৈরি করেছেন, ধরুন আপনি বা আমি এমন একটা পরিবারে বা
দলিত শ্রেণীতে জন্মগ্রহণ করতাম যদি যাদের নুন আনতে
পান্তা ফুরায়, পরিবারের অধিকাংশ সদস্য অপুষ্টিতে ভোগে, সেখানে জন্মগ্রহণ করলে আপনি বা আমি কি অতিমানবীয় দেহ গঠনের কথা ভাবতে পারতাম
? পরিশ্রম দিয়ে ওই পরিস্থিতি থেকে উত্তরন হয়ে ব্যায়াম এর অবসর ও খাবার যোগাড় করতে
আপনার বা আমার শখের বয়স ও সময়টা চলে যেতো, আপনার যদি অভিনেতা হবার শখ থাকে, বা মডেল হবার
শখ থাকে, তবে আপনি সেটা ইচ্ছা করলেই পারবেননা, হয়তো আপনার পরিবারের রক্ষণশীলতা ,
আপনি ইন্সপায়ার করবার মত বা পাশে থাকবার মত
কোন সিনেমা সংশ্লিষ্ট
ব্যাক্তিত্ত্বের সান্নিধ্য বা চোখে না পড়েন, বা অর্থের জোর যদি
না থাকে তবে আপনি যত হ্যান্ডসাম বা প্রতিভভাধর হোননা কেন আপনি নামী অভিনেতা হতে
পারবেননা । খেলাধুলা সেক্টরটা ভিন্ন কথা । কারন রোদে পুড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা খাটবার
একটা ব্যাপার সেখানে থাকে । এ জন্য দেখুন ক্রিকেট বা ফুটবল গ্রেটদের অধিকাংশই
ছোটবেলা অতি পরিশ্রমী তো অবশ্যই
(104)
সবাই ছিলেন অনেককে চরম দরিদ্রতার ভিতর দিয়ে যেতে হয়েছে , আবার তাদের ছেলেরা কেউ তাদের মত নামী হয়নি বা হবেনা ভবিষ্যতে, হতে পারে সেটা পেলে, ম্যারাডোনা ।মেসি, দি ফেনোমেনন ব্রাজিলের রোনাল্ডো, দ্যা ফিজ মোস্তাফিজ, বাংলাদেশ মহিলা ক্রিকেট দলের ক্যাপটেন সালমা খাতুন,
বেলজিয়ামের রোমেলা লুকাকু যেই হোক না কেন ।আবার জীবন
থেকে নেওয়া বলে একটা কথা আছে, সে জন্য রবি ঠাকুরের ছেলে রবি ঠাকুর হয়নি, সত্যজিতের
ছেলে সত্যজিত হয়নি, আর অভিনেতা অভিনেত্রীদের ক্ষেত্রে যদি আমার লেখাতে সন্দেহ থাকে
তবে আপনি ঢালিউড, বলিউড, তামিল সব সিনেমা জগতের
অভিনেতা অভিনেত্রীদের পরিবার নিয়ে একটু পড়াশোনা করুন বুঝতে পারবেন
ব্যাপারটা, অবশ্যই তাদের অভিনয় গুণ ও প্রতিভা অসাধারন, তবে এটাই কিন্তু একেকটা সেক্টরের নিয়ম, আলাদা সিস্টেম আছে,
ব্যতিক্রম কিছু থাকতে পারে, কিন্তু ব্যতিক্রম উদাহরণ হতে পারে তবে সার্বজনীন
প্রযোজ্য নয়।খেলোয়াড়দের ছেলেরা খেলোয়াড় হয়তো এ জন্য হয়না কারণ খেলোয়াড়রা অধিকাংশই
খেলার প্রতি ভালোবাসা বশত অভাব অভিযোগের ভিতর দিয়ে কষ্টসহিষ্ণু ভাবে উঠে এসেছেন
।তারকা হয়ে যাবার পর অঢেল অর্থের কারণে বাড়িতে আরাম আয়েশের ব্যবস্থা থাকে । ওনাদের
সন্তানের সাতপুরুষ বসে খাবার মত অর্থ ও বিলাসিতার ভিতর থেকে কষ্ট করবার, ঘন্টার পর
ঘন্টা রোদ থাকবার ক্ষমতা হারায় ।ফলে ঘরে তার বাবার মত গ্রেটম্যান ও বাবার অর্জিত
টিপস সত্ত্বেও খেলোয়াড় হিসেবে গড়ে ওঠা হয়না ।খেলোয়াড়দের নিত্যদিনের কষ্ট বা ফিটনেস
ক্যম্প এর কষ্ট সম্বন্ধে তো জানেনই ।মানুষের জীবনে একটি ঘটনা
অথবা দূর্ঘটনা বা আইডিয়া তাকে ফকির ও বানাতে পারে, আবার ফকির থেকে রাজা ও বানাতে
পারে, সাধারণ থেকে অসাধারণ করে তোলে ।এখানেই হলো ভাগ্যের বা তকদীরের খেলা ।
তকদীরের খেল মানে ঘরে বসে ম্যাজিক করে কিছু পাওয়া নয়, ধনী বা গরীবের ছেলে বলে কথা
নয় । তকদীর বা ভাগ্য হলো আপনার জীবনে ঘটা কোন ঘটনার রিএ্যাকশন ও পরিশ্রমের বা
আপনার মানসিকতার ফল । ধরুন দুজন ক ও খ দুজন সুদর্শন, অভিনয় প্রতিভাধারী লোক, ক এর
বাবা ধনী এবং পরিচালক ও প্রযোজক, আর খ এর সুদর্শন ও অভিনয় ছাড়া আর কোন
কিছুই নেই, তাহলে নিঃসন্দেহে ক এগিয়ে
(105)
থাকবে পিতার কারনে সবক্ষেত্রে, এটাই ভাগ্য
বাকি সব নাম খ্যাতি ক এর পরিশ্রম এর ফল।আবার একজন
উচ্চশিক্ষিত ও বড় পেশাজীবী লোক এর ছেলের কাছে জীবনে বড় হওয়া এবং প্রতিষ্ঠিত হওয়া
যতটা সহজ বিপরীত অবস্থার লোকের ছেলের জন্য বিষয় গুলো এত সহজ হবেনা, বাতিক্রম যে
নেই তা নয়, কিন্তু বাতিক্রম উদাহরণ নয়, আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রে যাদের কে দেখা যায়
খুব সংগ্রাম করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে হয়েছে তাদের অধিকাংশই কিছু না কিছু সহযোগিতা
পেয়েছে কারো না কারো কাছে, মানে জীবনে নিচুতলা থেকে উপরের তলাতে ওঠবার জন্য তাদের
কে কেউ না কেউ হাত বাড়িয়ে দিয়েছে , সেটা হতে পারে অর্থ দিয়ে, বা কাজ দিয়ে , বা
বুদ্ধি দিয়ে । সুতরাং, যেটা বলছিলাম, সব কাজের একটা থিম
বা সিক্রেট থাকে । যেটা হঠাৎ করে চাইলে পাবেননা ।যে মুদি দোকানী, সে জানে কোথা
থেকে ০৫ টাকায় জিনিস কিনে ০৮ টাকায় বিক্রি করা যাবে, সেই রকম কথা, পুরোপুরি একটা
লাভ ক্ষতির হিসাব ।আপনি একজন ধনী লোক, আপনার ছেলে ভালো
খেয়ে, গাড়িতে চড়ে, ভালো পোশাকে স্কুলে যাচ্ছে, আপনার ছেলে ভালো রেজাল্ট করে, ভালো
নাচতে গাইতে ও পারে, কিন্তু আপনি আপনার বাসাতে যে কাজের ছেলেটাকে বা মেয়েটাকে রেখেছেন, তাকে কিন্তু
তিনবেলা পারলে থাপ্পড় দিচ্ছেন, না থাপ্পড় মারলেও মুখে যা তা বলে গালি দিচ্ছেন, আর আপনমনে ভাবছেন আপনি যেমন জ্ঞানে , গুনে ধনে সেরা, আপনার ছেলেও তাই । কিন্তু
কখনো ভেবে দেখেছেন আপনি বাসায় আপনার ছেলের বয়সী যে ছেলেটাকে দিয়ে , বাজার করা ,
থালাবাসন পরিষ্কার করাচ্ছেন, গর্দভের বাচ্চা বলছেন, সেই ছেলেটা যদি সম সুযোগ পেতো তাহলে কিছু করতে পারতো কিনা ?আপেক্ষিকতার বিচারে লাঠি আর তলোয়ারধারীর লড়াইকে যেমন এক বা সম লড়াই বলা যাবেনা
তেমনি সুযোগ পেয়ে বড় আর সুযোগ না থেকে বড় কে এক নিক্তিতে পরিমাপ করা যাবেনা , লাঠি হাতে লড়তে আসা প্রতিযোগী কে বন্দুক
হাতে করে সহজেই হারিয়ে দেওয়া যায়, কিন্তু তাতে গৌরবের কিছু নেই, যোগ্যতার বিচারটাও
আপেক্ষিক, মোগল বাদশাহের ছেলে শাহজাদা বা অটোমান সাম্রাজ্যের সুলতান এর ছেলে
সুলতান হওয়া মানে এটা নয় যে, শাহজাদার
থেকে ততোধিক যোগ্যতার আর কোন যুবক ওই দেশে ছিলোনা
(106)
অভিনেতা বা অভিনেত্রীর ছেলে বা মেয়ে অভিনেতা
বা অভিনেত্রী হওয়া মানে এই নয় যে তার সন্তানের থেকে প্রতিভা এবং সৌন্দর্যে এগিয়ে
আর কোন ছেলে বা মেয়ে দেশে নেই । লাইম লাইটে আসার
সৌভাগ্যটা সবার হয় না, জন্ম সুত্রে যে সোনার চামচ মুখে জন্ম নেই তার জন্য পৃথিবীর
সংগ্রাম যত সহজ, ঠিক ততগুন কঠিন জীবন সংগ্রামে পতিত হয় যে বস্তির কুঁড়েঘর এ জন্ম
নেয়। সাধারনের
থেকে সুযোগ পেলেও কিছু করা সম্ভব তা হাল আমলের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ ।আসলে
সাফল্যের চুড়া থেকে জন্মগতভাবে/জন্মসূত্রে আমরা একেকজন একেক রকম দুরত্বে অবস্থান
করি ।সাফল্যের চুড়া যার কাছে জন্মগত ভাবে যত কাছে থাকে সে তত দ্রুত সাফল্য বা
যোগ্যতা অর্জন করে ।আবার সব কাজ সবাইকে দিয়ে হয়না । একটা মাছ গাছে উঠতে পারে কিনা,
সেই মাপকাঠিতে পরিমাপ করলে মাছ চিরটি কাল আপনার চোখে
অযোগ্য, অকর্মা থেকে যাবে, কারন সে গাছে উঠতে পারেনা সেজন্য ।কিন্তু একবার
তিনি কি ভাবেন যিনি
বলেন যে মাছ গাছে উঠতে পারেনা, ডাঙায় শ্বাস নিতে পারেনা । কিন্তু তিনি কি ভাবেন যে
তিনি মাছের মত পানির নিচে শ্বাস গ্রহন করতে পারেননা । এভাবে ভাবলে দেখা যাবে যে মাছ যা পারে, যেটা দেখে ও ভাবে সেটা আমরা
পারিনা । এ জন্যই বলছি যোগ্যতার বিচার আপেক্ষিকতা ও ভাববার অ্যাঙ্গেল বা দৃষ্টিকোন
থেকে আপেক্ষিক ।ভূমিকা বা শুরুর অংশেই বলেছি সুপ্রিয় পাঠক যে এই বইয়ের মূল থিমই
হলো আপেক্ষিকতা ।আপনারা স্বাভাবিক চোখে যা
দেখেন, যা শোনেন, যেটা বোঝেন, সেটা শুধু চর্মচোখে না দেখে আপেক্ষিকতার দৃষ্টিকোন থেকে একটু উল্টেপাল্টে
দেখুন দেখবেন সৃষ্টির অনেক ছোটখাটো রহস্য, সৃষ্টিরহস্য সহ মনের গহীনে জমা ব্যাক্তিগত ও সামাজিক অনেক প্রশ্নের উত্তর আপনি নিজ থেকেই
পেয়ে যাবেন ।আর মনে নির্দিষ্ট একটা মানসিকতাকে আকড়ে ধরে বা নির্দিষ্ট একটা
মানসিকতার দলবাজী না করে বা পক্ষ না নিয়ে মনকে ভাববার স্বাধীনতা দিন, দেখবেন
সত্যটা এমনিতেই বেরিয়ে আসবে। অনেক অজানা প্রশ্নের উত্তর, আপনার জীবনের অনেক সিদ্ধান্তহীনতাতে
আটকে থাকা কাজ করবেন কি করবেন না ,
(107)
-এর
মীমাংসা হয়ে যাবে ।জীবনে আমরা সবকিছুতে কনফিউশন এ ভুগি, কাজটা কি করবো, না করবনা
এসব নিয়ে ভেবে আমাদের অনেক খানি সময় চলে যায় বা অনেক সময় কাজটা করা হয়ে ওঠেনা।
একটা জিনিস ভাববেন জীবনের খাতায় বা ইতিহাসের পাতাতে কনফিউশন এর জন্য কোন যায়গা
থাকেনা ।ইতিহাসের পাতা লেখে জয়ী এবং পরাজিতের ইতিহাস ও নাম। আপনি পরীক্ষাতে জিপিএ-০৫
পাননি এই বাজে স্মৃতি আঁকড়ে ধরে থেকে লাভ হবেনা, প্রেমে ব্যার্থ হয়েছেন, প্রেয়সী
আপনাকে ছেড়ে চলে গেছে , এই চিন্তাতে আপনি নেশা ধরলেন, জীবনের আশা ছেড়ে দিলেন এটা
কখনোয় সমাধান হতে পারেনা, জীবন এত ছোট নয়, এত ঠুনকো নয় ভাই।ব্লেড রানার খ্যাত অস্কার
পিসটোরিয়াস যদি দুটো পা না থেকে বিশ্ব এথলেটিক্স এ দৌড়বিদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে
পারে, কে এফ সির মালিক কলনেল স্যান্ডার্স যদি ৭০ বছর এ প্রতিষ্ঠিত হতে পারেন,
জীবনকে নিয়ে নতুন করে সপ্ন দেখতে পারেন, আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা জ্যাক মা জীবনে কোন
দিন চাকুরির চেষ্টা করে না পেয়েও আজ আলিবাবার প্রতিষ্ঠাতা, একবার একটা চাকুরীর
পরীক্ষা এত সোজা হয়েছিল যে সকল চাকুরি প্রার্থী চাকুরী পেয়ে গিয়েছিলো, শুধুমাত্র
তিনি বাদ পড়েছিলেন, আর সেই মানুষটি কিনা এখন পৃথিবীর হাতেগোনা ধনীর ভিতর একজন,
জাস্ট ভাবা যায়না, অর্থাভাবে শতাব্দীর সেরা কয়েকজন হলিউড একশন হিরোর একজন একশন
রকি-রাম্বো খ্যাত অভিনেতা সিল্ভেস্টার স্ট্যালোনকে একসময় অভাবের তাড়নাতে তার পোষা
কুকুরটা মাত্র কয়েক ডলারে বিক্রি করে দিতে হয়েছিল, পরবর্তীতে তার পরিশ্রম প্রতিষ্ঠা
এবং খ্যাতি তাকে এত টাকার মালিক করে দেয় যে তিনি পরবর্তীতে তিনি তার সেই
কুকুরটি কয়েকশো গুন বেশি টাকা দিয়ে কিনে নেন, দি ব্যান্ডিট কুইন বা দস্যু রাণী
খ্যাত ফুলন দেবী ১৭ দিন পাশবিক নির্যাতনের শিকার হয়েও আর ০৫ টা মেয়ের মত আত্মহত্যা
না করে জীবনে কামব্যাক করেন। আসলে মানব ক্ষমতার অদ্ভুত একটা শক্তি আছে সেটা মানুষ
ভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে। আপনি জানেন গুগল ম্যাপে যত তথ্য রয়েছে তার পরিমাণ ২০
পেটাবাইট আর মানুষের মস্তিস্কে যে তথ্য
আছে ।
(108)
তার পরিমাণ হল ২০০০ পেটাবাইট(১০০০ কিলোবাইট-০১
মেগাবাইট-১০০০ মেগাবাইট -০১ গিগাবাইট -১০০০ গিগাবাইট -০১ টেরাবাইট -১০০০ টেরাবাইট-০১
পেটাবাইট ,{মুলত ১০২৪ কিলোবাইট হবে, বোঝার সুবিধার্থে ১০০০ করে একক ব্যাবহার
করেছি} তাহলে ২০০০ পেটাবাইট মানে কি দাড়াচ্ছে বুঝুন তো । এটা কি কল্পনা করা যায় !!
,হয়না
বা নেই বললেই সেটা হয়না বা না হয়ে যায়না । এক সময় বলা হতো চাষার ছেলে চাষা হয়,
পরবর্তীতে বহু চাষার ছেলে বড় কিছু হয় দেখিয়েছে, ২০ বছর আগেও ভাবা হতো মেয়েরা
পড়ালেখা শিখে কি ল্যন্ডলর্ড হবে, জর্জ ব্যারিষ্টার হবে ? কিন্তু সুযোগ পেলে তারাও
যে জর্জ,ব্যরিষ্টার,ডাক্তার,ডিসি,এসপি,পাইলট সবই হচ্ছে, হয়তো সৃষ্টিগত কারনে
নারী-পুরুষের সামর্থ্যতে কিছুটা কম বেশি বা সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হতে পারে, সেই সীমাবদ্ধতা থেকেও যাবে, তবে সেটা কথা নয় । একটা মাছ পানিতে থাকে ।পানিতে বসে
একটা মাছ যদি বিজ্ঞের মত বলতে থাকে এবং ফাইনাল একটা ডিসিশন দেয় বা এই সিদ্ধান্তে
উপনীত হয় যে পানির উপরে আর কোন জগৎ নেই, সেখানে কিভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব, কারণ বাঁচতে
তো পানির দরকার, মাছ নিয়ে ডাঙার প্রাণীরা রান্না –বান্না করে খায় এটা আমরা শুনেছি
সব ভুয়া কথা । আমাদের একমাত্র খায় জলের, সাপ, ব্যঙ কুমিরেরা ।কোন মাছ হয়তো আর একটু
জ্ঞানমূলক মতবাদ দিলো যে, যার যখন সময় হয়ে যায় , পানির জগৎ থেকে সে অদৃশ্য হয়ে যায়
। হয়তো সেটা সে মাছেদের জগতে বলে বা মতবাদটা প্রচলন করে প্রমাণ দিয়ে অমর হয়ে রইলো
। কিন্তু সত্যটা কি সেটা উপলব্ধির ক্ষমতা মাছের আছে কি ? স্থলে মানুষ, হাতি, ঘোড়া,
বাঘ, গাড়ি, বাড়ি এসব আছে এটা কি মাছকে দেখালেও বুঝতে পারবে ?হয়তো জলে ও স্থলে চরে
বেড়ানো উভচর সাপ ও ব্যাঙের মাধ্যমে কিছু ধারনা পেতে পারে ।কিন্তু তার ভিতরও কথা
থাকে ।সাপ ব্যাঙকে খায়। আবার সাপ ও ব্যাঙ উভয়ই মাছেদের খায় । আর সাপ ও ব্যাঙের ও কি
মানব জীবন, স্থলের অফিস আদালত, মানুষের দৈনন্দিন জীবন এসবের বোঝবার ক্ষমতা কি আছে ? এটাকেই আমার মতে আমি মনে করি
তথাকথিত ডাইমেনশন বা মাত্রা ।
(109)
বলা
যেতে পারে ডাইমেনশন বা মাত্রা হলো আমাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের
এমন এক সীমাবদ্ধতা, যার অভাবে আমরা মহাবিশ্বের অন্য প্রাণীর অস্তিত্ব গ্রহ বা
পরলোক সম্বন্ধে জানতে পারছিনা । এই যে আমরা অনেকেই না বুঝে বলে দিই ভুত জ্বীন অশরিরীরী নেই ,
অনেকে তো নাস্তিক হিসেবে বলে দেন স্রষ্ঠা নেই বা পরলোক নেই
এটা বলেন তারা হলেন সব থেকে বড় বোকা ।হুযুর
(সাঃ)এর মিরাজের ঘটনায় স্রষ্ঠা ও নবীর মাঝে পর্দার
যে কথা উল্লেখ আছে বা মূসা (আঃ) তূর
পাহাড়ে স্রষ্ঠাকে দেখতে চাওয়ায় যে একটি পর্দা সরার কারণে
নুরের তাজাল্লী পতিত হয় তূর পাহাড় ভস্মীভূত হয়ে যায় ।আসলে এই পর্দাটা হলো তথাকথিত
মাত্রা বা ডাইমেনশন বা মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা ।এর বেশি জ্ঞান স্রষ্ঠা মানুষের ভিতর দেননি । ধরুন আজ ২০১৭ সাল, আজ থেকে ১০০ বছরের
কিছু বেশি সময় আগে আমরা ওড়বার প্রযুক্তি উদ্ভাবন করতে পারিনি ।তখন আমরা পৃথিবীর
বাইরের এই মহাকাশের এত বিশালতা সম্বন্ধে জানতামনা ।আকাশের তারা যে আমাদের থেকে
কয়েকলক্ষ আলোকবর্ষ দুরে । আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ০১ লক্ষ ৮৪ হাজার মাইল বা ০৩ লক্ষ কিলোমিটার প্রতি
সেকেন্ডে। তাহলে এবার হিসাব করুন আলো ০১ মিনিটে কতটুকু
যায়, ০১ ঘণ্টাতে কতটুকু যায়, ০১ দিনে, ০১ সপ্তাহে, ০১ মাসে, ০১ বছরে কতটুকু যায়
সেটাই হল আলোকবর্ষ ।মানে ৫৮৭৮৬২৫ মিলিয়ন বা ০৬ ট্রিলিয়ন মাইল এর সমান পথ
অতিক্রম করে ।কিলোমিটার এর এর হিসেবে ৯৪৬০৭৩০৪৭২৫৮১ কিলোমিটার, পৃথিবী থেকে
চাঁদ মাত্র ১.২৯ আলোক সেকেন্ড, সূর্য ০৮ আলোক মিনিট, পৃথিবী থেকে মঙ্গল গ্রহ ১২.৭
আলোক মিনিট, সব থেকে কাছের নক্ষত্র প্রক্সিমা সেন্টরাই ৪.৩ আলোক বর্ষ দূরে, পৃথিবী
থেকে মিল্কিওয়ে গালাক্সির শেষ প্রান্ত ৫২ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। দুরে অবস্থিত,
মহাকাশের শেষ কোথায় সেটা ও কি আমরা জানি ? এটাই হলো পর্দা বা মাত্রা বা ডাইমেনশন ।
একেকটা পর্দা চোখের সামনে থেকে সরে যাওয়া
মানে নতুন জ্ঞান লাভ করে জ্ঞানী হওয়া, জ্ঞানের একটা নতুন স্তরে উপনীত হওয়া ,আমরা
যখন বর্তমান বিজ্ঞানের থেকে উন্নত হবো, তখন আমরা নতুন কিছুর সন্ধান পাবো, নতুন কিছু জানতে পারবো ।
(110)
অর্থাৎ
অজানা কোন কিছু জানতে পারা মানে পৃথিবী ও অসীম মহাকাশের অসীম সংখ্যাক পর্দা দিয়ে
আড়াল করে রাখা রহস্যের ভিতর থেকে একটা একটা রহস্যে ঘেরা বিষয়ের উপর থেকে পর্দা সরে
গেলো । পর্দার আড়ালের একটা বিষয় সামনে চলে এলো ।
আচ্ছা আমরা কথায় কথায় বলি অক্সিজেন আছে যে গ্রহে , পানি আছে যে গ্রহে সেটাতে
জীবের অস্তিত্ব থাকা সম্ভব । অক্সিজেন বা পানি ছাড়া আর কোন কিছু অবলম্বন করে জীব
থাকতে পারাটা অসম্ভব কিছু কি ? ।আমাদের যেমন বেচে থাকতে হচ্ছে অক্সিজেন দিয়ে, তেমনি এমন কোন প্রাণী থাকতে পারে
যার অক্সিজেন লাগেনা । যেমন ধরুন আমি আপনি পানির
ভিতর নির্দিষ্ট সময়ের বেশি ডুবে থাকলে মারা যাই, তার মানে কি দাড়ায় পানিতে কিছু
বসবাস করতে পারেনা ।না সেটা ভাবা বোকামি, পানির জগতেও অগনিত সৃষ্টি রয়েছে । নিজে যেখানে বাচতে পারিনা, যেতে পারিনা,
যেটা দেখিনা, দেখিনি যে যায়গা কোনদিন সেখানে কিছু থাকতে পারেনা এটা ভাবা কি
অবুদ্ধিমানের পরিচয় নয় ?। ধরুন পা
না থেকে সাপ কিভাবে হাটতে পারে, কান না থেকেও জিহ্বা দিয়ে কিভাবে শোনে ।আছে বা
নেই, পারা বা না পারা বাক্তি, স্থান, কাল এবং যায়গা ভেদে আপেক্ষিক একটা ব্যাপার
।অতি গতিশীল একটা যান আমরা যদি কখনো আবিষ্কার করতে পারি তবে অনেক কিছ সম্ভব মানুষের
দ্বারা করা। বর্তমানে মানুষের তৈরি রকেটের সর্বোচ্চ গতি সেকেন্ডে ১৬.২৬ কিলোমিটার
মানে ঘণ্টাতে ৫৮৫৩৬ কিলোমিটার মাত্র । আর ৪৭৮ কিলোগ্রাম ওজনের একটা স্পেসশিপ ঘণ্টাতে ৫৮০০০ কিলোমিটার এর কাছাকাছি অতিক্রম করতে পারে মানে সেকেন্ডে ১৬ কিলোমিটার
এর মত এখন টাইম মেশিন আবিষ্কারের কয়েকটা আইডিয়া আছে তা হল মানুষ যদি আলোর বেগের
থেকে বেশি গতির কোন যান আবিষ্কার করতে পারে তাহলে সে অতীত দেখতে পাবে, মানে টাইম
মেশিন দিয়ে সে অতীতে পৃথিবীতে কি ঘটেছিল তা সে দেখতে পাবে, আলোর থেকে বেশি গতি,
ভাবা যায় !! ইজ ইট পসিবল ? ।
তো ওই যে বলছিলাম নির্জন রাস্তায় আপনি
আসছিলেন আর যে সব অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন, যেমন, হঠাৎ করে মনে হলো কেউ হেসে
উঠলো, কেউ মনে হচ্ছে হাত ঘষছে, কেউ কাঁদছে ।
(111)
কেউ
মনে হলো হাততালি দিলো, কেউ যেনো পিছনে হেটে আসছে, আবার পিছনে তাকালে কেউ নেই এইসব।
এ সবের নানা ব্যাখ্যা হতে পারে।রাতের প্রকৃতি থাকে নির্জন ।আপনার আমার চলাচলের সময়টা
সাধারণত রাত আটটা থেকে দশটার ভিতর সীমাবদ্ধ থাকে ।নির্জনতা বা নির্জন পথ দিয়ে
চলাচল, অথবা নির্জন পরিবেশের সংস্পর্ষে সাধারণত আমাদের এই যুগের মানুষদের চলা হয়না
বললেই চলে। আমরা এই পরিবেশটার সাথে পরিচিত নই ।জন কোলাহল ও যান্ত্রিক জীবনের ভিতর
দিয়ে চলতে চলতে আমরা নির্জনতার সঙ্গে সম্পূর্ণ অপরিচিত হয়ে যায়। রাতের নির্জনতায়
অনেক দুরের শব্দ ও আমাদের কানে ভেসে আসতে পারে। আপনি যদি মাটিতে
কান পাতেন তাহলেও অনেক দুরের শব্দ শোনা যেতে পারে ।অনেক সময় শিশু কিশোরদের দুষ্টুমী
করে রেল লাইনে কান পাততে দেখা যায় ।দেখা
যায় ট্রেন যখন দুই এক কিলো দুরে থাকে তখন ট্রেনের
শব্দ মাটিতে কান পাতলে শোনা যায় ।বিজ্ঞানের ভাষায় এটাকে বলে ground vibration।
ঝিঝি পোকা ডাকবার শব্দও পাওয়া যায় গ্রামের নির্জন রাস্তায় ।যেটাতো আমরা ভুলতে
বসেছি। আপনি হয়তো নির্জন রাস্তাতে কান্নার শব্দ পাচ্ছেন । রাত তখন একটা । হতে পারে
সেটা দুশো থেকে ৫০০ গজ দুর থেকে ভেসে আসা কোন কান্নার শব্দ । হতে পারে সেটা রাতে
উঠে ঝামেলা করবার মত কোন বাচ্চার কান্না ।হঠাৎ বিকট হাসির শব্দ শুনলেন । সেটা হতে
পারে ফাকা মাঠে কারো হাসির শব্দ । ভাবছেন ফাকা মাঠে হাসির শব্দ এত রাতে আসবে কোথা
থেকে ।ধরুন গ্রামে অনেকের অভ্যাস থাকে রাতে মাছ ধরতে যাওয়া , বন্ধুরা মিলে পিকনিক
বা হতে পারে গভীর রাতে মাদকের নেশা করা কোন ব্যাক্তির উপস্থিতিতে এমন হাসির শব্দ ।
ধরুন হাড় মটমট করে ভাঙার কোন শব্দ পেলেন । মোটামুটি ঘাবড়ে গেছেন তাইনা । দেখুনতো
আশে পাশে কোথাও কুকুর দেখতে পান কিনা , কোথা থেকে হয়তো একটা
হাড় নিয়ে এসে চিবোচ্ছে । আশেপাশে কোন বাঁশ বাগান যদি থাকে তবে হতে পারে সেটা দুটো বাঁশ
গাছের বাতাসের কারণে বাড়ি খাওয়া বা ঘর্ষণ ।
(112)
হঠাৎ
করে কোথাও মনে হলো বাচ্চাদের মত ঝুনঝুনি(গ্রামে প্রচলিত বাচ্চাদের খেলনা বিশেষ)
বাজালো আশেপাশে কেউ,বা হাল্কা ঝাড়ু দেবার মত শব্দ। এবার একটু সাবধান হোন ।হয়তো
বইয়ে পড়েছেন rattle স্নেক জাতীয় সাপেদের লেজে ঝুনঝুনি জাতীয় একটা ব্যাপার থাকে বা
হতে পারে ভাইপার । লেজ ঝাকা দিলে ঝুনঝুনির
মত শব্দ হয় । তো আশেপাশে সাপ থাকতে পারে । হঠাৎ দেখলেন ভূতের গল্পে পড়া জলন্ত
চোখের মত দুটো জলন্ত চোখ আপনার দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে একদৃষ্টে
তাকিয়ে আছে কোন ঝোপের আড়াল থেকে । আপনি জানেন হয়তো নিশাচর প্রাণীদের চোখ রাতের
অন্ধকারে জ্বলে ।হতে পারে সেটা কুকুর, বিড়াল, বাঘ বা মেছো বাঘ ।হয়তো দেখলেন সামনে দিয়ে কেউ হেটে চলেছে
।কোন কথা বলছেনা । চুল উস্কোখুস্কো । হতে পারে কোন পাগল ।দেখলেন
কালো কাপড় পরা মানুষের বাচ্চা সাইজের একটা কিছু উড়ে গেলো ।হতে পারে সেটা কোন বড়সড়
বাদুড় ।গাছের ডালে হুতোম পেচার তাকানো ও ডাকের শব্দেও আপনি ভয় পেতে পারেন ।ছাদে বা
টিনের চালে ঢিল পড়ার শব্দ বা কারো হেটে যাবার শব্দ ।এটার কারণ হতে পারে টিনের চালে
বা ছাদের উপর দিয়ে বিড়াল ইদুর ধরতে উঠলো, বা বাদর বা হনুমান জাতীয় কিছু হেটে গেলো,
টিনের চালে ঢিল পড়ার শব্দ সেটাও হতে পারে, আশেপাশে নারিকেল গাছ থাকলে তার ছোট ছোট
ফল পড়ার শব্দ । হয়তো দুর থেকে ভেসে আসছে করুন সুরে বাঁশির শব্দ ।এটা ভূতের মনে না
করাই ভালো । হয়তো গ্রামের কোন উদাসী বা রোম্যান্টিক লোকের বাজানো বাঁশির সুর । এই
প্রসঙ্গে আমার শোনা একটা ঘটনা বলবো ও সাথে কিছু ভৌতিক অভিজ্ঞতার কথা বলবো ।তার আগে
বলে নিই, ভূত বা অশরিরী কি, আপনি আমি সাধারণত ভূতে ভয় পাই কেন ,আসলে ভূত বলুন আর
যাই বলুন সেটা হতে পারে আপনার আমার অপরিচিত এই রাতের প্রকৃতির চির অপরিচিত নির্জন
রূপ ।অজানা ব্যাখ্যাবিহীন ব্যাপারটাই হলো ভূত। আপনার এই রাতের
পরিবেশটা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অপরিচিত হবার কারণে যৌক্তিক ভয় ।এ রকম কোন সিচুয়েশনে
পড়লে চিরকাল মাথা ঠান্ডা রাখবেন ।ভয়ও পাবেননা, দৌড় বা তাড়াহুড়া করবেননা । দেখা
গেলো হিতে বিপরীত হতে পারে।
(113)
আশেপাশে
কুকুর থাকলে আপনাকে তাড়া করলে নির্ঘাত জখম ও ইনজেকশন দেবার ব্যবস্থা হতে পারে ।আসলে
আমরা আমাদের সকল হিতৈষী বেষ্টিত বা চিরকাল জনকোলাহলে বেষ্টিত থেকে আমাদের
হইহুল্লোড়ের বাইরে নির্জন প্রকৃতির একটা রূপ আছে সেটা সম্পর্কে ধারণা না থাকাটাই
হয়তো আমাদের সামনে ভূত হয়ে দেখা দেয় ।রাতের নির্জন জঙ্গল, জ্যোৎস্না রাতের নদীর
রূপ, রাতচরা পশু পাখি কীটপতঙ্গ এর অজানা এক নতুন পরিবেশে কজন বেড়িয়েছেন ।আবার
সবকিছু কোলাহল বাদ দিয়ে আপনার ঘরের দরজা, জানালা হালকা বন্ধ করে দিন ।ঘরটা গাড়ি চলাচল ও মনুষ্য চলাচলের
রাস্তা থেকে দুরে হতে হবে, এবং ঘরটা হতে হবে নীচতলা, বাড়ির চারপাশে গাছপালা থাকতে
হবে, বাড়িতে কেউ থাকবেনা, বাসা একেবারে ফাকা, এবার ঘরে আসুন, মেঝেতে বসে চুপচাপ চোখ বন্ধ করুন ।পৃথিবীর সবকিছু ভুলে যান।
ভুলে যান আপনার নাম পরিচয় থেকে আপনার প্রিয় মুখগুলোকে ।চোখ বুজে আপনি দেখছেন
অন্ধকারটাকে আর কান শুনছে কিছু শোনা যায়
কিনা ।এভাবে আধঘন্টা থাকুন । শুধু অনুভব করুন বন্ধ চোখ আর কান কি শুনছে ও
দেখছে ।গভীর রাতেও একই পরিবেশে একই কাজটা করুন । নতুন কিছু অনুভব হবে ।এটা
মেডিটেশন, বোগাস বা হেয়ালি যাই বলুননা কেন, যে শব্দ শুনতে পারেননা স্বাভাবিক কানে,
যে অনুভব হয়না স্বাভাবিক চলনে সেটা হয়তো অনুভব হবে যদি কনসেনট্রেশন বা মনযোগ ঠিক
থাকে । দিনের কোলাহলে রাতের রহস্যময়
অন্ধকার থাকেনা, নিশাচরেরা বের হয়না, যদি কোন সুক্ষ্ণ কিছু থাকে তবে সেটাও
দৃশ্যমান হতে হয়তো একটা পরিবেশের দরকার হয়, যেমন সাদা রঙের কিছুর দৃশ্যময়তা ফুটতে
কালো ক্যনভাসের দরকার হয় । সুতরাং ভূত ও যুক্তির বাইরে কিছু নয় । সবই অজানা
যুক্তির যুক্তিযুক্ত খেলা, ভূত মানেই পথ আটকানো সাদা কাপড় পরা পেত্নী নয়,
মামদো-হামদো-ব্রক্ষ্মদৈত্য নয়।রাতের অন্ধকারে যৌক্তিক
কাজ, দিনের বেলার স্বাভাবিক কাজ, দিনের বেলার হাস্যকর অনেক কাজ, দিনের বেলাতে
খেয়াল না করা কাজ, রাতে হয়ে ওঠে অস্বাভাবিক ও অতিপ্রাকৃত, অনেক ক্ষেত্রে মহা ভয়ংকর।
(114)
কেন জানেন দিন আর রাত একই জিনিস,
আশ্চর্য কিছু নয়, প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে পৃথিবী জীবের উপযোগী হবার শুরু থেকেই
দিন রাতের এই খেলা চলে আসছে ।দিন ও রাত মানে হল
পৃথিবীর ঘূর্ণনের কারনে পৃথিবীর এক পিঠে যখন রোদ পড়ে সেই পিঠে দিন আর যে পিঠে রোদ
পড়েনা সেই পিঠ হল রাত ।পৃথিবীর এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মানে দিন রাতের
এই খেলা নিয়ে ভয় পাবার কিছু নেই ।কিন্তু দিন নিয়ে তত
কৌতূহল না থাকলে ও যত আজগুবি আর রহস্য কথা, উপকথা, মিথ সব এই রাত নিয়ে ।কারন হল রাত একটা কালো কানভাস, কালো পর্দার অপর নাম, না পড়া এক মহা রহস্য
উপন্যাসের নাম ।কালো ক্যানভাসে যেমন যা কিছু ফুটিয়ে তোলা সহজ
হয়, যে কোন কিছু আঁকলে সেটা সুন্দর হয়ে ফোটে, সামান্য আঁচড় ও বোঝা যায় খালি চোখে,
কালো পর্দার আড়ালে যেমন কোন কিছু চলে গেলে তা আর দৃশ্যমান থাকেনা, চোখের আড়াল হয়ে
যায়, তেমনি রাত এই লুকোচুরি খেলা আর সৃষ্টির শুরু থেকে চলে আসা সেই ভুত পেত্নী,
আত্মার সেই লীলাভূমি । এই নিয়ে আমরা কত ভয় পাই, কত মন্ত্র পড়ি, কত
সাবধানতা নিয়ে থাকি ।সারা পৃথিবী, সারা মানবজাতি যখন, সমস্ত
প্রাণীকুল যখন ঘুমে মগ্ন ,তখন কি আসলেই আর একটা জগতের প্রানীরা নেমে আসে ? এ
প্রশ্নের উত্তর আজ পর্যন্ত বিজ্ঞান ও দিতে
পারেনি । যে টুকু আমরা জানি সেটুকু হল লোকমুখে
শোনা জনশ্রুতি, বিভিন্ন দেশের রুপকথা আর আধুনিক যুগে স্বীকৃত কয়েকটি হন্টেড প্লেস ছাড়া আর কিছু এ সম্বন্ধে শোনা যায়না । বিজ্ঞান পরিষ্কার বলে দিয়েছে এ নিয়ে ভয়ের কিছু নেই, এ নিছক মনের দুর্বলতা,
অবচেতন মনের অলস চিন্তা মাত্র ।তার পরেও মানুষ ভয় পায়
রাতকে, রাতের অন্ধকার কে ।রাতের অন্ধকারে সঠিক বা ভুয়া যেকোন দৃশ্য দৃশ্যায়ন করা যায় ।ওই যে বলেছিলাম ভুত – প্রেত- অদৃশ্য যা কিছু তা সবাই
দেখেনা ।সেগুলো দেখে মানুষ তখন যখন মানুষ খুব ভীত থাকে,
তখন সে বাস্তবতা ভুলে কল্পনার জগতে চলে আসে।কল্পনার ভিতর সে
ডুবে গিয়েছে কখন সে নিজেও টের পায়না ।এটা হল সেই
হ্যালুসিনেশন।আর এক জাতীয় মানুষ আছে যারা থাকে জন্মগত ভাবে
অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী ।আপনি বা আমিও হয়তো
অতীন্দ্রিয় ক্ষমতার অধিকারী ।
(115)
কিন্তু আপনি বা আমি সেটা হয়তো কোনদিন জীবনেও বুঝতে পারবনা বা উপলব্ধি করতে
পারবোনা যে আপনার বা আমার ভিতর বিশেষ কোন প্রতিভা অথবা বিশেষ কোন ক্ষমতা লুকিয়ে
আছে যেটা আরেকজনের ভিতরে নেই ।এই বুঝতে না পারবার
জন্য আমাদের পরিবেশ এবং পরিস্থিতি দায়ী।ধরুন আপনার কখনো
পানিতে নামা হয়নি ।দেখা গেলো আপনি পানিতে ডুব দিয়ে স্বাভাবিক একজন
মানুষের থেকে ০৩ গুন সময় পানির নিচে থাকতে পারেন ।কিন্তু চিরকাল শহরে বসবাস আর গ্রামের পুকুরে কোন দিন বন্ধু বান্ধব দের সাথে
খেলাধুলার অভ্যাস না থাকার কারনে আপনি নিজে এবং জগতবাসী কোনদিনই আপনার এই
অতিমানবীয় ক্ষমতা সম্বন্ধে জানতে পারলোনা ।আবার আপনি ধরুন
কোন মানুষ কে একবার দেখে হুবহু সেই লোকটিকে আকতে পারেন, কিন্তু বর্তমানের
প্রেক্ষাপটে এটা দরকার না হওয়াতে এবং মোবাইল কামেরার সহজলভ্যতার কারনে হাতে অঙ্কন
একপ্রকার উঠে গিয়েছে ।ফলে দেখা যাচ্ছে আপনার প্রতিভা নিজের অজান্তে
হারিয়ে যাবার সাথে সাথে পৃথিবী থেকে মানব ক্ষমতার অনেক শিল্প নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।একসময় শুনেছি শিশু-কিশোর-যুবারা প্রতিদিন ০৫-১০ কিলোমিটার হেটে স্কুলে যেতো
আবার ০৫-১০ কিলোমিটার হেটে বাড়ী ফিরত।এটাতো এখনকার
পিডিয়াসিওর, কমপ্ল্যান খাওয়া বাচ্চা, বা এনার্জি ড্রিংকস খাওয়া যুবকদের ভিতরও
দেখতে পাওয়া যাবেনা । আবার দেখুন আগে মানুষ ব্যবসার বড় বড় যোগ বা গুন অনায়াসে হাতের
আঙুলের কর গুনে করে দিতে পারতো। কিন্তু এখন দোকানদার বা ব্যবসায়ীরা ক্যালকুলেটর
ছাড়া এরকম বড় হিসাব নিকাশ ভাবতেই পারেন না ।এখন বলব এরকম
অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার অধিকারী একজন মেয়ের সম্বন্ধে ।
ÔÔনাটালিয়া নাতাশা
নিকলায়েভনা ডেমকিনা ÕÕ ওরফে নাতাশা ডেমকিনা ।১৯৮৭ সালে রাশিয়া
তে জন্ম গ্রহন করেন ।এনার একটি বিশেষ ক্ষমতার কথা সবার সামনে আসে যখন ওনার বয়স
মাত্র ১০ বছর । নাতাশার ভাষ্য মতে ১৯৯৭ সালের কোন একদিন তিনি তার মায়ের সাথে
বসেছিলেন । হঠাৎ নাতাশা খেয়াল করেন তিনি তার মায়ের শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গ ও
টিস্যু কলা দেখতে পাচ্ছেন ।এর আগে তিনি নিজের ভিতর এই ক্ষমতার কোন নমুনা উপলব্ধি
করতে পারেননি ।
(116)
হঠাৎ করে ১০ বছর বয়স থেকে তিনি এরকম
ক্ষমতার অধিকারী হন ।সাধারণত যেটি যেকোন মেডিকেল ডায়াগনসিস এর সমতুল্য। ধরুন
এক্সরে দিয়ে মানুষের শরীরের ভিতরের বিভিন্ন হাড়ের চিত্র দেখা সম্ভব।কিন্তু যখন
ধরুন আপনার পাকস্থলী তে আলসার এর ক্ষত আছে সেটা দেখতে যে প্রযুক্তি ব্যাবহার করা
হয় তাকে বলা হয় এন্ডোস্কপি। আর এই এন্ডোসকপির কাজটি নাতাশা শুধু মাত্র চোখের
দৃষ্টিতে করে ফেলতেন।২০০৪ সালে ডিসকভারি চ্যানেল নাতাশা কে নিয়ে একটি ডকুমেন্টারী
তৈরি করে।একই সালে ইংল্যান্ড এর ÔÔদি সান ÕÕপত্রিকা নাতাশা কে ইংল্যান্ড এ নিয়ে আসে।সেখানে সদ্য কার দুর্ঘটনাতে আক্রান্ত
একজন মহিলা কে নিয়ে আসা হয়, নাতাশা তখন দুর্ঘটনাতে পতিত মহিলা টিকে দেখে নির্দিষ্ট
করে বলেন ওনার শরীরের কয়েকটি যায়গাতে
ফ্রাকচার আছে এবং কয়েকটি ধাতব পিন ওনার শরীরে ঢুকে গেছে ।পরে মহিলাটিকে এক্সরে এবং
স্ক্যান করে দেখা যায় যে নাতাশার কথা এবং রিপোর্ট একই কথা বলছে ।এভাবে তিনি
নিউইয়র্ক এর সাইকোলজি এর প্রোফেসর রে হীমান এর
নেওয়া এনাটমিকাল মুভমেন্ট এর পরীক্ষাতে ১০০ % নিখুত ভাবে উত্তীর্ণ হন এবং জাপান এর
টোকিও ইলেকট্রিক্যাল ইউনিভার্সিটি এর প্রোফেসর ইওশি মাচি এর নেওয়া পরীক্ষাতেও
উত্তীর্ণ হন ।এর মাঝে হঠাৎ অপ্রাসঙ্গিক একটা প্রশ্ন করি, মানুষের ভিতর বর্তমানে
একটি কথা প্রচলিত আছে মোবাইল টাওয়ার আসবার পর নাকি দেশি নারিকেল গাছের নারিকেলের
ফলন কমে গেছে, কথাটা কি সত্যি ? যদি সত্যি তাই হয় তবে সেটা কেন হয় ?
এতক্ষন ওয়ান্ডার
গার্ল নাতাশার ব্যাপারে যে কথা গুলো বলা হলো সেটা আসলে কিভাবে তিনি পেলেন। এটা কি
তার চোখে উপস্থিত বা তৈরি হওয়া কোন জিনোমের
উপস্থিতি ? নাকি কোন মন্ত্র বা অলৌকিক অশরীরী কারো তার সাথে উপস্থিতি। আবার
মালয়েশিয়ার লীউ থো লিন কে বলা হয় চুম্বক মানব। তিনি সর্বোচ্চ ৩৬ কেজি পর্যন্ত ধাতব
বস্তু কোন দড়ি বা আঠার সাহায্য ছাড়াই নিজের শরীরের সাথে আটকে রাখতে পারেন ।
(117)
যেটা চুম্বক ছাড়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়
।তাছাড়া বিজ্ঞানীরা ওনার শরীর স্ক্যান করে বা পরীক্ষা করে কোন লুকানো চুম্বক ,বা
চুম্বক ক্ষেত্রের উপস্থিতি পাননি।
ভিয়েতনাম এর ÔÔথাই গকÕÕ(১৯৪২) আর আমেরিকার আল হারপিন(১৮৬২-১৯৪৭) এই
দুজন লোকের একজন ৪৭ বছর আর একজন জীবনে
কোনদিন ঘুমাননি।যদিও তাদের না ঘুমান নিয়ে বিতর্ক
আছে ।
আবার ÔÔউয়িম হফ ÕÕ( ১৯৫৯- )নামক নেদারল্যান্ড এর একজন বাক্তি
যিনি বরফমানব নামে পরিচিত । -২০(মাইনাস ২০ ডিগ্রি) ডিগ্রি হিমাঙ্কের বরফের ভিতর
অনায়াসে তিনি ঘণ্টার পর ঘণ্টা ডুবে থাকতে পারেন ।বলা হয় এই অসাধ্য সাধন তিনি
শিখেছেন প্রাচীন তিব্বতের টুমো পদ্ধতির ধ্যান শিখে ।
আবার জাপানের ÔÔইসাও মাচিরÕÕ দিকে যদি আপনি ১৬০ km/h গতিতে একটা অতি ক্ষুদ্র কোন কিছু মানে একটা ছোলার দানা যদি
ছুড়ে দেন তবে তিনি সেটিও তার হাতে থাকা সামুরাই তলোয়ার দিয়ে দুভাগ করে কেটে ফেলবেন
!আর যদি একটি টেনিস বল ৮৬০ km/h গতিতে ছুড়ে মারেন তবে তিনি সেটিও তার তলোয়ার দিয়ে দুভাগ করে ফেলবেন
।অবিশ্বাস্য নয় কি ব্যাপারটা । যেখানে ক্রিকেটে ব্যাটসম্যান রা ১৬০ গ্রাম এর বেশ
বড় একটা বলকে বড় একটা লম্বা চওড়া ব্যাট দিয়ে ১৩০ গতিতে এলেও মিস করে ফেলেন ।
আমাদের দেশের
রাজশাহীর বাঘা উপজেলাতে ÔÔ বাবুল আক্তার ÕÕ নামে একজন ব্যাক্তি আছেন যিনি এক
বসাতে ১৮ কেজি খাসীর মাংশ এবং ১০০ টি মুরগীর ডিম খেতে পারেন । যদিও এখন বয়সের
কারনে তিনি এখন খাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন তবুও তার এই খাওয়া রেকর্ড হিসেবে রয়েছে ।
(118)
বাবুল আক্তার
শারিরীক শক্তির
প্রমান হিসেবে ১১ মণ ওজনের কাঠের গুড়ি উঁচু করে বয়ে নিয়ে যাওয়া,এক টানা ১৫-২০
কিলোমিটার দৌড়, একটানা ০৪ ঘণ্টা সাতার কাটার রেকর্ড আছে তার । অসম্ভব শক্তিশালী
খাদক এই মানুষটি ১৯৭৩ সালে জন্ম গ্রহন করেন। উনাকে কি ঠিকমতো কোচ করলে বাংলাদেশ
থেকে গর্ব করার মত একজন কুস্তিগির হতে পারতেন না ?
১৯৭৫ সালের ০৩
রা এপ্রিল। দৈনিক বাংলা নামক একটি জাতীয় পত্রিকাতে একটা খবর ছাপা হয়। খবরটি হল একজন
অদ্ভুত পিশাচ মানুষ কে নিয়ে। নাম তার খলিলুল্লাহ ।
(119)